রাজ্যে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট গঠনে ‘সহায়তা’ বাম শরিকদের! চরম-বার্তা ‘বড়দা’ সিপিএমকে
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-বিরোধী ঐক্য গড়তে রাজ্যওয়াড়ি বৈঠক শুরু করেছে কংগ্রেস। আর এই পরিস্থিতিতেই রাজ্যে বেসুরো বাজতে চলেছে বাম শরিকরা।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-বিরোধী ঐক্যের হাওয়া বইছে দেশজুড়ে। কর্ণাটক সরকারের শপথ গ্রহণ মঞ্চে যে সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়েছিল, সেই সূত্র ধরে রাজ্যওয়াড়ি বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে কংগ্রেস। আর এই পরিস্থিতিতেই রাজ্যে বেসুরো বাজতে চলেছে বাম শরিকরা।
রাজ্যের বাম শরিক সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি 'বড়দা' সিপিএমকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যেতে আগ্রহী নয়। বরং তারা বৃহত্তর বাম ঐক্যের পক্ষে। বামপন্থী সমস্ত দলকে নিয়ে জোট গঠন হলে, তাতে সায় আছে তাদের। কিন্তু কোনওমতেই কংগ্রেসের সঙ্গে তারা যেতে রাজি নয়। এমনকী সিপিএম কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে গেলে, বাম শরিকরা সিপিএমের সঙ্গ ত্যাগ করতেও পিছপা হবে না।
বাম শরিকরা যে অবস্থান নিয়েছে, তাতে এ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট গঠনেই তা সহায়তা করবে। কেননা কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপাকে এক ঘাটে আনতে পেরেছে ঠিকই, কিন্তু বাংলায় তৃণমূল ও সিপিএমকে এক জায়গায় আনা অত সহজ নয়। বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৃণমূল-কংগ্রেস-সিপিএমকে নিয়ে সমীকরণ একপ্রকার অসম্ভব।
সেক্ষেত্র কংগ্রেসকে দুটি দলের মধ্যে একটা দলকে বেছে নিতে হবে। একথা অনস্বীকার্য যে তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়ে চললেও লোকসভায় অধিক লাভ হবে কংগ্রেসের। সেক্ষেত্রে গলার কাঁটা হবে সিপিএম। আর বাম শরিকরা যদি তাদের 'বড়দা'কে চাপ দিতে থাকে, এবং সেই চাপের ফলে যদি সিপিএম কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে না আসে, তাতে আখেরে সুবিধাই হবে কংগ্রেস ও তৃণমূলের।
প্রাক নির্বাচনী জোট না হলেও নির্বাচনোত্তর জোট হতে পারে সিপিএম বা বামেদের সঙ্গে। এরই মধ্যে দিল্লিতে সিপিএম ও তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রীকে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে দেখা গিয়েছে। তবে একইসঙ্গে প্রশ্নও উঠেছে যে, দিল্লিতে বিজেপির বিরুদ্ধে যেভাবে একযোগে আন্দোলনে সামিল হতে পেরেছে তৃণমূল ও সিপিএম, এ রাজ্যে কি তা সম্ভব? বিশেষ করে ভোট ময়দানে এই সমীকরণ কি হিট করবে?
সব মিলিয়ে বাম শরিকদের অবস্থান তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে দেশে বিজেপি বিরোধী ঐক্য গঠনের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে এ রাজ্যের ব্যাপারে ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই ও আরএসপির অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এই সপ্তাহের মধ্যেই বামফ্রন্টের তিন শরিক সিপিএমকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে, কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ব্যাপারে কী তাদের অবস্থান। তবে আপাতত স্পষ্ট জানিয়েই দেওয়া হয়েছে, সিপিএম যেন বামফ্রন্টের পরিবেশ নষ্ট না করে।