দুর্গাপুজোর অনুদান নিয়ে হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য সরকার
দুর্গাপুজোর অনুদান নিয়ে হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য সরকার
দুর্গাপুজোয় রাজ্যের পুজো কমিটিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। এদিন এই মামলার শুনানি ছিল হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই শুনানিতেই রাজ্যের উদ্দেশ্যে একাধিক প্রশ্ন তোলে আদালত।
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, অনুদান কি শুধু দুর্গাপুজোতেই দেয় সরকার? নাকি অন্য উৎসবগুলিতেও দেওয়া হয়? ক্লাবগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে, সরকারের তরফে জানানো হয়, যে এবারের অনুদান দর্শনার্থীদের মাস্ক-স্যানিটাইজার বিতরণ করার জন্য দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি কী কী সুরক্ষা বিধি নেওয়া হয়েছে, তাও জানতে চান বিচারপতি।
আদালত জানিয়েছে, 'দুর্গাপুজো নিয়ে আমরা গর্বিত। তাই বলে কি যেভাবে ইচ্ছা টাকা দেওয়া যায়? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কি এই ভেদাভেদ করা যায়?' সরকারের কাছে আদালতের প্রশ্ন, 'যেখানে সংক্রমণের আশঙ্কায় স্কুল-কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ, সেখানে পুজোর অনুমতি সার্বজনীনভাবে কিভাবে দেওয়া হল।'
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, এইভাবে টাকা দেওয়ার চেয়ে যদি রাজ্য সরকার মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিনে দিত, তাহলে কি সরকারের খরচ কম হত না। এইভাবে বিষয়টি ভাবা হয়নি কেন।
পাশাপাশি, বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের তরফ থেকে কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল না। একইসঙ্গে বিচারপতিরা জানান, পুজোর ভিড় কমাতে বা ভিড় সামলাতে পুলিশ-প্রশাসন কি কোনও পদক্ষেপ করেছে। কোনও পরিকল্পনা বা ব্লু-প্রিন্ট কি করা হয়েছে। করা থাকলে তা জমা দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা।
শুধু তাই নয়, সরকারি আইনজীবীদের বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এইভাবে সরকার কি সব অনুষ্ঠানেই আর্থিক সহায়তা করে। কারণ, দেশের সংবিধান অনুযায়ী কোনও একটি অনুষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা দিতে পারে না। সরকার কি সেটাই করেছে। এই সব উত্তর আগামিকাল সরকারি আইনজীবীদের কাছে জানতে চেয়েছেন বিচারপতিরা।