‘প্রেমিকে’র সঙ্গে ‘গল্পে’ মজেন স্ত্রী, স্বামীকে শুতে হয় অন্য ঘরে! পরকীয়ার বচসাতেই কি খুন
টানা ছ-দিন জেরার পর অবশেষে অনিন্দিতা স্বীকার করে নিল স্বামীকে খুন করার কথা। আইনজীবী রজত দে-র মৃত্যু-রহস্য উদ্ঘাটন হল স্ত্রী অনিন্দিতাকে ম্যারাথন জেরার পর।
টানা ছ-দিন জেরার পর অবশেষে অনিন্দিতা স্বীকার করে নিল স্বামীকে খুন করার কথা। আইনজীবী রজত দে-র মৃত্যু-রহস্য উদ্ঘাটন হল স্ত্রী অনিন্দিতাকে ম্যারাথন জেরার পর। অনিন্দিতা স্বীকার করেছেন, এই হত্যাকাণ্ডে তিনি জড়িত। স্বীকারোক্তির পরই শনিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
কিন্তু কেন এই হত্যা?
তদন্তকারীদের তিনি জানিয়েছেন, ফোন করা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া চলাকালীন রজত বারবার আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছিলেন। চাদর দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন রজত। তখন অনিন্দিতা বলে, তোমার যদি মরার এতই শখ, তোমার মৃত্যু আমার হাতেই হবে। এরপরই মোবাইলের চার্জারের তার গলায় জড়িয়ে প্যাঁচ দেওয়া হয়। তার জেরেই মৃত্যু হল রজতের।
অনিন্দিতার কথায় পরকীয়ার ইঙ্গিত
পুলিশ অনিন্দিতার এই তত্ত্ব পুরোপুরি ঠিক বলে মনে করছে না। সেই কারণেই অনিন্দিতাকে আরও জেরা করার প্রয়োজন বলে মনে করছে পুলিশ। রবিবার তাঁকে আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়া হবে। পুলিশ এখন জানার চেষ্টা চালাচ্ছে, রজত-খুনে অন্য কেউ জড়িয়ে আছে কি না।
অনিন্দিতার সঙ্গে ‘সখ্যতা’ কার
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, কোনও এক ব্যক্তির সঙ্গে অনিন্দিতার সখ্যতা গড়ে উঠেছিল সম্প্রতি। তাঁকে ফোন করা নিয়েই অন্য ঘরে শুতে যেতে বলেছিলেন রজতকে। তা নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলার সূত্রপাত। পুলিশ জানার চেষ্টা চালাচ্ছে ওই ব্যক্তি কে। ঘটনার সময় ওই ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন কি না, তাও খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে পুলিশ।
তৃতীয় ব্যক্তিকে নিয়েই দ্বন্দ্ব
পুলিশের কাছে একটা জিনিস পরিষ্কার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তৃতীয় কেউ এসে পড়াতেই মাঝেমধ্যেই বচসা লেগে থাকত। রজত খুনের তিনদিন আগে থেকেই তর্কাতর্কি, ঝামেলা চলছে বলে জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে ঘটনার দিন রাতে তাঁরা কোথায় গিয়েছিল, তাও জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
বয়ান বদলেই বিপাকে অনিন্দিতা
এর আগে পুলিশের দীর্ঘ জেরায় বারবার বয়ান বদল করে গিয়েছেন অনিন্দিতা। প্রথমে তিনি বলেন, রজতের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তারপর বলেন, রজত আত্মহত্যা করেছে। গলায় চাদর জড়িয়ে সিলিং ফ্যানে আটকে আত্মহত্যার চেষ্টা করে রজত। অনিন্দিতার কথায় নানা অসঙ্গতি দেখে শনিবার সন্ধ্যায় তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে ম্যারাথনম জেরার মুখে ভেঙে পড়েন অনিন্দিতা।
সোশাল মিডিয়া থেকে উধাও তথ্য
এরই মধ্যে অনিন্দিতার ফোলেন কললিস্ট খতিয়ে দেখা গিয়েছে, সোশাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে বহু তথ্য উধাও। মোবাইল থেকেও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক কিছু। পুলিশ অনিন্দিতার মোবাইল ও ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে। কেন এসব উড়িয়ে দেওয়া হল, তার স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি অনিন্দিতা।
অনিন্দিতার পরকীয়া সম্পর্ক
এ থেকেও অনিন্দিতার পরকীয়া সম্পর্কের আভাস মিলতে শুরু করে। সম্প্রতি এক বন্ধুর সঙ্গে ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতেন অনিন্দিতা। তা নিয়েই সন্দেহ দানা বাঁধে। আর রজত-অনিন্দিতার সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়। ঘটনার দিনও তৃতীয় ব্যক্তিকে নিয়ে গন্ডগোল বাধে উভয়ের। তখনই আত্মহত্যার হুমকি এবং খুনের ঘটনা।