মমতার মাস্টারস্ট্রোকে মুকুলের পরিকল্পনায় জল, ২০১৯-এর লক্ষ্যে নিলেন মস্ত পদক্ষেপ
আসছে লোকসভা। কাজ শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু কাজ শুরু করাই নয়, বিজেপির পরিকল্পনায় জল ঢেলে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন লোকসভা ভোটের আগেই।
আসছে লোকসভা। কাজ শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু কাজ শুরু করাই নয়, বিজেপির পরিকল্পনায় জল ঢেলে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন লোকসভা ভোটের আগেই। এক ঢিলে মারলেন অনেক পাখি। বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপি টার্গেট করছে মতুয়া ভোটের দিকে। বিজেপির সেই টার্গেট ভোঁতা করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুটি বোর্ড মমতার
মতুয়াদের জন্য এবার পৃথক বোর্ড গঠন করার কথা ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি নমশূদ্রদের জন্য পৃথক বোর্ড গঠন করার কথা জানালেন। এই দুটি বোর্ড গড়ে তিনি উন্নয়নের ধারা উক্ত দুই সমাজের দিকেও বইয়ে দিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল ঠাকুরনগর। নমশূদ্ররাও খুশি মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে।
পিছিয়ে পড়াদের পাশে মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দুই সম্প্রদায়ের জন্য নতুন বোর্ড গঠন করে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর সরকার সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য রয়েছেন। তাঁর সরকারের উন্নয়নের সুফল তিনি সকল শ্রেণির মধ্যে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। তাই তিনি ফের বোর্ড গঠন করে মতুয়া ও নমশূদ্রদের কাছে টেনে নিলেন।
জঙ্গলমহল-পাহাড়েও উন্নয়ন পর্যদ
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরই বিভিন্ন জাতি-উপজাতি ও সম্প্রদায়কে নিয়ে সরকারি উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লেপচা, ভুটিয়া, তামাং-সর পার্বত্য এলাকার উপজাতিদের জন্য গঠিত হয়েছে ১৫টি বোর্ড। আবার আদিবাসীদের জন্যও পৃথক বোর্ড গঠন করে উন্নয়নের নয়া দিশা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বোর্ড রূপান্তরকামীদেরও
শুধু জাতি, উপজাতি, সম্প্রদায় নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রূপান্তরকামীদের উন্নয়নের জন্যও প়ৃথক বোর্ড গঠন করে দিয়েছেন। বৃহন্নলা সম্প্রদায়ের উন্নয়নেও তিনি ব্রতী হয়েছেন। এবার তিনি আলাদা করে উন্নয়নের দিশারী হলেন মতুয়া ও নমশূদ্রদের জন্য। লোকসভার আগে এই সিদ্ধান্তে বাজিমাত হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
বোর্ডে ত্বরাণ্বিত উন্নয়ন
পাহাড়ে উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করে সুফল মিলেছে। ত্বরাণ্বিত হয়েছে উন্নয়ন প্রক্রিয়া। লোকসভা ভোটের আগে মতুয়া ও নমশূদ্রদের জন্য উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে এই দুই সম্প্রদায়ের উন্নয়নেও জোর দিতে চাইছেন মমতা। মমতার কথায়, পাহাড়ের জনজাতিদের মতো মতুয়া ও নমশূদ্ররাও পিছিয়ে আর্থসামাজিক দিক থেকে। তাই সরকার তাঁদের পাশে থাকবে।
বিরোধীদের প্রশ্ন
বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, যাঁরা মতুয়া, তাঁরাই তো নমশূদ্র। তাহলে মতুয়া আর নমশূদ্রদের জন্য পৃথক পৃথক বোর্ড কেন? তাঁদের কথায়, এই দুই বোর্ডের ফলে নমশূদ্রদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হবে। সরকার ভোটের লক্ষ্যে এই বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছে বলে অভিযোগ।
মতুয়া-ভোট নজরে
মতুয়া ভোটে রাজ্যের অন্তত ১০টি লোকসভা কেন্দ্রের ভাগ্য নির্ধারণ হয়। সেই কারণেই নমশূদ্রদের জন্য বোর্ডের পাশাপাশি মতুয়াদের জন্য পৃথক বোর্ড গঠন করা হল। তৃণমূল চাইছে না, কোনওমতেই মতুয়া ভোট অন্য বাক্সে চলে যাক। তাই লোকসভা ভোটের আগে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন মমতা।
[আরও পড়ুন: ‘সরকারি কর্মচারী'দের জন্য খুশির খবর, এককালীন ২ লক্ষের ভাতা, জারি হল বিজ্ঞপ্তি]
বিরোধীদের যুক্তি খণ্ডন
ঠাকুরনগর মহাসংঘের তরফে বিরোধীদের যুক্তি খণ্ডন করে দেওয়া হয়েছে। মহাসংঘের কথায়, মতুয়ারা বেশিরভাগই নমশূদ্র ঠিকই, কিন্তু মতুয়াদের মধ্যে রয়েছে বহু মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ। মতুয়া মহাসংঘের প্রধান ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুর। যাঁরা তাঁর ভক্ত, তাঁরাই মতুয়া। সব মতুয়া নমশূদ্র হলেও, সব নমশূদ্র মতুয়া নয়। তাই মতুয়াদের জন্য পৃথক বোর্ড গঠন একেবারেই সঠিক সিদ্ধান্ত।
[আরও পড়ুন:দিঘার পথে স্বল্পে রক্ষা, প্রতিবাদী হতেই কিল-চড়-ঘুসি, আক্রান্ত তৃণমূল বিধায়ক ]