লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্মসংস্থানে মমতার চমক, আসছে শিক্ষকতায় ইনটার্নশিপ
লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নয়া চমক। এবার শিক্ষকতায় চালু হচ্ছে ইনটার্নশিপ। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকলেই এই সুযোগ মিলবে। সোমবার এই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নয়া চমক। এবার শিক্ষকতায় চালু হচ্ছে ইনটার্নশিপ। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকলেই এই সুযোগ মিলবে। সোমবার এই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ইনটার্নশিপ প্রোগ্রামের শেষে একটি সার্টিফিকেটও মিলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ভবিষ্যৎতে রাজ্য সরকারের চাকরির ক্ষেত্রে এই সার্টিফিকেটের গুরুত্বও থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শিক্ষকতায় ইনটার্নশিপ-এ যোগ দেওয়ারা মাসে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকার ভাতাও পাবেন। রাজ্যে স্কুল শিক্ষায় শিক্ষকের চাহিদা রয়েছে। স্থায়ী কর্মসংস্থানে এতখানি চাহিদা এই মুহূর্তে মেটানো যে যাচ্ছে না তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই শিক্ষকতায় ইনটার্নশিপ চালু করা সম্ভব হলে শিক্ষকদের অভাব অনেকটাই পূরণ করা যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
বহু ক্ষেত্রেই ইনটার্নশিপ প্রোগ্রামের চল আছে। যেমন গবেষণাকেন্দ্রে রিসার্চ স্কলাররা পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে জুনিয়র ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নিয়ে ভাতা পান। চিকিৎসাক্ষেত্রেও এমবিবিএস-রা ইনটার্নশিপ-এর সুযোগ পান। এমনকী বিভিন্ন পেশাদার কোর্সের ডিগ্রিধারীরাও সরকারের বিভিন্ন দফতর ও বেসরকারি সংস্থাতে ইনটার্নশিপ-এর সুযোগ পেয়ে থাকেন। এতে সার্টিফিকেট যেমন মেলে, তেমনি বহু সংস্থা ইনটার্নশিপ-এর জন্য ভাতাও দেয়। এমনকী, ইনটার্ন-এর কাজে কর্তৃপক্ষ খুশি থাকলে তাকে বহাল করে নেওয়ারও চল রয়েছে। তবে, ইনটার্নশিপ-এর ভাবনা কোনওদিন-ই সরকার পরিচালিত শিক্ষালয়গুলিতে দেখা যায়নি। সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই ভাবনা সত্যি সত্যি কার্যকর হলে তা রাজ্যের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ছেলে-মেয়েদের কাছে একটা আশার আলো জ্বালবে।
রাজ্যের স্কুলগুলিতে যত সংখ্যক শিক্ষক দরকার তার থেকে সংখ্যাটা অনেক কম। রাজ্য সরকার নানাভাবে চেষ্টা করেও শিক্ষকদের এই অভাব মেটাতে পারেনি। প্যারা টিচারের মতো অস্থায়ী চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষকদের দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা হলেও তাতে অভাব মিটছে না। আবার স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নানা সমস্যা রয়েছে। সেই কারণে অনেকটা হাতে-কলমে শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ পাওয়ার মতোই টিচার-ইনটার্ন চালুর ভাবনা নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী ভাবে এই শিক্ষক ইনটার্নদের নিয়োগ করা হবে এবং কবে থেকেই বা এই প্রকল্প দিনের আলো দেখবে? এই নিয়ে কোনও বিস্তারিত তথ্য জানাননি মুখ্যমন্ত্রী। ২ বছরের জন্য ইনটার্নশিপ-এর সুযোগ মিলবে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন ইনটার্নশিপ করা ছেলে-মেয়েদের পারফরম্যান্স ভালো হলে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তারা অগ্রাধিকার পাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরের একটা অংশ, সুন্দরবন এবং ডুয়ার্সে সরকারি স্কুলগুলোতে সেভাবে শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকী যে সব শিক্ষককে সেখানে পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে তাঁরাও কোনও না কোনও কারণ দেখিয়ে সেখানে যাচ্ছেন না। কিন্তু, ইনটার্নশিপ প্রোগ্রাম চালু হলে এই অঞ্চলগুলির সরকারি স্কুলে শিক্ষকের অভাব অনেকটাই মিটে যাবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।