গরু নিয়ে মল্লযুদ্ধে মোদী-মমতা, হুঙ্কার মুখ্যমন্ত্রীর
ফের সরাসরি কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য। কেন্দ্রের অসাংবিধানিক ও অনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মোকাবিলা আইনি পথেই!
গবাদি পশু বিতর্কে সাংবিধানিক পথেই কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কেন্দ্রকে একহাত নিয়ে সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দেন, 'সীমা লঙ্ঘন করবেন না। কেন্দ্র যে সমস্ত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে তা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও অনৈতিক। যুক্তরাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংসের এই অপচেষ্টা আমরা মানব না। আইনি পথেই এর মোকাবিলা করা হবে।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের সমালোচনা করে বলেন, রাজ্যের ক্ষমতা খর্বের চেষ্টা করা হচ্ছে। অভিযোগ, কেন্দ্র গবাদি-নির্দেশিকা চাপিয়ে দিতে চাইছে মানুষের উপর। এই সিদ্ধান্তকে আমল দেওয়া যাবে না। কে কী খাবেন, সেটা তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, কেউ তা চাপিয়ে দিতে পারে না। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত শিল্পের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, কেন রমজান মাস রোজার সময়েই গবাদি নির্দেশিকা জারি করা হল?
কখনও গরুর কানে আধার কার্ড লাগানোর অনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কখনও মানুষ কী খাবেন, তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। কৃষকরা গরু নিয়ে গেলে খুন করে দেওয়া হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। মমতা প্রশ্ন তোলেন কেন এই হিংসা? মানুষের অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করে এইসব কাজ মেনে নেওয়া হবে না।
গাড়িতে লালবাতি লাগানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও মমতা এদিন সরব হন। বলেন, আমরা কেউ গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করিনি। কিন্তু কার গাড়িতে লাল বাতি ব্যবহার করা হবে, সেটা সম্পূর্ণ রাজ্যের সিদ্ধান্ত। সেখানেও নাক গলাচ্ছে কেন্দ্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সাফ জানান, কোনওভাবেই কেন্দ্রের এই হঠাকারিতাকে সমর্থন নয়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বাংলার জন্য লোগো তৈরির কথা জানান। তিনি বলেন, বাংলার লোগো হেরিটেজ কমিশনের অনুমোদনের জন্য দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে গেলেই অন্য রাজ্যের মতো বাংলারও লোগো থাকবে। আগে তা ছিল না। হাসপাতালগুলিতে ৩২০০ কর্মী নিয়োগ করা হবে বলেও এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, রাজ্যর মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠক দার্জিলিংয়ে হবে। তবে আগামী ৮ জুনের সেই বৈঠকের জন্য যাতে কোনওভাবেই পর্যটকদের সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, বৈঠকের জন্য যেন কোনওভাবেই পর্যটকরা দুর্যোগে না পড়েন। হোটেল বুকিং যেন বন্ধ না হয়।