কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চান মমতা, ২০১৯-এ মোদীর বিরুদ্ধে ‘মিসাইল’ও তাঁর হাতে
রাহুলের তরুণ-ব্রিগেডের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হার্দিক প্যাটেলের কলকাতায় এসে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতেই লুকিয়ে রয়েছে ২০১৯-র নয়া সমীকরণ।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেছিলেন এ দেশের বুকে আঠেরো আসুক নেমে। তারুণ্যের সেই ধ্বজা উড়িয়ে গুজরাটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। যদিও গুজরাট থেকে বিজেপি শাসনের অবসান ঘটাতে পারেনি রাহুলের তরুণ-ব্রিগেড। কিন্তু যে লড়াই হার্দিক-জিগনেশ-অল্পেশরা পৌঁছে দিয়েছিলেন মোদীর ডেরায়, সেই অস্ত্রেই এবার ২০১৯-এ কাঁটা তুলতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাহুলের তরুণ-ব্রিগেডের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা তথা পাতিদার আন্দোলনের পথিকৃত হার্দিক প্যাটেলের কলকাতায় এসে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ, ২০১৯-র লক্ষ্যে অনেক সম্ভাবনার জন্ম দিয়ে গেল। বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও হার্দিক প্যাটেলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে লুকিয়ে রয়েছে ২০১৯-র নয়া সমীকরণও।
দুই নেতা-নেত্রী প্রকাশ্যে একে অপরের আন্দোলনকে সম্মান জানিয়েছেন। হার্দিক তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেডি গান্ধী বলেও সম্বোধন করেন। সেইসঙ্গে জানিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বড় নেত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পরে আর কেউ আসেননি। আর পাল্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁকে সরসারি রাজনীতিতে প্রবেশ করতে অনুরোধ করেন। এমনকী গুজরাটে তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব নিতেও বলেন। পাল্টা গুজরাটে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান হার্দিক।
এই সাক্ষাতের পর রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ২০১৯-এ বিজেপি বিরোধী জোট এক নতুন সমীকরণের দিকে এগোচ্ছে। সরাসরি জোট গড়ার কথা না বললেও, হার্দিক জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে দেশে শক্তিশালী দল হল কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস। মোদীর বিরুদ্ধে লড়তে এই দুই দলকে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হবে। তাহলে কেন্দ্রের অশুভ শক্তিকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো লড়াই করে উঠে আসা নেত্রীকে সামনের সারিতে দরকার বলেই হার্দিকের অভিমত।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চাইছেন হার্দিককে দিয়ে, তা একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এদিন। গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের পর আলাদা করে হার্দিক, জিগনেশ ও অল্পেশের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যে হার্দিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েই গেল। সেই সাক্ষাৎ পর্বে ২০১৯-এ মোদির বিরুদ্ধে রাহুলের পাশাপাশি মমতারও মিসাইল হতে পারেন হার্দিক প্যাটেল।
হার্দিক জানিয়েছেন, বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকবেন। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি ডাকেন, তিনি এ রাজ্যেও প্রচারেও আসতে পারেন। বিজেপি দেশকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে হার্দিক জানান, সময় এসেছে কেন্দ্রের সরকারকে উৎখাত করার। সেজন্য ঐক্যবদ্ধ লড়াই-ই একমাত্র পথ। সেই পথেই বিজেপি সরকারের বিনাশ ঘটানো যাবে।