
মইদুলের পরিবারকে চাকরির প্রস্তাব, ময়নাতদন্তের পরেই সামনে আসবে মৃত্যুর কারন: মমতা
নবান্ন অভিযানে গিয়ে পুলিশের লাঠির আঘাতেই ডিওয়াইএফআই কর্মী মইদুল আলি মিদ্যার (৩১) মৃত্যুর অভিযোগ উঠলো। রবিবার রাতে বাঁকুড়ার কোতুলপুরের চোরকোলা গ্রামের বাসিন্দা এই যুব কর্মীর কলকাতার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়।
এরপর থেকেই উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। বাম নেতৃত্বের অভিযোগ, পুলিশে লাঠির আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের কর্মীর। তবে যাতে না দেহ নিয়ে পুলিশ বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে না পারে সেজন্য সতর্ক ডিওয়াইএফআই কর্মীরা। তবে ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোটের আগে চড়ছে উত্তেজনার পারদ। তবে এই ঘটনায় অবশেষে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সোমবার নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানেই বাম কর্মীর মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। একই সঙ্গে দিলেন চাকরির প্রস্তাবও।
Recommended Video


কীভাবে মৃত্যু বোঝা যাবে ময়নাতদন্তের পর, মুখ্যমন্ত্রী
মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক, কিন্তু কীভাবে মৃত্যু পরে বোঝা যাবে বলেই মনে করছেন তিনি। তাঁর মতে, কীভাবে মৃত্যু, জানা যাবে ময়নাতদন্তের পর।' যদিও
বামফ্রন্টে দাবি, নবান্ন অভিযানে সময় পুলিশের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল ইসলামের। তবে বেশ যুবনেতার মৃত্যু ঘিরে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, জানেই না পরিবার, পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানানো হয়নি।' আদৌ ওই আন্দোলনে মইদুল ছিল কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এদিন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পুলিশ এই বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে। অন্যদিকে, বাম দলগুলির দাবি, পুলিশের লাঠি লেগে কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল ইসলাম। তবে এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'কিডনিতে কোনও সমস্যা ছিল কি না তদন্ত করছে পুলিশ।'

চাকরির প্রস্তাব, সহমর্মিতার বার্তা মমতার কথায়
এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। কিন্তু এমন যে ঘটে যাবে কীভাবে বুঝবে। তবে মইদুল আলি মিদ্যার পরিবারের উদ্দেশ্যে সহমর্মিতার বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তিনি বলেন, পরিবার চাইলে এক বা একাধিককে চাকরি দেওয়া হবে। এই বিষয়ে প্রশাসনের তরফে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

সুজনকে ফোন মমতার
এই ঘটনার পরেই সুজন চক্রবর্তীকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিস্তারিত তাঁর কাছ থেকে জানতে চান তিনি। নবান্নে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন মইদুল
পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন ডিওয়াইএফআই কর্মী মইদুল আলি মিদ্যা। টোটো চালিয়েই চলত পরিবাত। আর তাঁকে হারিয়ে এখন একেবারে দিশেহারামইদুল আলি মিদ্যার পরিবার। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও তিন ছেলে মেয়ে মেয়ে। এই অবস্থায় কিভাবে সংসার চলবে ভেবে পাচ্ছেন না কেউই।
কার্যত বাড়ির এক রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুতে মাথায় বাজ ভেঙ্গে পড়েছে পরিবারে। ডিওয়াইএফআই নেতা ধনঞ্জয় বেজ ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, খুব দরিদ্র পরিবারের সন্তান। ধার দেনা করে টোটো কিনে সংসার চালাতো। বাম ছাত্র যুব সংগঠন গুলির ডাকে নবান্ন অভিযানে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। পুলিশী অত্যাচারে তার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় যুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তির দাবি তারা দলের পক্ষ থেকে জানাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

ঘনঘন মূর্ছা যাচ্ছেন মৃত মইদুল আলি মিদ্যার স্ত্রী।
ডিওয়াইএফআই কর্মী মইদুল আলি মিদ্যার ঘটনায় শোকস্তব্ধ কোতুলপুর। মিদ্যার বাড়ি ওই এলাকায়। বাঁকুড়ার কোতুলপুর গ্রামে মিদ্যার বাড়ি। আর সেখানে মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই শোকস্তব্ধ পরিবার। ভাষা নেই কিছু বলার।

ঘনঘন মূর্ছা যাচ্ছেন মৃত
মইদুল আলি মিদ্যার স্ত্রী। খবর পেয়ে পৌছে গিয়েছেন আত্মীয়স্বজনরা। বাড়িতে পাড়া প্রতিবেশীদের ভীড়। এসেছেন স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্বও। সকলেই অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। ইতিমধ্যে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন মইদুলের ভাই।

ব্লক হয়ে যায় কিডনি
পেশায় চিকিৎসক ও DYFI নেতা ফুয়াদ আলিম এক প্রসঙ্গে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত ১৩ তারিখ সকালে জানা যায় কিডনি ফেলিওর হয়। পুলিশের লাঠির আঘাত পেশির উপর পড়ায়, পেশি ফেটে যায়। সেখান থেকে যে প্রোটিন বের হয়। তা কিডনিকে ব্লক করে দেয়।প্রথম দিন থেকে তদারকিতে ছিল। রক্ত পরীক্ষা করে জানতে পারি, সোডিয়াম নেমে গিয়েছে, পটাশিয়াম বেড়ে গিয়েছিল। ১৪ তারিখ আরও অবনতি ঘটে। রবিবার রাত্রে সামান্য ভাল হয়েছিল। কিন্তু ফুসফুসে জল জমতে শুরু করে। কিন্তু ১৫ তারিখ সকালে লড়াই শেষ করেন মইদুল ইসলাম মিদ্যা"
বামের থেকে বামপন্থী মমতা? বিজেপির 'লাল ভোট' ছিনিয়ে নিতে ছক তৃণমূল কংগ্রেসের