রহস্য পকেটের চিরকূটে! কলকাতার সরকারি হাসপাতালের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু ডাক্তারি-ছাত্রের
সোমক আত্মহত্যার করার মতো ছেলে ছিল না। যথেষ্ট মানসিক দৃঢ়তা ছিল তাঁর, আচার-আচরণে ছিল নীতিবাগিশ মানসিকতার। হঠাৎ কী এমন ঘটল যে আত্মহত্যা করতে হল সোমককে।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ছাদ থেকে পড়ে ডাক্তারির এমএস পডুয়ার রহস্য-মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল। ছ'তলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু বলে দাবি করে বন্ধুরা। তাঁরাই পুলিশকে খবর দেয়। এরপর পুলিশ শুক্রবার রাতেই দেহ উদ্ধার করে। এটি খুন নাকি আত্মহত্যা, নাকি নিছকই দুর্ঘটনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধন্দ। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত চিকিৎসক-ছাত্রের নাম সোমক চৌধুরী। মেধাবী এই ছাত্র হুগলির বৈদ্যবাটীর রামকৃষ্ণ অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা। ছেলের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের তরফে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন। পরিবারের দাবি, সোমক আত্মহত্যার করার মতো ছেলে ছিল না। যথেষ্ট মানসিক দৃঢ়তা ছিল তাঁর, আচার-আচরণে ছিল নীতিবাগিশ মানসিকতার। তাই সোমকের মৃত্যুর পিছনে যথেষ্ট রহস্য লুকিয়ে রয়েছে বলে তাঁদের দাবি। এই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা।
পুলিশ সোমকের পকেট থেকে একটি চিরকূট উদ্ধার করেছে। এই চিরকূটেই রহস্য লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এটি সুইসাইড নোট নাকি, এই চিরকূটের পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সোমকের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। বন্ধুদের জেরা করা হচ্ছে।
ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই পরিবারের লোক পৌঁছে গিয়েছে কলকাতায়। মেধাবী সোমকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া তাঁর বন্ধুবর্গের মধ্যে। সোমক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছিল। রিষড়ার রামকৃষ্ণ মিশন-এর মেধাবী ছাত্র ছিলেন সোমক। এরপর নীলরতন সরকার হাসপাতাল থেকে ডাক্তারি পাশ করেছিলেন তিনি। বর্তমানে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে এমএস করছিলেন। তারই মধ্যে ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা।
পুলিশ এখন মিসিং লিঙ্কগুলো মেলানোর চেষ্টা করছে। পকেট থেকে উদ্ধার করা সুইসাইড নোট যেমন একটা বড় মিসিং লিঙ্ক। সেইসঙ্গে তাঁর লড়াকু মানসিকতারও প্রমাণ মেলে সোশ্যাল সাইটে। যেমন নীতিবাগিশ ছিলেন সোমক, তেমনই বন্ধুবৎসলও ছিলেন। হাসিমুশিতে ভরপুর থাকতেন সবসময়। পার্টি করতেন, কিন্তু তা হত নন-অ্যালকোহলিক। আবার প্রতিবাদীও ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তাঁর ফেসবুক পোস্টে গোমাংস, ধর্মের গোঁড়ামির বিরুদ্ধে নানা পোস্টই তাঁর প্রমাণ। এসবও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।