মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি রাজনীতি ছাড়তে চান! নইলে হঠাৎ কেন বললেন এমন কথা
দিন কয়েক আগে ছাত্রছাত্রীদের এক প্রশ্নের উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন রাজনীতিক না হলে তিনি কী হতেন। এবার রাজনীতি নিয়ে তাঁর কথায় ঝরে পড়ল খেদ।
দিন কয়েক আগে ছাত্রছাত্রীদের এক প্রশ্নের উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন রাজনীতিক না হলে তিনি কী হতেন। এবার রাজনীতি নিয়ে তাঁর কথায় ঝরে পড়ল খেদ। রাজনীতি নিয়ে বিরূপ মনোভাব পোষণ করলেন তিনি। অকপটেই জানালেন, চারিদিকে রাজনীতির নামে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, তাতে বিরক্ত লাগছে রাজনীতিতে। এটাই কি রাজনীতি! প্রশ্ন জাগছে মনে।
মমতা রাখঢাক না রেখেই বলেন, মানুষের প্রতিনিধি হয়ে রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করেছি। তাই আমার দলের স্লোগান- 'মা-মাটি-মানুষ'। বরাবর মানুষের হয়ে কথা বলেছি। যখন তৃণমূল তৈরি করেছিলাম, কাউকে পাশে পাইনি। জানতাম মানুষ আমার পাশে থাকবে। মানুষকে পাশে পেয়েছি। মানুষকে ভালোবেসেছি।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর রাজনৈতিক জীবনে বরাবর মানুষের দুঃখে দুখী, মানুষের সুখে সুখী থেকেছেন। মানুষের দুঃখ-কষ্ট তাঁকে বরাবর ছুঁয়ে গিয়েছে। নিচুতলার মানুষকে নিজের হৃদয়ের কাছে স্থান দিয়েছেন তিনি। মানুষের সঙ্গে নৈকট্যই তাঁকে আলাদা করেছে সবার থেকে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না আজকের দিনে এসে।
শুধু কি তাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতির সঙ্গে মিশিয়েছেন তাঁর সাহিত্য-প্রেমকে, মিশিয়েছেন সংস্কৃতি-প্রেমকে। তাই তো নিজে মুখেই জানিয়েছেন, তিনি রাজনৈতিক কথাবার্তা বলতে বলতেই আপন খেয়ালে লিখে ফেলতে পারেন গান-কবিতা, গল্প-উপন্যাস। মুহূর্তের ভাবনায় ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলতে পারেন ছবি। ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারেন রাজনীতির কানাগলিতে দাঁড়িয়েও। তাঁর বিভিন্ন গানে মানুষের সঙ্গে নৈকট্যই প্রকাশ পেয়েছে।
এদিন কলকাতার এক সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে এসে তিনি আবারও সেই চিরাচরিত প্রশ্নের মুখে পড়লেন। তিনি রাজনীতির বাইরে একা হাতে এত কিছু করতে পারেন। তবে কি বিদ্বেষের আবহে বর্তমানে যে রাজনীতি চলছে, তা থেকে সন্ন্যাস নিতে চান? বিচরণ করতে চান অন্য জগতে? ছেড়ে দিতে পারেন রাজনীতি?
মুখ্যমন্ত্রী উত্তরে বলেন, মাধে মাধে এমনটা মনে হয় আমারও। মনে হয়, রাজনীতি ছেড়ে দিই। সত্যিই রাজনীতির বাইরেও তো আমি অনেক কিছু করতে পারি। রাজনীতির এই বিদ্বেষ আর ভালো লাগছে না। কিন্তু যখন ভাবি মানুষের কথা, তখনই মনে হয়, না রাজনীতি ছাড়লে তো হবে না। তাহলে মানুষের কথা বলব কী করে! মানুষের জন্য কিছু করব কী করে! আমার তো সব কিছু মানুষকে নিয়েই।
[আরও পড়ুন:কে হবেন মোদীর চ্যালেঞ্জার? কাঠবেড়ালির সেতুবন্ধনের গল্পে স্পষ্ট আভাস দিলেন মমতা]
মমতা বলেন, এ জীবনে শিরোধার্য করেছি মানুষকে নিয়েই চলব। মানুষের জন্যই আমার এ জীবন নিয়োজিত। মানুষ যা চায়, তা-ই মেনে নেব নিঃসংকোচে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবতে পারেন রাজনীতি ছাড়ার কথা, কিন্তু রাজনীতি তিনি ছাড়তে পারেন না। আসলে তিনি রাজনীতি ছাড়লেও, রাজনীতি তাঁকে ছাড়বে না।
[আরও পড়ুন:সংগ্রামেই জন্ম, সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে চলে যেতে চান মমতা, এগিয়ে প্রতিবাদী সত্ত্বাই]