সহায়ক মূল্যে আলু কিনবে সরকার, রফতানিতেও ভর্তুকি, নন্দীগ্রাম দিবসে ঘোষণা মমতার
‘কথা দিলে কথা রাখি। মিথ্য প্রতিশ্রুতি দিই না।’ মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম দিবসের ১০ বছর পূর্তিতে কৃষকরত্ন সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা, ১৪ মার্চ : 'কথা দিলে কথা রাখি। মিথ্য প্রতিশ্রুতি দিই না।' মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম দিবসের ১০ বছর পূর্তিতে কৃষকরত্ন সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন ঘোষণা করেন কৃষকদের কাছে থেকে ৪ টাকা ৬০ পয়সা দরে আলু কিনবে সরকার। বাইরে আলু রফতানিতেও ভর্তুকি দেবে রাজ্য।
কৃষকদের পাশে থাকার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী শোনালেন গণতন্ত্রের পরম্পরা বজায় রাখার কথা। তিনি বলেন, কেউ হারবেন, কেউ জিতবেন, কিন্তু ক্ষমতায় আছি বলে বুলডোজার চালাবো, তা হবে না। গণতন্ত্রের নিয়ম মেনে কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ বোঝাপড়ার মাধ্যমেই চলবে দেশ। কৃষকদের অনুষ্ঠান থেকে বেসরকারি হাসপাতালকেও বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন ৭৫ জন কৃষককে সম্মান প্রদান করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, খাদ্য না থাকলে জীবন চলে না। কৃষক না থাকলে দেশ চলে না। কৃষকদের উন্নয়নই সরকারের পাখির চোখ। আমাদের শপথ ছিল- সিঙ্গুরের জমি ফিরিয়ে দেব। সেই জমি আমরা চাষযোগ্য করে ফিরিয়ে দিয়েছি চাষিদের হাতে। সেখানে এখন সোনার ফসল ফলছে। প্রচুর আলুর ফলন হয়েছে সিঙ্গুরে।
এছাড়া ধান সংগ্রহের জন্য সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়েছে। চাষিরা যাতে সহজে ধান বিক্রি করতে পারে, তার জন্যই সরকার এই ব্যবস্থা করেছে। সেইসঙ্গে বাংলায় ফসল বিমা যোজনা শুরু করা হয়েছে। কৃষক বিমার আওতায় এখন বেশিরভাগ কৃষক। মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে। জল ধরো জল ভরো প্রকল্প তৈরি হয়েছে। খরা প্রবণ অঞ্চলে সেচের বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। উন্নয়নের এই ধারাতেই ১ কোটি ৭৮ লক্ষ টন ফসল উৎপাদন হয়েছে ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ২০ লক্ষ কৃষককে সয়েল হেলথ কার্ড দেওয়া হয়েছে। ৯০ শতাংশ কৃষকের হাতে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। সবুজকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সবুজ হল পরিবেশ বান্ধব। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি মাসে ২৮ হাজার মেট্রিক টন আলু লাগে মিড ডে মিল সেন্টারের জন্য। আমরা ঠিক করেছি ওই পরিমাণ আলু আমরা সরাসরি সরকারের কাছ থেকে কিনে নেব। সেইসঙ্গে রেলে ৫০ পয়সা ও জাহাজে রফতানিতে ১ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাম আমলের বোঝা বইতে হচ্ছে আমাদের সরকারকে। ৪০ হাজার কোটি টাকা দেনা শোধ করতে হচ্ছে। এই টাকা থাকলে কৃষকদের আরও সাহায্য করতে পারতাম। আরও উন্নয়ন করা যেত রাজ্যের। তিনি বলেন, নোট বাতিলের জেরে কৃষকদের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। সরকার তাদের পাশে আছে। যে কোনও প্রয়োজনে কৃষকদের স্বার্থ দেখবে তাঁর সরকার। মৎস্যচাষেও সরকার পাশে দাঁড়াবে।