‘পরিবারের একজন হয়ে বাংলায় আসুন’, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের জন্য সওয়াল মমতার
বিজেপি নেতা সুরজ পাল অমু। মমতাকে তুলনা করেছেন সূর্পনখার সঙ্গে। তাঁর এই বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দায় সরব হল বাংলার সংস্কৃতি জগৎ।
'বাংলার পরিবর্তিত পরিস্থিতি শিল্পের জন্য অনুকূল। এবার আপনারা বাংলায় আসুন, লগ্নি করুন, শিল্পের জন্য উপযোগী সমস্ত পরিকাঠামোর ডালি সাজিয়ে অপেক্ষায় আছি আমরা। পরিবারের একজন হয়ে বাংলায় আসুন।' সোমবার নিউটাউনে হোরাসিস শিল্প সম্মেলনের উদ্বোধন করে শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন:'দুর্নীতি গ্রস্ত' মুকুল, প্রাক্তনীর বিরুদ্ধে এমনই সব অভিযোগ তৃণমূলের]
তিনি বলেন, 'বাংলায় ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের বড় সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলায় বিনিয়োগ করুন।' শিল্পপতিদের কাছে আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বামেদের আমলে যে পরিস্থিতি ছিল, তার আমূল পরিবর্তন হয়েছে বিগত সাত বছরে। এখানে এখন জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হয় না। শিল্পের জন্য ল্যান্ড ব্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছে। ফলে বাংলার মতো শান্ত উপযোগী পরিবেশ এই মুহূর্তে দুটি মিলবে না।'
তাঁর কথায়, 'বাংলায় শিল্পস্থাপনের সবথেকে বড় সুবিধা হল বাংলার ভৌগলিক অবস্থান। এই ভৌগলিক অবস্থানের জেরেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছে বাংলা। এই বাংলা যেমন উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার, তেমনই এই বাংলা থেকে আন্তর্জাতিকস্তরে বাণিজ্যের উপযোগী অবস্থা রয়েছে। কেননা বাংলাদেশ, মায়ানমার, সিঙ্গাপুর থেকে শুরু করে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলার সুসম্পর্ক যেমন রয়েছে, তেমনই বাংলাই এইসব দেশের প্রবেশ দ্বার। সবকটি দেশেরই দূরত্ব বাংলা থেকে সবথেকে কম।'
[আরও পড়ুন:ধর্ষণকাণ্ডে নম্রতার পাড়ার আদালতে আত্মসমর্পণ ঋতব্রতর, কী নির্দেশ দিলেন বিচারক]
'ফলে এই সুযোগ অন্য কোথাও মিলবে না। তার উপর আমাদের কাছে শিল্প স্থাপনের উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছে। পরিবহণ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে দক্ষ শ্রমিক, সরকারি সুবন্দোবস্ত সমস্তই বর্তমান। এখানে শিল্পপতি, শ্রমিক- উভয়ের সঙ্গেই সরকারের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাঁর সরকার কোনও কর্মদিবস নষ্ট করে না, নষ্ট হয় না কোনও শ্রমদিবসও। আমাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকরা সমস্তরকম চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি। আমাদের মেধাবী ছাত্র-যুবরা প্রস্তুত। তারপর গত চার বছর ধরে ই-গভর্ন্যান্স, ই-টেন্ডারিং ব্যবস্থাও চালু হয়েছে রাজ্যে। এক জানালা পদ্ধতি অবলম্বন করে শিল্পোদ্যোগের সম্পূর্ণ ব্যবস্থা রয়েছে বাংলায়।'
মমতার কথায়, 'বাংলা তাঁর সরকারের আমলে শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কে ৩০ নম্বর থেকে ১৩ নম্বরে উঠে এসেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে পশ্চিমবঙ্গ এই মুহূর্তে ভারত সেরা।' তাঁর আহ্বান, 'আপনারা বিনিয়োগ করলে, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প নতুন লগ্নি নিয়ে এলে অচিরে বাংলা বৃহৎ শিল্পেও এক নম্বর হবে। কেননা আমাদের সরকারের আমলে কোনও শিল্পে লক-আউট হয়নি। বরং তাঁর সরকার বন্ধ শিল্প, কল-কারখানা খুলে শিল্পের প্রসার ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছে।'