‘আপনি বড্ড বেশি কথা বলেন’, স্বাস্থ্য বিলের ব্যাখ্যা দিতে উঠে মমতার ধমক সুজনকে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের দ্ব্যর্থহীন ভাষায় আক্রমণ করেন। প্রতিবাদ করলে বাম পরিষদীয় দলনেতা তথা সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীকে বলেন, ‘আপনি বড্ড বেশি কথা বলেন।’
কলকাতা, ৩ মার্চ : বাম আমলে আইন বলে কিছু ছিল না। তার আগেও এই সংক্রান্ত কোনও আইন ছিল না। তাই নতুন করে আইন করা হচ্ছে। এই স্বাস্থ্য আইন হচ্ছে মানুষের স্বার্থে। এই আইন চিকিৎসা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার আইন। মানুষের সুবিধার্থে মানুষের প্রয়োজনে এই আইন। শুক্রবার ওয়েস্টবেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট বিল বিধানসভায় পেশ করে সাফ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।[বেসরকারি হাসপাতালের 'অসুখ' সারাতে কড়া 'প্রেসক্রিপশন' মমতার, নয়া বিল পেশ বিধানসভায় ]
এদিন বিল পেশের পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই বিরোধীদের দ্ব্যর্থহীন ভাষায় আক্রমণ করেন। প্রতিবাদ করলে বাম পরিষদীয় দলনেতা তথা সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীকে বলেন, আপনি বড্ড বেশি কথা বলেন, চুপ করে বসুন, মন দিয়ে শুনুন। এরপরই কেন তিনি নতুন করে আইন 'রচনা'র পথে হাঁটলেন তার ব্যাখ্যা দেন।
বিধানসভায় সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'যা খুশি তাই বিল করছে রাজ্যের হাসপাতালগুলি। রোগীর প্যান কার্ড জমা নিয়ে নিচ্ছে, এফডি নিয়ে নিচ্ছে। এনাফ ইজ এনাফ, এবার কড়া হবে প্রশাসন। বেসরকারি সপাতালগুলির উপর কড়া নজর রাখবে কমিশন।' এ প্রসঙ্গে ভগবতী কেশরীর মৃত্যু প্রসঙ্গও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে কড়া আইন প্রনয়ণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টেস্ট করিয়ে কমিশনের ব্যবস্থা, রোগী নিয়ে এসে কমিশন- এসব আর চলবে না। লোভ বাড়তে বাড়াতে চরম সীমায় পৌঁছে গিয়েছে। তাই লাগাম পরানো দরকার হয়ে পড়েছিল। ডেঙ্গু নয় তবু ডেঙ্গুর পরীক্ষা করা হয়েছে। এমন ভুরি ভুরি উদাহারণ রয়েছে। বাইরে যে ওষুধের দাম হাজার টাকা, হাসপাতাল সেই ওষুধের দাম নিয়েছে ২৪ হাজার টাকা। সে সব বন্ধ করতেই এই আইনের আশ্রয় নিচ্ছে সরকার।
শুধু কলকাতা নয়, জেলার নার্সিংহোম গুলিতেও এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমার কাছে অনেক কেস স্টাডি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিল পেশ করে সাবধান করে দেন, চিকিৎসাকে ব্যবসা নয় পরিষেবা ভাবুন। নইলে লাইলেন্সটুকুও থাকবে না। চিকিৎসকরা মানুষের সেবায় মন দিন। গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণ হয়ে গেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইনভঙ্গ করলে, কেউ আইনের অপব্যবহার করলেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। ৩ সদস্যের কমিশন এ ব্যাপারে কড়া নজরদারি রাখবে। দুর্ঘনায় বাড়ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধেও কড়া মনোভাবের কথা বলেন তিনি। বলেন, বেসরকারি স্কুলগুলিতে চড়া ডোনেশন নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারেও ভাবনা-চিন্তা করতে হবে। মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক হয়ে গেলেই স্কুলের প্রতিনিধিদের ডাকবেন মুখ্যমন্ত্রী।