
দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণীর মায়ের সঙ্গেই তৈরি হয়েছিল এই মূর্তি, দেবীর এখানে নিস্তারিণী
উত্তর কলকাতার হেদুয়ার রামদুলাল সরকার স্ট্রিটেচন্দ্র দে অ্যান্ড নকুড় চন্দ্র নন্দী তে মিষ্টি কিনে চলে আসা যায় নিস্তারিণী দেবী কালী মন্দিরে । উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত, দক্ষিণমুখী মন্দিরটি দালান শৈলীর। গর্ভগৃহের সামনে অলিন্দ।

কালীর বিগ্রহ
গর্ভগৃহে কষ্টিপাথরে নির্মিত 'নিস্তারিণী' কালীর বিগ্রহ শ্বেতপাথরের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত ও নিত্য পূজিত। মন্দিরটি ১২৫৭ বঙ্গাব্দে ( ১৮৫০ খ্রীষ্টাব্দে ) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা করেন শিবচন্দ্র গোহো। মন্দিরের সামনের দেওয়ালে একটি প্রতিষ্ঠাফলক আছে। মন্দিরের বাঁ দিকে একটি আটচালা শিবমন্দির আছে। গর্ভগৃহে 'শান্তিনাথ' নামক কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ নিত্য পূজিত।

কে তৈরি করেন বিগ্রহ?
দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণীর বিগ্রহ তৈরি করেছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার অন্তর্গত দাঁইহাটের শিল্পী নবীন ভাস্কর। সেই সময় তিনি তিনটি মূর্তি তৈরি করেছিলেন। প্রথম যে মূর্তিটি তিনি তৈরি করেন তা 'নিস্তারিণী' নামে এই মন্দিরে ১২৫৭ বঙ্গাব্দে ( ১৮৫০ খ্রীষ্টাব্দে ) প্রতিষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় মূর্তিটি 'ব্রহ্মময়ী' কালী রূপে প্রতিষ্ঠিত হয় বরানগরের প্রামাণিক কালীবাড়িতে ১২৫৯ বঙ্গাব্দে ( ১৮৫৩ খ্রীষ্টাব্দে )।

কাদের এই মন্দির?
প্রতিষ্ঠা করেন রামগোপাল দে ও দুর্গাপ্রসাদ দে। সম্পর্কে তাঁরা ছিলেন কাকা-ভাইপো। তৃতীয় মূর্তিটি 'ভবতারিণী' নামে দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে ১৮৫৫ খ্রীষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেকে বলেন, প্রথম দুটি মূর্তি দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের গর্ভগৃহের সঙ্গে মানানসই না হওয়ার জন্য রানি রাসমণি গ্রহণ করেন নি।

কালীর রকম
পুরাণ ও তন্ত্র সাহিত্যে কালীর বিভিন্ন রূপের বর্ণনা পাওয়া যায়। এগুলি হল-দক্ষিণাকালী(শ্যামা),মহাকালী,শ্মশানকালী গুহ্যকালী, ভদ্রকালী, সিদ্ধকালী, আদ্যাকালী, চামুন্ডাকালী। আবার বিভিন্ন মন্দিরে "ব্রহ্মময়ী", "ভবতারিণী", "আনন্দময়ী", "করুণাময়ী" ইত্যাদি নামে কালীপ্রতিমা পূজা করা হয়। এই সব রূপের মধ্যে দক্ষিণাকালীর বিগ্রহই সর্বাধিক পরিচিত ও পূজিত। দক্ষিণাকালী চতুর্ভূজা। তার চার হাতে খড়্গ, অসুরের ছিন্ন মুণ্ড, বর ও অভয়মুদ্রা রয়েছে। তার গলায় রয়েছে নরমুণ্ডের মালা। দেবীর গায়ের রং কালো। মাথায় আলুলায়িত চুল এবং তিনি শিবের বুকে ডান পা আগে রেখে দণ্ডায়মান।
ব্রহ্মযামল নামক তন্ত্রগ্রন্থের মতে, কালী বঙ্গদেশের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দীপান্বিতা কালীপূজা বিশেষ জাঁকজমক সহকারে পালিত হয়। এছাড়া মাঘ মাসের চতুর্দশী তিথিতে রটন্তী কালীপূজা ও জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণী কালীপূজাও বিশেষ জনপ্রিয়। এছাড়াও ভাদ্র ও পৌষ মাসের অমাবস্যায় কালী পুজো বিশেষ জনপ্রিয়। অনেক জায়গায় প্রতি অমাবস্যা এবং প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবারে কালীপূজা হয়ে থাকে। ভারত, বাংলাদেশে অনেক কালী মন্দিরের দেখা পাওয়া যায়।
ধনতেরসের দিন শুধু সোনা–রূপো নয়, এই জিনিসগুলি কেনাও খুব শুভ