বায়ুদূষণের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীর পরিমাণও বাড়ছে শহরের হাসপাতাল গুলিতে
সম্প্রতি প্রকাশিত বায়ুদূষণের বাড়বাড়ন্তের ক্ষেত্রে ভারতের মেট্রো শহরগুলির মধ্যে দিল্লির পরে এবার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে কলকাতা। ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণের জেরে কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও চওড়া হয়েছে পরিবেশবিদদের। দীপাবলির পর শহরের একাধিক জায়গায় বায়ুমান সূচকে ব্যাপক পারাপতন লক্ষ্য করা যায়।
একই সাথে অন্যদিকে কলকাতার বায়ু মণ্ডলেও বিষাক্ত কার্সিনোজেনিক বাহকের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। বায়ু দূষণের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় এবার তিলোত্তমায় দ্রুত গতিতে বাড়ছে মানুষের শ্বাস কষ্টজনিত নানা সমস্যাও।
গত সা থেকেই শহরের সরকারি বেসরকারি প্রায় সমস্ত চিকিৎসাকেন্দ্রে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীর সংখ্যা। সূত্রের খবর, কমপক্ষে তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে কয়েক মাসে প্রায় শ্বাসকষ্ট-জনিত সমস্যায় রোগী ভর্তির পরিমাণ প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পালমোনারি ডিসঅর্ডার (সিওপিডি), শুকনো কাশি এবং হাঁপানি ও ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তার মধ্যে সবথেকে বেশি।
দীপাবলির পর কলকাতার মানুষের হাঁপানির পরিমাণও বেড়েছে
একাধিক চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের মতে বিগত বছর গুলির পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে দেখা যাবে কলকাতার বাসিন্দাদের শ্বাসকষ্ট-জনিত রোগের পরিমাণ আগামী জানুয়ারিতে গত তিন বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। ২০১৬ সালের পর থেকে কলকাতার হাসপাতালগুলি দীপাবলি পরবর্তী সময়ে হাঁপানি এবং সিওপিডি-তে আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাড়ছে বিষাক্ত বায়ুকণা পিএম ২.৫-র পরিমাণ
ফোর্টিস হাসপাতালের পালমোনোলজিস্ট এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ রাজা ধর এই প্রসঙ্গে বলেন, “ বায়ুমান একবার দুর্বল হয়ে পড়লে ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাতেও ব্যাপক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। বাতাসে ভাসমান বিষাক্ত বায়ুকণা পিএম ২.৫-র পরিমাণ বেড়ে গেলে তা মানব শরীরের জন্য ডেকে আনে মারাত্মক কিছু শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ। ” শীতকাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই জাতীয় রোগ গুলির প্রকোপ থেকে কিছুতেই রেহাই পাওয়া যায় না বলেও জানান তিনি।
চলতি বছরেই শুধুমাত্র শরতের সকালে তিলোত্তমার একাধিক জায়গায় অতিমাত্রায় এই দূষিত বায়ুর পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ার ঘটনাও লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে বাতাসে পিএম ২.৫-এর মাত্রা খুবই খারাপ হওয়ায় চিন্তার ভাঁজ আরও চওড়া হয়েছে পরিবেশ কর্মীদের কপালে।