দিদি একা সামলাতে পারছেন না! ভূপেন হাজারিকার গান মনে করালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপেন হাজারিকার একটা গান রয়েছে না- "হাজার টাকার বাগান খাইল, পাঁচ সিকার ছাগলে"। তবে কি এটাই হবে? রাজ্যটা কি এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসহায়তা ভূপেন হাজারিকার গান দিয়ে বোঝালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এজলাসে বসে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বললেন, দিদি একা সামলাতে পারছেন না। এমনকী রাজ্য নিয়ে আশঙ্কাও প্রকাশ করলেন তিনি।
বিচারপতি বলেন, ভূপেন হাজারিকার একটা গান রয়েছে না- "হাজার টাকার বাগান খাইল, পাঁচ সিকার ছাগলে"। তবে কি এটাই হবে? রাজ্যটা কি এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে? বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন এমনই বিস্ময় ও প্রশ্নের অবতারণা করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, দিদি একা সামলাতে পারছেন না। এত দুর্বৃত্ত চারপাশে থাকলে সামলাবেন কী করে? রাজ্যের বিরুদ্ধে বকেয়া সংক্রান্ত একটি মামলা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই প্রাপ্ত টাকা পাচ্ছেন না বলে একটি মামলা করেছিলেন জনৈক ব্যক্তি। সেই মামলাতেই সরকারি আইনজীবীর জবাব শুনে বিচারপতি বলেন ওই কথা।
এদিনই নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যর দুটো পাসপোর্টের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এ প্রসঙ্গেও বিচারপতি বলেন, লজ্জার বিষয় এটাই যে, এখনও তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেননি। ফিরে এসে আবার এসব শুরু করবেন। তিনি বলেন, লন্ডনে তাঁর বাড়ির পাশে এমন একজনের বাড়ি আছে তিনিও একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে বকেয়া সংক্রান্ত মামলায় সরকারি আইনজীবীর কাছে তিনি জানতে চান, মামলাকারীকে কেন টাকা দেওয়া হচ্ছে না? সরকারি আইনজীবী বলেন, আমাদেরও বেতন কম। অনেক টাকা বকেয়া রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, কেন এমন পরিস্থিতি? বকেয়া মিলছে না, মানিক ভট্টাচার্যের দুটি পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। তাহলে কি এভাবেই রাজ্যটা নষ্ট হয়ে যাবে? তারপরই তিনি ভঊপেন হাজারিকার জনপ্রিয় গানের লাইনটি তুলে ধরেছেন।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে। স্বভাবতই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাল্টা সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। আর বিরোধীরা সহমত পোষণ করেছেন বিচারপতির সঙ্গে। তাঁরাও বিচারপতির মন্তব্যের সমর্থনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনার সরব হয়েছেন।
উল্লেখ্য এর আগেও একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনা করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নাম না করে তিনি বলেছিলেন ঢাকি সমেত বিসর্জন দেওয়ার কথা। যদিও তারপর তিনি সাফাই দেন, তাঁর কথার অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলতে চাননি। মুখ্যমন্ত্রী ভালো কাজ করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কেন বলব!
সম্প্রতি তিনি আবার মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে তাঁর লেখা কবিতা এপাং ওপাং ঝপাং নিয়ে তিনি বলেন, এই যদি কবিতার প্রথম লাইন হয়, তা কি কেউ পড়বে? তারপর এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দুবৃত্ত প্রসঙ্গে রাজ্য নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারপতি।