ভাগাড় কাণ্ড, এবার কাটা মুরগিতে কোপ কলকাতা পুরসভার
ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে কলকাতার বাজারে কাটা মুরগির মাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলো কলকাতা পুরসভা।
ভাগাড়-কাণ্ডের জের! কলকাতার বাজারে আর বিক্রি করা যাবে না কাটা মুরগির মাংস। এই মর্মে নোটিশ জারি করলো কলকাতা পুরসভা। বুধবার কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) আমিরুদ্দিন ববি জানান, কলকাতা পুরসভার হাতে এখন ৪৬ টি বাজার রয়েছে। সবকটি বাজারেই এই নিয়ম বলবৎ হল, বলে জানিয়েছেন আমিরুদ্দিন।
এদিন মেয়র পারিষদ (বাজার) বলেন, গত কয়েকদিনে ভাগাড় কান্ডের জেরে জনমানসে সংশয়-সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। অনেকেই মাংস খাওয়া এড়িয়ে যাচ্ছেন। বাজারে বাজারে কাটা মুরগির মাংস বিক্রি নিয়ে ক্রেতাদের মনে জাগছে প্রশ্ন। বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ আসছে অবিক্রিত কাটা মুরগী মাংস ফ্রিজারে রেখে পরে তা টাটকা মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ভাগাড়-কাণ্ডের পর পুরসভা আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। সাধারণ মানুষের উদ্বেগ দূর করতেই কাটা মুরগির মাংসে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এরপর কলকাতা পুরসভার বাজারে যদি কোনও ক্রেতার ৭০০ বা ৮০০ গ্রাম মাংসের দরকার হয়, তাহলেও তাঁকে গোটা মুরগিই কিনতে হবে।
গতকালই ভাগাড়-কাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্য সচিব মলয় দে-র নেতৃত্বে ৮ সদস্যের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'মানুষ তো এখন ভয়ে মাংস খাওয়া বন্ধই করে দিয়েছে! এই ঘটনা শুধু বাংলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ খুব ভাল কাজ করেছে। যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তারা অনেকেই ধরা পড়েছে। মুরগি নিয়েও কিছুদিন আগে সমস্যা হয়েছিল। তারও সমাধান করা গেছে। এবার হাইপাওয়ার কমিটি গড়া হল, আশা করা যায় এই সমস্যার সমাধান করা যাবে।' আগামী ১০ মে বৈঠক করবে ওই কমিটি।
ভাগাড় থেকে মৃত পশুর মাংস বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় পাচার হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এর পাশাপাশি জানা যায় মরা মুরগীর মাংসও, টাটকা মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করা হত বিভিন্ন জায়গায়। ওই ঘটনায় উঠে আসে কৌসর আলি ঢালি নামে এক মুরগি ব্যবসায়ীর নাম। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই সে ফেরার হয়ে যায়। পুলিশ এখনও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ভাগাড় কাণ্ডে অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। মৃত পশুর দেহ আসার সঙ্গে সঙ্গে দাহ করতে কিছু ভাগাড়ে ইলেক্ট্রিক চুল্লি বসানো হয়েছে। নজরদারি করতে লাগানো হয়েছে সিসি টিভি।