মোদীর মহাপ্রস্থানের পথ প্রশস্থ করলেন হার্দিক, মমতাকে দিলেন বিজেপিকে হারানোর ‘মন্ত্র’
জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গেলেও নরেন্দ্র মোদী যে অপ্রতিরোধ্য নন,তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন রাহুল গান্ধী।এবার তাঁর সেনাপতি হার্রদিক রাজ্যে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে গেলেন মোদীকে হারানোর মন্ত্র
২০১৪-র লোকসভায় যে বিপুল ক্ষমতা নিয়ে কেন্দ্রে সরকার গড়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী, তাতে অন্য রাজনৈতিক দলগুলি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছিল। কিন্তু জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গেলেও নরেন্দ্র মোদী যে অপ্রতিরোধ্য নন, তাঁকেও যে হারানো যায়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের ফিরে আসার যুদ্ধে গুজরাটে রাহুলের অন্যতম সেনাপতি ছিলেন হার্দিক প্যাটেল। তিনিই এবার রাজ্যে এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদীকে হারানোর 'মন্ত্র'।
রাহুলের তরুণ-ব্রিগেডের অন্যতম নেতা পাতিদার আন্দোলনের পথিকৃত হার্দিক প্যাটেল কলকাতায় এসে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানিয়ে যান, '২০১৯-এ নরেন্দ্র মোদীকে হারানো সম্ভব। সেই লক্ষ্যপূরণের মূল শর্ত রাহুল গান্ধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিলিত হওয়া। তার কারণ এই মুহূর্তে বিরোধী পক্ষের সবথেকে শক্তিশালী দুই দল হল কংগ্রেস ও তৃণমূল। তাই এই দুই দলের সুপ্রিমোর হাত ধরা জরুরি। আর এই জোটে সামিল হতে হবে বামফ্রন্ট থেকে শুরু করে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজবাদী পার্টিকেও।'
তাঁর কথায়, এই নতুন সমীকরণই পারে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপির অপশাসন থেকে দেশকে রক্ষা করতে। মোদীর বিরুদ্ধে রাহুল-মমতার নেতৃত্বে সবকটি দলকে একজোট হতে হবে। তাহলেই দেশ রক্ষা পাবে। তিনি বলেন, 'আমি কারও পক্ষে, কারও বিরুদ্ধে নয়, আমি দেশকে বাঁচানোর পক্ষে, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে হটানোর পক্ষে। তাই এ রাজ্যে তৃণমূলকে যেমন বামফ্রন্টকে নিয়ে নাক উঁচু করলে হবে না, তেমনই মায়বতীকে নিয়েও সমাজবাদী পার্টির অনীহা থাকা উচিত নয়।'
কিন্তু এ রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কি কোনওভাবেই বাম-তৃণমূল জোট হওয়া সম্ভব? এ তো অলীক কল্পনা! এর জবাবে হার্দিকের সোজাসাপ্টা উত্তর, 'আমাকে যদি ঘরে এসে প্রতিদিন বাইরের দুষ্কৃতী মারধর করে, প্রতিবেশী শত্রু হলেও সে দাঁড়িয়ে দেখতে পারবে না, সে ঝাঁপিয়ে পড়বেই। এক্ষেত্রেও তেমনটা ঘটবে।'
হার্দিক নবান্নে বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইন্দিরা গান্ধীর পর সবথেকে ক্ষমতাশালী নেত্রী হিসেবে ব্যাখ্যা করে গিয়েছেন। সেইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেডি গান্ধী আখ্যা দিয়ে গিয়েছেন। তিনি যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, 'এখন আর নরেন্দ্র মোদীর দাদাগিরি সহ্য করছেন না শরিকরা। তাই তাঁরা বেরিয়ে আসছেন বিজেপি সঙ্গ ছেড়ে। ঘুন ধরে গিয়েছে এনডিএ-তে।'
তাঁর কথায়, 'যত লোকসভার দিন এগিয়ে আসবে, ততই এই প্রবণতা বাড়বে। এবার আর ২৭২ নয়, দেড়শোতেই থমকে যাবে মোদীর বিজয়রথ।' তবে এত কথা বললেও, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কে পছন্দ, তা স্পষ্ট করেননি হার্দিক। তিনি বলেছেন, 'এটা ঠিক করে দেবেন জনতা-জনার্দনই। এই বিচার করে দুই নেতা-নেত্রীর মধ্যে ইগোর লড়াই সরিয়ে রাখতে হবে। নইলে কিন্তু বিপদ! স্বার্থত্যাগ না করলে দেশকে রক্ষা করা যাবে না।'