২১-এর মঞ্চে বোঝা গেল প্রশান্ত কিশোরের পরিকল্পনা! 'নতুন' বক্তৃতা মমতার
মঞ্চে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে ভাষণে যেন তাঁকে একটু আলাদা ভাবেই পাওয়া গেল। এদিন তাঁর মুখ থেকে শোনা যায়নি কোনও মন্ত্রোচ্চারণ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন এসবই নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে। যদিও এসম্পর্কে একটি কথাও বলতে চায়নি তৃণমূল নেতৃত্ব।

লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে তৃণমূল নেত্রীর মুখে যেমন হিন্দু ধর্মের মন্ত্র শোনা গিয়েছিল। ভোটের পরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোঝাতে চান তিনি বিজেপির থেকেও বড় হিন্দু। তবে তাঁর মুখে অন্যধর্মের কথাও শোনা যেত। যেমন শোনা যেত ইনসাল্লাহ শব্দও।
এদিনের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ ছিল এক্বেবারে অন্যরকম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে আসেনি ধর্মের কোনও কথা। তার বদলে বানতলা চর্মনগরী কিংবা দেউচা পাঁচামি কয়লা খনির কথা, আর সেখানে কত চাকরি হতে পারে তার সম্ভাবনার কথা।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন এসবই নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে। কেননা লোকসভা ভোটে বাংলায় ধর্মীয় মেরুকরণ হয়েছে যথেষ্টই।
দীর্ঘদিনের বাম ভোটব্যাঙ্কের অনেকটাই চলে গিয়েছে বিজেপির দিকে। উত্তরবঙ্গ থেকে একটিও আসন জোটেনি তৃণমূলের। ২২ টির সবটাই দক্ষিণবঙ্গ থেকে। অন্যদিকে বিজেপির আসন ২ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮। এনআরসি অনুপ্রবেশ-সহ একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরে বিজেপি কার্যত সফল হয়েছে একথা তুলে ধরতে হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে তারাই। অন্যদিকে হিজাব পরা মুখ্যমন্ত্রী মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষা করেন। এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদে গিয়ে তিনটি আসনেই আরএসএস-এর সাহায্য নেওয়ার কথা বলেছিলেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। বলেছিলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোট বেধেছে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি। আর নির্বাচনের আগে কিংবা পরে বিজেপির জয় শ্রীরাম স্লোগানের ফাঁদে পা দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
যদিও এদিনের সভায় সেরকম কোনও ভাষণ শোনা যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। উপরন্তু সিপিএম ও কংগ্রেসকে উপদেশ দিতে শোনা গিয়েছে যেন তারা যেন তারা গাছের ডাল না কেটে লড়াই করে।
সূত্রের খবর অনুযাযী, প্রশান্ত কিশোরকে দলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট নিয়োগ করার পর থেকে কখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কখনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রশান্ত কিশোর। সেখানেই তিনি নাকি পরামর্শ দিয়েছেন, দলের সভায় ধর্ম নিয়ে কোনও কথা নয়। পাশাপাশি জয় শ্রীরাম স্লোগানের ফাঁদেও পা ফেলা যাবে না বলে সতর্ক করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। বদলে বাংলায় তৃণমূল যেসব প্রকল্পকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে কিংবা উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালু করেছে তা নিয়ে প্রচার করার। যা শোনা গিয়েছে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। বলেছেন দেউচা-পাঁচামির কথা।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস ছাড়া বাঁচার পথ নেই মমতার, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা পরামর্শ অধীরের]
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রের হারে বেতন চান যাঁরা, তাঁদের কেন্দ্রীয় চাকরির পরামর্শ দিলেন মমতা ]