লাভপুর হত্যা মামলায় বিপাকে মনিরুল ইসলাম
লাভপুর হত্যা মামলায় বিপাকে পড়তে চলেছেন মনিরুল ইসলাম।
লাভপুর হত্যা মামলায় বিপাকে পড়তে চলেছেন মনিরুল ইসলাম। নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে নয় বছর আগের শুরু হওয়া তদন্তের তদন্তকারী অফিসারের ওপরেই তদন্তভার দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি মধুমতি মিত্র বীরভূমের পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে তিন মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।
পাশাপাশি, জেলা প্রশাসনকে বিচারপতির নির্দেশ, সাক্ষী সুরক্ষা প্রকল্প ২০১৮ অনুযায়ী মামলাকারী ও তার পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিন মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি মিত্র আদালতের পর্যবেক্ষণে জানান, 'যে ভাবে এই মামলার তদন্ত হয়েছে তাতে তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যে প্রবল চাপ, হুমকি এবং আশঙ্কার মধ্যে মামলাকারী এবং তার পরিবার গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন এবং মনিরুল ইসলাম সহ তার সহযোগীদের নির্দোষ বলেছেন, তা যদি সত্যি হয়, তাহলে সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আদালতের কাজ সত্যি খুঁজে বার করা।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে বীরভূমের লাভপুরের বালিঘাটের দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর বিরোধ মেটাতে সালিশি সভা ডাকেন তৎকালীন তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম। লাভপুরের নবগ্রামে মনিরুল ইসলামের বাড়িতেই ওই সভায় জরিনা বিবির পরিবারের লোকদেরও ডাকা হয়।
[আরও পড়ুন: ১৪ বছর ধরে চাকরি ফেরানোর আইনি লড়াই লড়ে জয়ী প্রতিবন্ধী শিক্ষক]
মামলাকারির আইনজীবীর অভিযোগ, ওই সভা চলাকালীন মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে জরিনা বিবির লোকেদের ওপর চড়াও হয় তাঁর অনুগামীরা। ঘটনাস্থলেই দুই ছেলের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান জরিনা বিবির আর এক ছেলে। বাকিরা কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচেন। ২০১০ সালের ৩ জুন তিন ভাই ধানু শেখ,কাটুন শেখ এবং তুরুক শেখের হত্যাকাণ্ডে মনিরুল-সহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে লাভপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। মনিরুল গ্রেফতার হন।
তদন্তের পর অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পান মনিরুল সহ ২২ জন অভিযুক্ত। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে তৃণমূলের টিকিটে লাভপুর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্বাচিত হন। এই মামলায় ২০১৪ সালে চার্জশিট পেশ করা হয় নিম্ন আদালতে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে পুনরায় তদন্তের জন্য নিম্ন আদালতে আবেদন করেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় নিম্ন আদালত।
[আরও পড়ুন:মুর্শিদাবাদে গণপিটুনিতে মৃত্যু এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের]
নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় মৃতের পরিবার। তাদের অভিযোগ, তদন্তে যথেষ্ট অসহযোগিতা রয়েছে। মামলার সাক্ষীদের ভয় দেখিয়ে তদন্ত বিকৃত করা হয়েছে। চার বছরের তদন্তকালে মাত্র সাত জনের বয়ান নেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টে সরকারী আইনজীবী জানিয়েছেন যে এই তদন্ত পক্ষপাতদুষ্ট এবং কলঙ্কিত।