ধর্মতলায় সমাবেশে অবরুদ্ধ কলকাতা, নাকাল আম আদমি
আরও পড়ুন: সিপিএম নয়, ধর্মতলার সমাবেশে 'দিদি' ধুনলেন বিজেপিকে
খড়দহ থেকে রোজ শিয়ালদহে যাতায়াত করেন সুজিত ভৌমিক। ক্ষুব্ধ সুজিতবাবু বলেন, "সপ্তাহের প্রথম দিন এ সবের কোনও মানে হয়? আমি সকাল সাড়ে ন'টা থেকে স্টেশনে দাঁড়িয়ে। চারটে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছি। শুনলাম, মিছিলের ভিড় এটা।" ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের স্ট্র্যান্ড রোড শাখায় কাজ করেন গড়িয়ার সঞ্জিত মণ্ডল। তিনি বলেন, "বাস নেই দাদা। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একটা মিনিবাস পেলাম। কিন্তু পার্ক স্ট্রিট থেকে সে নড়তেই চায় না। ভিড়ের চাপে গরমে শরীর খারাপ লাগছিল। নামতে গিয়েও যুদ্ধ। ওখান থেকে হাঁটতে হাঁটতে অফিস যেতে হয়েছে। অফিস গিয়ে বুঝলাম, পকেট থেকে মানিব্যাগটা কেউ তুলে নিয়েছে। কী ঝামেলা!" হাওড়া ডোমজুড় থেকে সকালবেলা অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে আসছিলেন মুনির মণ্ডল ও সুফিয়া খাতুন। হাওড়া ব্রিজ পেরিয়ে বড়বাজার ফ্লাইওভারে উঠতেই টের পেলেন কল্লোলিনী কলকাতার মহিমা! যানজট, ভিড় ঠেলে যখন পিজি হাসপাতালে পৌঁছলেন, দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে।
কলকাতার ট্যাক্সিচালকদের কারও কাছে দিনটা ভালো, কারও কাছে খারাপ। সমাবেশের জন্য অধিকাংশ বাস তুলে নিয়েছিল শাসক দল। অটোও অমিল। তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত অটো ইউনিয়নগুলির ডাকে সবাই গিয়েছে ধর্মতলার সমাবেশে। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন রুটে, যেমন বালিগঞ্জ-গড়িয়া, যাদবপুর-বেহালা, রুবি-টালিগঞ্জ ইত্যাদিতে ট্যাক্সিওয়ালার ভালোই দাঁও মেরেছে। মিটারে গেলেও দিতে হয়েছে ভাড়ার ওপর অতিরিক্ত ৮০-১০০ টাকা। কেউ আবার মিটারে না গিয়ে যা খুশি দর হেঁকেছে। ধর্মতলা, চাঁদনি চক, শ্যামবাজার, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, বেলেঘাটা ইত্যাদি চত্বরের ট্যাক্সিচালকরা তো গাড়ি নিয়ে এগোতেই পারেনি। ফলে সওদা হয়নি তেমন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো এটা বিলক্ষণ বুঝেছেন। তাই এদিনের সমাবেশের শেষে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছেন, "আজ সাধারণ মানুষের অনেক অসুবিধা করলাম। তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।"