
মুড়ির ঝাঁকা নাড়িয়ে আর গ্যাসের সিলিন্ডারে পঞ্চায়েত বার্তা, নিজস্ব স্টাইলে জনসংযোগ মমতার
বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত। এবার একুশে জুলাই তৃণমূল সুপ্রিমো পঞ্চায়েত ভোটকে লক্ষ্য করে এক বিশেষ বার্তা তুলে ধরলেন। আর তার জন্য তিনি আশ্রয় করলেন গ্রামের মানুষের অন্যতম পছন্দের খাবার মুড়িকে। কলকাতার ধর্মতলায় শহিদ সমাবেশের বিরাট মঞ্চে মুড়ির ঝাঁকা হাতে তুলে নিয়ে তিনি পঞ্চায়েতের আগে জনসংযোগ বার্তা দিলেন।

মুড়িতেও জিএসটি, ঝাঁকা নাড়িয়ে জনসংযোগ মমতার
সম্প্রতি মুড়িতেও লাগু হয়েঠছে জিএসটি। সেটাই এবার তিনি বিভিন্ন রা্জ্য থেকে আসা গ্রামগঞ্জের বিপুল জনতার সামনে এমনভাবেই তুলে ধরলেন যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে তা মাইলস্টোন হয়ে গেল। ভরা মঞ্চে মুড়ির বস্তা থেকে মুড়ি ঝাঁকায় তুলে তা দেখিয়ে মানুষের কাছে বিজেপির কু-কীর্তি ফাঁস করলেন। তিনি বুঝিয়ে দিলেন, দেখুন- কেন্দ্রের শাসকদলকে তাঁরা গ্রামবাংলার প্রাণের খাবার মুড়িতেও জিএসটি লাগিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

মুড়ির ঝাঁকা নাড়িয়ে বিজেপির স্বরূপ প্রকাশ মমতার
শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিজেপির বিরুদ্ধে দাগা তোপকেও পঞ্চায়েতের কাছে ব্যবহার করলেন। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ফের কৃষক-বিরোধী প্রমাণের চেষ্টা করলেন একেবারে নিজস্ব স্টাইলে। বাষণ থামিয়ে সমাবেশে উপস্থিত জনতার কাছে থেকে মুড়ি নিয়ে এসে সবাইকে দেখিয়ে তিনি বিজেপির স্বরূপ প্রকাশ করলেন।

বিজেপি কৃষক তথা খেটে খাওয়া মানুষ-বিরোধী
এর আগেও তিনি ঝালমুড়ির রাজনীতি দেখিয়ছেন। বাবুল সুপ্রিয়কে ঝালমুড়ি খাওয়ানোর সেই চর্চা আজও হয় রাজনৈতিক মহলে। এবার একেবারে গ্রামবাংলার ফোলা মুড়ি নিয়ে একুশে জুলাইয়ের সমাবেশকে মাতিয়ে দিলেন মমতা। মমতা মুড়ি-রাজনীতির মাধ্যমে তুলে ধরতে চাইলেন বিজেপি কৃষক তথা খেটে খাওয়া মানুষ-বিরোধী। তাই ওদের ভোট নয়।

মুড়ি রাজনীতি, গ্যাস সিলিন্ডারে প্রতীকি প্রতিবাদে মাত
পঞ্চায়েত মানেই গ্রামের ভোট। আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোটকে নজরে রেখে সুক্ষ্ম চাল দিয়ে দিলেন তিনি। শুধু মুড়ি নয়, গ্যাসের দামবৃদ্ধিকেও তিনি পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে সামনে রাখলেন। গ্যাসের প্রতীকী সিলিন্ডার তুলে ধরে শহর ঘেঁষা পঞ্চায়েতের মানুষকে টার্গেট করলেন। তিনি দুই প্রতীকী প্রতিবাদে অনেক কিছু না বলেও অনেক কিছু বলে দিলেন। মানুষের কাছে যা ছবির মতো রয়ে যাবে আগামী পঞ্চায়েত ভোট পর্যন্ত। আর মমতার এই মুড়ি রাজনীতি নিয়ে চর্চাও হবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব স্টাইলে জনসংযোগ
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এটা মমতা বন্যোিয়পাধ্যায়ের তৈরি নিজস্ব একটা স্টাইল, যার মাধ্যমে তিনি অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন, এটাউ তাঁর চাবি-কাঠি হয়ে ওঠে। তবে তিনি শুধু গ্রামের মানুষকে ছুঁয়ে যাওয়া দুটি ইস্যু তুলে ধরেই ক্ষান্ত নন, তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে জনসংযোগের বার্তা দিয়েছেন। মানুষের পাশে থাকার জন্য নেতা-কর্মীদের রোডম্যাপ তৈরি করে দিয়েছেন।

মমতার জনসংযোগের বার্তা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের
জনসংযোগে তিনি যেমন রেখেছেন দুর্গাপুজোকে। তেমনই ব্লকে ব্লকে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। আর বলেছেন সমস্ত কর্মীদের সাইকেল নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরতে হবে। এমএলএরা পায়ে হেঁটে, সাংসদরা রিকশায়, কর্মীরা চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়ে জনসংযোগ করতে হবে। সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, চায়ের দোকানে আড্ডা দিলেও পকেটের পয়সা দিয়ে চা খেতে হবে। মনে রাখতে হবে ব্যক্তির থেকে দল বড়। তৃণমূলকে হয়ে উঠতে হবে জনগণের পাহারাদার। আর জানিয়েছেন, মানুষের পাশে দাঁড়াবেন, বিজেপির বিরুদ্ধে ভয় পাবেন না, লড়াইয়ের ময়দান থেকে যাবেন না।
বিরোধী ঐক্যে ফাটল! উপ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকছে তৃণমূল