টেক্কা বাঘা মন্ত্রীদের, দ্বিতীয় দফায় বিধায়ক তহবিল খরচে বহু যোজন এগিয়ে জ্যোতিপ্রিয়-শোভন
দ্বিতীয় তৃণমূল জমানায় সেরা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। টেক্কা দিলেন বাঘা বাঘা মন্ত্রীদেরও। বিধায়ক তহবিল খরচের নিরিখে প্রথম ছ’মাসে জ্যোতিপ্রিয়-র ঘাড়েই নিঃশ্বাস ফেলছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
কলকাতা,১৬ মার্চ : দ্বিতীয় তৃণমূল জমানায় সেরা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। টেক্কা দিলেন বাঘা বাঘা মন্ত্রীদেরও। বিধায়ক তহবিল খরচের নিরিখে প্রথম ছ'মাসে জ্যোতিপ্রিয়-র ঘাড়েই নিঃশ্বাস ফেলছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি গত ছ'মাসে রিলিজ হওয়া অর্থের ৪৯ শতাংশের বেশি টাকা খরচ করে ফেলেছেন। আর প্রথম ছ'মাসে রিলিজ হওয়া টাকার ৫০ শতাংশ খরচ করে ফেলেছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ রাজ্যের বহু মন্ত্রী একাধিক প্রকল্পের প্রস্তাব দিলেও রিলিজ হওয়া অর্থের এক কপর্দকও খরচ করতে পারেননি তাঁরা। সেখানে দাঁড়িয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় হাত খুলে খরচ করেছেন। এত কম সময়ে কাজের নিরিখে দুই মন্ত্রী এখন শেয়ানে শেয়ানে লড়াই চালাচ্ছেন এক নম্বর স্থান দখলের জন্য।
বিধানসভার বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি জানুয়ারি মাসে যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে- জেলাওয়াড়ি হিসেবে পশ্চিম মেদিনীপুর রয়েছে এক নম্বরে। এই জেলায় সবথেকে বেশি টাকা খরচ হয়েছে উন্নয়নে। গত ছ'মাসে রিলিজ হওয়া অর্থের প্রায় ৪৩ শতাংশ খরচ করে এই জেলার বিধায়করা এক নম্বরে রয়েছেন।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন নদিয়ার বিধায়করা। দার্জিলিং জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার কিন্তু রিলিজ হওয়া অর্থের এক শতাংশও খরচ করে উঠতে পারেনি। কলকাতার কিছু বিধায়ক নিজেদের তহবিলের টাকা দ্রুত খরচ করতে পারলেও সার্বিকভাবে রিলিজ হওয়া অর্থের মাত্র ৮.৫০ শতাংশ অর্থ খরচ করতে পেরেছেন। শাসকদলের কাছে অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছেন শহরের বিধায়করাই।
বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হয়। কোনও বিধায়ক এই টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স কেনার প্রস্তাব দেন, কোনও বিধায়ক আবার সড়ক বা সেতু সংস্কারের প্রকল্প দেন। কেউ আবার এলাকার স্কুল-কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প তৈরি করেন। ফলে একই সময়সীমায় বিভিন্ন প্রকল্পের রূপায়ণ হয় না। বর্তমানে বিধায়করা বছরে ৬০ লক্ষ টাকা পান এলাকার উন্নয়নের কাজ করতে।
তৃণমূল
জমানায়
প্রথম
ছ'মাসে
যে
৩০
লক্ষ
টাকা
বিধায়করা
হাতে
পেয়েছেন,
তার
৫০
শতাংশ
খরচ
হয়েছে
এবং
১০০
শতাংশ
অর্থ
রিলিজ
করতে
পেরেছেন
খাদ্যমন্ত্রী
জ্যোতিপ্রিয়
মল্লিক।
এত
দ্রুত
কীভাবে
তহবিলের
টাকা
খরচ
করতে
পারলেন?
জ্যোতিপ্রিয়র
উত্তর,
হাবরা
পুরসভায়
একটা
জলের
ট্যাঙ্ক
তৈরি
করেছি।
হাবরার
প্রতিটি
ওয়ার্ডে
জঞ্জাল
তোলার
জন্য
৪৮টি
ভ্যান
দিয়েছি।
জঞ্জাল
তোলার
জন্য
৬টি
হাইড্রলিক
গাড়ি
দিয়েছি।'
পরবর্তী
ছ'মাসে
চারটি
শ্মশান
এবং
চারটি
চিলড্রেন্স
পার্ক
তৈরি
করার
পরিকল্পনা
রয়েছে।
জ্যোতিপ্রিয়র খুব কাছেই রয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বেহালা পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক মোট ১১টি প্রকল্পের সুপারিশ করেছেন, যার মোট প্রকল্প মূল্য ৪২ লক্ষ ৬০ হাজার। এর মধ্যে ১৪ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকার কাজ শেষ করে ফেলেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
টালিগঞ্জের বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস ৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের সুপারিশ করেছেন, যার মধ্যে সাতটি অনুমোদিত হয়েছে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ৫টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। পারফরম্যান্স খারাপ নয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজারও। তাঁর ১৯টি প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ায় ১৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার কাজ হয়েছে। শতাংশের হিসেবে ছ'মাসের মধ্যে ৪৯.৩৩ শতাংশ অর্থ খরচ করেছেন তিনি।