বিশ্বের দরবারে মমতার বাংলা, দুর্গা কার্নিভালের ‘মেগা শো’তে ‘পুজো শেষে ঠাকুর দেখা’
পুজো শেষ, চলছে উৎসব। এবারও দুর্গা কার্নিভালের বিগ গ্র্যান্ড শো-তে থাকছেন বিদেশি প্রতিনিধিরাও। বাংলার দুর্গোৎসবকে বিশ্বজনীন রূপ দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতার কোনও খামতি নেই।
পুজো শেষ, চলছে উৎসব। মমতা-কৃপায় বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গোৎসব বর্ধিত হয়েছে আরও চারদিন। এবার দুর্গা কার্নিভালের বিগ গ্র্যান্ড শো-তে থাকছেন বিদেশি প্রতিনিধিরাও। বাংলার দুর্গোৎসবকে বিশ্বজনীন রূপ দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতার কোনও খামতি নেই। বাংলার দুর্গোৎসবকে তিনি ইতিমধ্যেই পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্ব আঙিনায়। এখন জনপ্রিয়তাকে রিও কার্নিভালের পর্যায়ে পৌঁছনই চ্যালেঞ্জ।
চোখ ধাঁধানো গ্র্যান্ড শো
চোখ ধাঁধানো সজ্জায় মোহময়ী রেড রোডে অনির্বচনীয় আরও এক মহা-উৎসবের অপেক্ষায় বাংলার দর্শনার্থীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনায় বাংলার দুর্গা কার্নিভাল বিগত দু-বছর ধরেই নতুন কীর্তির স্বাক্ষর রেখেছে বাংলার এই গ্র্যান্ড শো। এবার আরও বড় আকারে তা বিশ্বের সামনে তুলে ধরাই লক্ষ্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
ভারত সেরা দুর্গা কার্নিভাল
রিও কার্নিভালকে টেক্কা দিয়ে বাংলার দুর্গা কার্নিভালকে বিশ্বের দরবারে সেরার আসন দিতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লক্ষ্যে প্রথম ধাপে তিনি সফল। রেড রোডে ফিফা প্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিশ্বের প্রথমসারির ফুটবল দলের খেলোয়াড় ও প্রতিনিধিদের হাজির করেছেন মমতা। এবারও তিনি বিদেশি প্রতিনিধিদের নিয়ে আসছেন দুর্গা কার্নিভালে।
বিশ্ব-সকাশে বাংলার অনিন্দ্য সুন্দর সংস্কৃতি
শুধু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সামনে গ্র্যান্ড শো উপস্থাপিত করেই ক্ষান্ত নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিরঞ্জন শোভাযাত্রা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকছে বাংলার অনিন্দ্য সুন্দর সংস্কৃতি একসঙ্গে বাংলা তথা দেশ তথা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য। তাই ক্রমেই বড় আকার নিচ্ছে দুর্গা কার্নিভাল।
পুজো শেষে ঠাকুর দেখা
এতদিন লাইন দিয়ে মানুষ ঠাকুর দেখতেন। তা তো আছেই, ২০১৬ সাল থেকে বাংলার দুর্গাপুজোয় রাজ্যবাসীর কাছে নতুন স্বাদ নিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সুশৃঙ্খল শোভাযাত্রার মাধ্যমে ঠাকুরই লাইন দিয়ে আসেন দর্শকদের সামনে। কলকাতার বড় মণ্ডপগুলিতে যাঁদের ঠাকুর দেখা হয়নি, এই গ্র্যান্ড শোয়ে তাঁদের আক্ষেপ দূর হয়। 'পুজো শেষে ঠাকুর দেখা'র মাধ্যমে রচিত হয় নয়া রূপকথা।
কলেবর বৃদ্ধি দুর্গা কার্নিভালের
২০১৬ সালে ৩৯টি পুজোকে নিয়ে শোভাযাত্রার ব্যবস্থা হয়েছিল রোড রোডে। ২০১৭ সালে রাজ্য সরকার শোভাযাত্রার ব্যবস্থা করে ৬৮টি পুজো নিয়ে। এবার তা বেড়ে হচ্ছে ৭৫টি। উত্তরোত্তর কলেবর বৃদ্ধি হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাস, এই গ্র্যান্ড শো বিশ্ব-বাংলার ব্র্যান্ডিংয়ে প্রভূত সহায়তা করবে।
বাংলায় পর্যটনের দুয়ার খুলে যাবে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতবারই ঘোষণা করেছিলেন, বাংলায় পর্যটনের দুয়ার খুলে যাবে এই দুর্গা কার্নিভালের সৌজন্যে। আরও বহু বিদেশি পর্যটক আসবেন। বাংলার শারদোৎসব যে বিশ্বের অন্য দেশের যে কোনও উৎসবের তুলনায় পিছিয়ে নেই, তা বিশ্বের দরবারে তুলে করার পরিকল্পনা নেন মমতা। তাঁর এই পরিকল্পনায় বাংলা পেল আরও এক অনন্য উৎসবের স্বাদ।
মেগা কার্নিভালে বিদেশি প্রতিনিধি
গতবার ফিফা প্রতিনিধিরা বাংলায় দুর্গা কার্নিভালকে সমাদৃত করেছিল। এবারও সেই বিশ্ববাংলার ব্যান্ডিংয়ে বিদেশি প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নজর কাড়বে। বিদেশিদের সমস্ত আপ্যায়নের ব্যবস্থা প্রস্তুত। বিদেশি অভ্যাগতদের মাধ্যমে বাংলার সংস্কৃতির প্রসার সাধনই মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উদ্দেশ্য। তাই বিসর্জনের বিষাদের সুরের মাঝেই বিরাজমান ঝলমলে আনন্দঘন পরিবেশ, নতুন উদ্যম।
বাংলার মেগা কার্নিভালে উজ্জ্বল উপস্থিতি
নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে, এবার বাংলার দুর্গা কার্নিভালে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ও ভুটানের প্রতিনিধিরা। থাকতে পারেন অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের প্রতিনিধিরাও। মোট কথা বাংলার দুর্গাপুজোকে ধীরে ধীরে বিশ্বজনীন করে তোলার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতবার ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল ভারত তথা বাংলা। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছিলেন। সেই ধারা বজায় রেখেই বাংলার পুজোয় বিশ্বের প্রতিনিধিরা এবারও।
টেমস উৎসবেও বাংলার দুর্গা কার্নিভাল
শুধু রেড রোডে দুর্গা কার্নিভান করেই ক্ষান্ত থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার দুর্গা কার্নিভালকে তিনি টেমসের তীরেও নিয়ে গিয়েছেন। টেমস উৎসবে তুলে ধরা হয়েছে বাংলার দুর্গাপুজোকে। এই অগাস্টেই লন্ডনে টমসের তিনে উপস্থিপিত হয়েছে। ব্রিটিশ প্রতিনিধিরা তার আগে এসেছিলেন নবান্নে। তখন মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আমন্ত্রণ জানান রেড রোডের মেগা শোতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণ রক্ষা করতে, ব্রিটিশ প্রতিনিধিরাও থাকতে পারেন রেড রোডে।