মমতার ‘ফ্যান’ জগদীপ ধনখড়! হঠাৎ প্রশংসায় জল্পনা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সমীকরণে
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের মুখে হঠাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় সমীকরণ বদলের ইঙ্গিত পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। তবে কি...
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের মুখে হঠাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় সমীকরণ বদলের ইঙ্গিত পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। তবে কি রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন রাজ্যপাল এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী জগদীপ ধনখড় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন পাওয়ার প্রত্যাশী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁর মুখে হঠাৎ প্রশংসায় উপরাষ্ট্রপতি পদের ভোটাভুটিতে সমীকরণ বদলের আভাস মিলতে শুরু করেছে।
রাজ্যপালকেই কি সমর্থন করতে চলেছেন মমতা?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের কোনও প্রতিনিধিদেক এবার পাঠাননি উপরাষ্ট্রপতি পদে বিরোধী জোটের প্রার্থী মনোনীত করার বৈঠকে। এমনকী প্রার্থী মনোনীত হওয়ার পর তাঁর মনোনয়নেও যাননি কোনও তৃণমূল প্রতিনিধি। তারপর থেকেই জল্পনা, রাজ্য রাজনীতিতে মমতা বন্যোতাপাধ্যায়ের ঘোর সমালোচনা ও বিরোধিতা করা রাজ্যপালকেই কি সমর্থন করতে চলেছেন মমতা?
হঠাৎ পাহাড়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক মমতার
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা প্রবাহে অন্য কিছুর গন্ধ পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হঠাৎ পাহাড়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করলেন কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে আবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও হাজির। তারপর চমক দিয়ে বাংলার রাজ্যপালের নাম উপরাষ্ট্রপতি পদে ঘোষণা করে দেওয়া হল বিজেপি তথা এনডিএ তরফে।
ধনখড়ের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা
আর জল্পনার বাতাবরণ সবথেকে বেশি করে তৈরি হয়েছে প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা শুনে। তিনি নিজেকে মমতা বন্যোালপাধ্যায়ের ফ্যান বলে অভিহিত করেছেন। জগদীপ ধনখড় বলেন, মমতাজিকে ১৯৯০ সালের ১৬ অগাস্ট সিপিএম মেরেছিল। তখন কেন্দ্রে সিপিএম ও বিজেপির সমর্থনে ভিপি সিং সরকার। সেই সরকারে তিনিও ছিলেন। তাঁর খারাপ লেগেছিল ওই ঘটনা। তাই সিপিএম না চাইলেও তিনি দেখতে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
তৃণমূলের অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে
সম্প্রতি তৃণমূলের আট সদস্যের প্রতিনিধি দলের কাছে একান্ত আলাপচারিতায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় স্মৃতিচারণা করেছিলেন। তিনি আবার একথাও বলেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি সত্তা। ব্যক্তিগতভাবে তিনি আন্তরিক। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে তিনি তাঁর কথা শোনেন না। এইরকম নানা ঘটনা ও বক্তব্যের পরম্পরায় উপরাষ্ট্রপতি পদে তৃণমূলের অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
জগদীপ ধনখড়ের প্রতি সমর্থন দিতেও পারে তৃণমূল
উপরাষ্ট্রপতি পদে তৃণমূলের অবস্থান কী হবে তা ২১ জুলাই সমাবেশের পর জানাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন এই সম্ভাবনা ঝুলিয়ে রাখা এবং বিরোধী জোটের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সম্প্রতি তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ আবার বলেছেন, জগদীপ ধনখড় আদি বিজেপি নন। তাতে আরও জল্পনা বেড়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল হিসেবে জগদীপ ধনখড়ের প্রতি সমর্থন দিতেও পারে তৃণমূল, তা সম্পর্ক যতই তিক্ত হোক না কেন।
উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে কার দিকে সমর্থনের হাত মমতার
এদিকে ১৭টি বিজেপি বিরোধী দল আলোচনায় বসে যৌথ বিরোধী প্রার্থী হিসেবে উপরাষ্ট্রপতি পদে বেছে নিয়েছে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা মার্গারেট আলভাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের কোনও প্রতিনিধি সেই বৈঠকে ছিলেন না। মনোনয়ন পেশেও তৃণমূল ছিল গরহাজির। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠে পড়েছে তৃণমূলের ভূমিকা নিয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে কার দিকে সমর্থনের হাত বাড়াবেন, তা নিয়ে নানা জল্পনা শোনা যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থন করবেন মার্গারেট আলভাকেই, আশা
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর খুব ঘনিষ্ঠ নেত্রী ছিলেন মার্গারেট। সেইসময় তিনি পিএমও-র ইনচার্জ ছিলেন। আবার রাজীব গান্ধীর হাত ধরে তখনই উত্থান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মার্গারেট আলভার সঙ্গে বরাবরই সম্পর্ক ভালো ছিল মমতার। পিভি নরসীমা রাওয়ের মন্ত্রিসভায় আবার দুজনেই মন্ত্রী ছিলেন। এই প্রেক্ষিতে কংগ্রেস মনে করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থন করবেন মার্গারেট আলভাকে।
সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা
কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, মার্গারেট আলভাকে বিরোধী প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করার আগে কংগ্রেস বা এনসিপি কেউই তৃণমূল কংগ্রেসের মত নেয়নি। সিদ্ধান্ত নিয়ে তারপর জানানো হয়েছিল তাদের। তাই তৃণমূল কংগ্রেস এখন মুখ ফিরিয়ে রেখেছে বিরোধী ১৭ দলের এই সিদ্ধান্ত থেকে। তারপর আবার ভাবছে মার্গারেট আলভা মহিলা ও সংখ্যালঘু-খ্রিস্টান নেত্রী। তিনি আবার সম্প্রতি কংগ্রেসের দুর্নীতি নিয়েও আত্মজীবনীতে সরব হয়েছেন। এমনকী সোনিয়া গান্ধীর সমালোচনাও করেছেন। সমস্ত দিকগুলিই খতিয়ে দেখছেন মমতা।