তৃণমূলে ফের কোণঠাসা শোভন কোন পথে! রত্না-ঝড়ে টলমল মেয়রের রাজনৈতিক ভিত
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের সঙ্গে দূরত্ব খানিকটা কমে এলেও, নির্বাচন শেষ হতেই ফের দূরত্ব বেড়ে গেল শোভনের।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের সঙ্গে দূরত্ব খানিকটা কমে এলেও, নির্বাচন শেষ হতেই ফের দূরত্ব বেড়ে গেল শোভনের। ফের সেই পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর এই সময়েই মহেশতলা উপ নির্বাচন তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্বকে আরও কমিয়ে দিয়েছে।
খাতায় কলমে এখনও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল সভাপতি তিনি। অথচ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার গুরুত্বপূর্ণ উপনির্বাচনে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই। মহেশতলায় প্রার্থী তাঁর শ্বশুর দুলাল দাস। আর সেখানে সামনের সারিতে থেকে বাবার হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন মেয়র-পত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়। আবার তিনিই সারা রাত মেয়রের গোলপার্কের বাড়ির সামনে ধরনায় বসে শোভনকে দশ গোল খাইয়ে গিয়েছেন।
শাঁখের করাতে পড়েছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। স্রীড় রত্নার সঙ্গে বনিবনা নেই। বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। তার জেরে একের পর এক গোল খেয়ে চলেছেন মেয়র। তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যতে ফের কালো মেঘ জমতে শুরু করেছে। এবং ঘনিষ্ঠমহলে তিনি সেই সমস্যার কথা ব্যক্তও করে ফেলেছেন। তাঁর সাংসারিক জীবনে যে ঝড় উঠেছে, সেই ঝড়ে তছনছ হয়ে যেতে বসেছে তিলে তিলে গড়ে তোলা রাজনৈতিক ভিত।
একদিকে মেয়র, অন্যদিকে মন্ত্রী, তারপর আবার তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত তাঁর মাথার উপরে ছিল। এখনও আছে। পঞ্চায়েতে নির্বাচনের আগে সেই হাত সরে যেতে বসেছিল, তা অনেক কষ্টে সমালে নিয়েছিলেন মেয়র। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ফের ঝড় উঠেছে, তিনি এখন কী করবেন, তাঁর গুরুত্ব বজায় রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে পড়েছে।
তবে এটা ঠিক যে শোভনের গুরুত্ব কমেছে দলে। পঞ্চায়েতেও সেভাবে দায়িত্ব পাননি। আবার উপনির্বাচনেও তিনি নেই। বরং মেয়র-পত্নী রত্নাকে দেখা যাচ্ছে ফ্রন্টফুটে। রত্নার মা কস্তুরী দাসের মৃত্যুতে খালি হওয়া আসনে ভোট। সেই আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রত্নার বাবা দুলাল দাস। তিনি আবার মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যানও।
প্রচারে বেরিয়ে রত্না ফলাও করে বলছেন তাঁর বাবা দুলাল দাস উন্নয়নের জেরেই জিতবেন। সেখানে দলের সভাপতি হয়েও হালে পানি পাচ্ছেন না মেয়র। বরং তাঁর ঘনিষ্ঠমহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, তাঁকে কোণঠাসা করতে দলেরই একটা অংশ সক্রিয়। তাঁদের মদতেই রত্না এত শক্তি পাচ্ছে।