কলকাতা পুরসভা নির্বাচন ২০২১: অভিষেকের পথেই ব্যবস্থা! দুই হেভিওয়েট-সহ বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থীদের হুঁশিয়ারি
কলকাতা পুরসভা নির্বাচন ২০২১: অভিষেকের পথেই ব্যবস্থা! দুই হেভিওয়েট-সহ বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থীদের হুঁশিয়ারি
সাসপেনশনের খাঁড়া নেমে আসতে চলেছে কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে (Kolkata municipal elction 2021) বিক্ষুব্ধ তৃণমূল (Trinamool Congress) প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। এঁদের একজন হলেন প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায় (Tanima Chatterjee) এবং একটা সময়ে কলকাতা পুরসভার চেয়ারম্যান থাকা সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sacchidananda Banerjee)। দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস কুমার দলের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো নির্দলদের বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
টিকিট না পেয়ে দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী
কেউ দীর্ঘদিন কাউন্সিলর আবার কেউ দলের খুব কাছের। কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে এবার তৃণমূল অনেকেই টিকিট দেয়নি। যার জেরেই বিক্ষুব্ধ। এই তালিকায় যেমন ছিলেন ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের রতন মালাকার। ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। মনোনয়ন পেশ করার পরেও অবশ্য রতন মালাকার তা প্রত্যাহার করে নেন। অন্যদিকে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রথম তালিকায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী করা হয়। তিনি একদিন প্রচারও করেন। তারপরেই তাঁর কাথ ছেতে প্রতীক চেয়ে প্রার্থী করা হয় বিদায়ী কো-অর্ডিনেটর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়কে। আবার ৭২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন পেশ করেন ২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত পুরসভার চেয়ারম্যান থাকা সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, শুধু এই দুই ওয়ার্ডই নয়, আরও বেশ কিছু ওয়ার্ডে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে পড়েছেন।
মনোনয়ম প্রত্যাহার করেননি তনিমা, সচ্চিদানন্দ
গত শুক্রবার রতন মালাকার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেও, তা করেননি ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের তনিমা চট্টোপাধ্যায় এবং ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা দুজনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছএন জোড়া পাতা প্রতীকে। জানা গিয়েছে, তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূলের তরফ থেকে কোনও রকমের অনুরেআধ করা না হলেও, সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বোঝাতে কথা বলেছিলেন, প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতি দেবাশিস কুমার। এছাড়াও সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বোঝানোর কাজে নামানো হয়েছিল ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী তথা তাঁরই জামাই অরূপ চক্রবর্তীকে। যদিও কারও কথাই শুনতে রাজি হননি সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান বলছেন, তিনি দলের সদস্য নন, তাহলে কীভাবে দল ব্যবস্থা নেবে। অন্যদিকে তনিমা চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি দলের বিরুদ্ধে নন, প্রার্থীর বিরুদ্ধে।
বহিষ্কারে হুঁশিয়ারি
দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, তাঁর অধীনে ৮৪ টি ওয়ার্ডের মধ্যে যেখানে তৃণমূলের সরকারি প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলেরই যাঁরা দাঁড়িয়েছেন কাউকেই ছাড়া হবে না দলের সংবিধান মেনে সবাইকেই বহিষ্কার করা হবে ববলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
প্রাথীদের বৈঠকে অভিষেক হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন
গত শনিবার ১৪৪ জন প্রার্থীকে নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেছিলেন। সেখানেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, দলে যাঁরা টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়েছেন, তাঁরা একসঙ্গে লড়াই না করলে বহিষ্কার করা হতে পারে। এবার সেই পথেই হাঁটতে চলেছেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি।