মমতায় প্রকাশ তৃণমূলী গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, কোন গোষ্ঠীর হাতে রাশ বাতলে দিলেন নেত্রীই
মুকুল রায় দল ছাড়ার পর প্রথম কোর কমিটির বৈঠক। স্বভাবতই এই অধিবেশন অধিক গুরুত্ব পেয়েছিল সেই কারণে। সেই বৈঠকে গোষ্ঠীবাজি রুখতে কড়া বার্তা মমতার।
পঞ্চায়েতের আগে যখন দলগত শক্তিকে একত্রিত করার বার্তা দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন তাঁর কথাতেই প্রকাশ হয়ে পড়ল দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চেহারা। তিনি বোঝালেন তৃণমূল সঙ্ঘবদ্ধ হলে ফুৎকারে উড়ে যাবে বিরোধীরা। আবার সেই তিনিই নাম ধরে স্পষ্ট করলেন কোথায় কে গোষ্ঠীবাজি চালাচ্ছেন।
বুধবার তৃণমূলের কোর কমিটির বর্ধিত অধিবেশন বসেছিল কলকাতার নজরুল মঞ্চে। মুকুল রায় দল ছাড়ার পর প্রথম কোর কমিটির বৈঠক। স্বভাবতই এই অধিবেশন অধিক গুরুত্ব পেয়েছিল সেই কারণে। তারপর পঞ্চায়েতের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মীদের কী বার্তা দেন সেদিকেও লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক মহলের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নেতৃত্ব গুণের পরিচয় দিয়ে সেই কাজটি যথাযথভাবেই করলেন। মুকুল রায়কে ছাড়াই দল কীভাবে এগোবে তা নিয়ে যেমন পথ দেখালেন, তেমনই কার উপর কী দায়িত্ব বর্তাবে, তাও ভাগ করে দিলেন।
আর সেখানেই ঘটল বিপত্তি। একেবারে নাম করে করে কোন জেলায় কে দায়িত্ব নেবেন, কার নেতৃত্বে মিছিল হবে, কে অগ্রভাগে থাকবেন- তা স্পষ্ট করে দেন নেত্রী। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন কে কোথায় দলীয় কর্মসূচিতে বাধ সাধছে। তাঁকে সাবধানও করে দেন মমতা। বলেন, তিনি কিছুতেই এইসব বরদাস্ত করবেন না। যাঁর মনে হবে, দলে ভালো লাগছে না, তিনি চলে যেতে পারেন।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তৃণমূল কংগ্রেস ৮ নভেম্বর নোটবন্দি ইস্যুতে কালা দিবস পালন করবে। কলকাতা-সহ সমস্ত জেলাতেই এই কর্মসূচিতে মিছিল হবে। কলকাতার মিছিলের দায়িত্ব থাকবেন সুব্রত বক্সি। বেহালায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, উত্তর কলকাতায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার অন্যান্য মিছিলের অগ্রভাগে থাকবেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
মালদহের ক্ষেত্রে তিনি নাম করেই কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীকে সাবধান করে দেন। এই জেলায় তিনি মিছিলের দায়িত্ব দেন সাবিত্রী মিত্রকে। সাবিত্রীর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণের নাম করেই নেত্রী বলেন, 'কৃষ্ণেন্দু, আমি কোনও ঝগড়াঝাটি শুনতে চাই না। সুষ্ঠুভাবে যেন কর্মসূচি পালন করা হয়।'
এছাড়াও বর্ধমানের ক্ষেত্রে স্বপন দেবনাথকে দায়িত্ব দেন নেত্রী। এছাড়াও তিনি নাম ধরে ধরে দায়িত্ব অর্পণ করেন গৌতম দেব, সৌরভ চক্রবর্তীদেরও। সবাইকে নির্দেশ দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। কোনও অসুবিধা হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানিয়ে দেন মমতা। মুকুল রায়ের অবর্তমানে পার্থ-র উপরই যে দায়িত্ব বর্তাচ্ছে, তাও স্পষ্ট করে দিলেন দলনেত্রী।