'বাংলাকে জ্ঞান না দিয়ে প্রাপ্য টাকা দিন', পঞ্চায়েত সম্মেলনে কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী
পঞ্চায়েত সম্মেলনে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, বাংলাকে জ্ঞান না দিয়ে প্রাপ্য টাকা দিন।
কলকাতা, ৩ ফেব্রুয়ারি : পঞ্চায়েত সম্মেলনে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নেতাজি ইন্দোর স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে সারা বাংলার পঞ্চায়েত সদস্য ও কর্মীদের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এত আর্থিক টানাটানির মধ্যেও আমাদের সরকার উন্নয়নের চেষ্টা করে চলেছে। অন্য কোনও সরকার হলে এটাও পারত না।"[নেতাজি ইন্ডোরে পঞ্চায়েত সম্মেলনের সূচনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
কেন্দ্রকে তোপ দেগে মমতা বলেন, আরও বেশি করে উন্নয়নের কাজ আমরা করতে পারতাম। তবে প্রতি মাসে ৪০ হাজার কোটি টাকা কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে কেন্দ্র। কিছুটা ছাড় দিলে আরও বেশি উন্নয়নের কাজ করা যেত। বাংলা কাজ করে বেশি, কথা বলে কম। ফলে বাংলাকে জ্ঞান না দিয়ে প্রাপ্য টাকা দিন।[ট্রাম্পের H1B ভিসা নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রী মমতার]
এদিন পঞ্চায়েত সম্মেলনে উপস্থিত কর্মী ও সদস্যদের মুখ্যমন্ত্রী জানান, খরচ না বাড়িয়ে উন্নয়নের কাজ করতে হবে। যেমন উদাহরণ হিসাবে গ্রামীণ আবাস যোজনায় পুরুলিয়া, গ্রাম সড়ক যোজনায় পশ্চিম মেদিনীপুর, মহিলাদের উন্নয়নে হুগলি ও আনন্দধারা প্রকল্পে মুর্শিদাবাদ ভালো কাজ করেছে বলে প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।[জনমোহিনী বাজেট, নাকি হতাশাজনক, কী বলছে বাংলার রাজনৈতিক মহল?]
নোট বাতিলের ঘটনায় রাজ্যের বহু মেলায় জিনিস নিয়ে গিয়েও কেনা-বেচা হয়নি বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের সেলফ হেলফ গোষ্ঠীর তৈরি জিনিসপত্র যাতে বড় মল গুলিতে বিক্রি করা যায় সেজন্য রাজ্য সরকার ব্যবস্থা করছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন।[বাংলায় খুব শীঘ্রই চালু হচ্ছে 'জেন্ডার বাজেটিং']
এর পাশাপাশি তিনি জানান, ১০০ দিনের কাজে ৫৬০০ কোটি টাকা খরচ করে সারা দেশে রেকর্ড করেছে বাংলা। এবং নোট বাতিলের ঘটনার পরও যে মানুষের খিদে পেটে থাকতে হয়নি তার অন্যতম কারণ রাজ্যের ৯০ শতাংশ মানুষের কাছে ২ টাকা কিলো দরে চাল পৌঁছে দিচে পেরেছে সরকার।
এদিন রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, শ্মশান ঘাট ঘিরে পাঁচিল দিয়ে বৈতরণী প্রকল্পের আওতায় জায়গা তৈরি করতে হবে। অনেকের শেষকৃত্য করার টাকা থাকে না। সেই কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে করতে পারে সেদিকে নজর রাখবে সরকার।
এর পাশাপাশি এদিন পঞ্চায়েতের নানা স্তরে সদস্যদের ভাতা বাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ১ মার্চ থেকে এই বর্ধিত ভাতা পাবেন তাঁরা। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের ভাতা বাড়িয়ে ১৫০০ টাকা, গ্রাম সভাধিপতির ভাতা ৩৫০০ থেকে বেড়ে ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ২০০০ ও উপপ্রধান ১৫০০ টাকা পাবেন। জেলা পরিষদ সদস্য ১৫০০ টাকা করা হয়েছে। এবং পঞ্চায়েত সমিতি সভাধিপতি ২৮০০ থেকে বেড়ে ৩০০০ সহকারী সভাপতি ২৫০০ থেকে বেড়ে ৩ হাজার টাকা হল বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।