মমতার কাছে পাহাড়েও গোহারা মোদী, কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রশ্নে হার আইনি লড়াইয়েও
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহারের উপর অন্তর্বতীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়ে বিচারপতিরা সমালোচনা করেন কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েরই। বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, ‘কেন দার্জিলিংকে রাজনীতির আখড়া বানানো হচ্ছে?’
পাহাড় রাজনীতিতে তৃণমূলের কাছে শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে বিজেপির। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কূট-কৌশলে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছেন দিলীপ ঘোষ-সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ারা। এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সংঘাতের জেরে পর পর দুবার মোদীর সরকারকে হারালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রশ্নে হাইকোর্টে জয় হল তাঁরই। আদালত জানিয়ে দিল পাহাড় থেকে এখনই কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করা যাবে না।
১০৬ দিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে পাহাড়কে ফের বাগে এনেছেন মমতা। হটিয়ে দিয়েছেন 'বিজেপির ঘোড়া' পাহাড়ের স্বঘোষিত মুখ্যমন্ত্রী বিমল গুরুংকে। তাঁরই এক সময়ের ডানহাত বিনয় তামাংকে ঘুঁটি করে পাহাড় যুদ্ধে সাফল্য পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনীতির এই খেলায় দাঁত ফোটাতে পারেননি নরেন্দ্র মোদীর দলের দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ারা।
পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর পর বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পাহাড়ে গেলেও আদতে কোনও ফায়দা তুলতে পারেননি। বরং পাটকেল খেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এখন পাহাড়ে উত্তাপ বলতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গুরুপন্থীদের বিক্ষিপ্ত অশান্তি সৃষ্টি করা। তারই জেরে অমিতাভ মালিক নামে এক তরুণ পুলিশ অফিসারের মৃত্যু হয়েছে।
আর তারপরই পাহাড় থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে তাঁদের অসময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফের ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় সরকার। একদিন আগেই মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বিঁধেছেন কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপিকে। এদিনই হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে রাজ্য। তারই প্রেক্ষিতে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও দেবাংশু সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত ১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করা যাবে না।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহারের উপর অন্তর্বতীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়ে বিচারপতিরা সমালোচনা করেন কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েরই। বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, 'কেন দার্জিলিংকে রাজনীতির আখড়া বানানো হচ্ছে। দার্জিলিংয়ের সঙ্গে বাংলার আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তা কেন কেন্দ্র ও রাজ্য বুঝছে না। সবার আগে দার্জিলিং নিয়ে আবেগকে সম্মান করতে হবে। দার্জিলিংয়ের শান্তি নিশ্চিত করাই সর্বাগ্রে প্রয়োজন। তাই রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে পুরো পরিস্থিতি বিবেচনা করা দরকার উভয়েরই।'