লোকসভা ভোটের আগে কলকাতা হাইকোর্টের তাৎপর্যপূর্ণ রায়, বিশ বাঁও জলে নির্বাচন কমিশন
১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার তালিকার সংশোধনের কাজ নিয়োগের নোটিফিকেশনকে বাতিল বলে ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায়ে এখন কার্যত বিশবাঁও জলে নির্বাচন কমিশন।
১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার তালিকার সংশোধনের কাজে নিয়োগের নোটিফিকেশনকে বাতিল বলে ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায়ে এখন কার্যত বিশবাঁও জলে নির্বাচন কমিশন। ভোটার তালিকার সংশোধনের কাজে শিক্ষকদের নিয়োগের বিষয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের পক্ষে কলকাতা হাইকোর্টে এই নিয়োগের বিরোধিতা করে মামলা করা হয়েছিল। তাতেই শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিকেই বাতিল বলে ঘোষণা করেছে।
১ সেপ্টম্বর থেকে কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হয়। এই কাজে নব্বই শতাংশেরও বেশি শিক্ষককে নিয়োগ করে নির্বাচন কমিশন। ডিও, বিএলও এবং সুপারভাইসার-এর দায়িত্ব অপর্ণ করা হয় এঁদের। যে সব স্কুল সিঙ্গল টিচারে চলে তাতে তালা ঝুলিয়ে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে নামানো হয় শিক্ষকদের। তারপর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বলে দেওয়া হয় টানা কাজ করার। টিচিং-ডে-র বাইরে কীভাবে কাজ হবে সে নিয়েও নির্বাচন কমিশন তাঁদের স্পষ্ট কোনও ধারণা দেয়নি বলে বহু শিক্ষক অভিযোগ করেন। ভোটার তালিকা সংশোধনে নিযুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে পরিস্থিতি এতটাই জটিল আকার নেয়, যে বহুস্থানেই নির্বাচন আধিকারিকদের সঙ্গে শিক্ষকদের গণ্ডগোল হয়ে যায়।
শেষমেশ কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের এক নির্দেশিকা এবং সুপ্রিম কোর্টের এক নির্দেশিকাকে হাতিয়ার করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। ১৯ সেপ্টেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছিলেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। কিন্তু, পরে তিনি রায় ঘোষণার জন্য ২৮ সেপ্টম্বর ধার্য করেন।
এদিন রায়দানের সময় বিচারপতি পরিষ্কার জানিয়ে দেন কোনওভাবেই শিক্ষকদের স্কুল-টাইমে ব্যবহার করা যাবে না। তাঁদেরকে স্কুল-টাইমের বাইরে ব্যবহার করতে হবে। সুতরাং ১ সেপ্টম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত কাজের জন্য যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল তাকে বাতিল বলে ঘোষণা করে দেন বিচারপতি। এই বিজ্ঞপ্তি বাতিল হওয়ার ফলে নির্বাচন কমিশনকে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। সেইসঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কীভাবে কাজের জন্য অর্থ মিলবে তাও ওই নিয়োগপত্রে পরিষ্কার করে জানাতে হবে।
জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা। কারণ ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচন। সংশোধিত ভোটার তালিকা বের হলেই হবে না। তার ত্রুটি-বিচ্যুতি কিছু থাকলে তা ঠিক করার জন্য আরও কিছু দিন সময় লাগবে। সবমিলিয়ে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের আগে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু, কলকাতা হাইকোর্টের এদিনের রায়ে এই কাজে আরও বিলম্ব তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে নির্বাচন কমিশন।