ষাটের দশকে ফিরছে জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো
ষাটের দশকে ফিরছে জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো
এবছর করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গোৎসবে থিম পুজোর স্রষ্টা 'অশোক গুপ্ত'কে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে ষাটের দশকে ফিরছে জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো ঠিক সেরকমই নিজেদের পুজো মণ্ডপ ও প্রতিমা গড়ছে জগৎ মুখার্জি পার্ক। উদ্দেশ্য একটাই, সাধারণ মানুষকেও থিমের স্রষ্টার সম্পর্কে অবগত করা।
এবছর 84 বছরে পা দিল জগৎ মুখার্জি পার্কের দুর্গোৎসব। বর্তমান সময়ে চলা প্যানডেমিকের কথা মাথায় রেখে মানুষকে একটু উৎসবের আনন্দ দিতে চায় এই পুজোর উদ্যোক্তারা। এ বছর পুজোর থিম সম্পর্কে জগৎ মুখার্জি পার্কের থিম শিল্পী সুবল পালের ভাবনায়, 'যতকাল রবে থিমের দুর্গা পুজো, সৃষ্টির উদ্দেশ্য, গঙ্গানদী, কলকাতা, জগৎ মুখার্জি পার্ক, স্মরণে রবে স্যার অশোক গুপ্ত'।
এবছর
তাঁদের
ভাবনা
নিয়ে
শিল্পী
সুবল
পাল
জানান,
এবছর
জগৎ
মুখার্জি
পার্ক
থিম
পুজোর
স্রষ্টা
যিনি
তাঁকে
একটা
ট্রিবিউট
জানাচ্ছি।
স্যার
অশোক
গুপ্ত,
যিনি
১৯৫৯
সালে
এই
জগৎ
মুখার্জি
পার্কেই
প্রথম
থিম
পুজোর
সৃষ্টি
করেছিলেন।
তখন
চারদিকে
সাবেকিয়ানা।
সেই
সময়
দাঁড়িয়ে
উনি
তৎকালীন
ঘটনার
প্রেক্ষাপটে
দুর্গা
প্রতিমা
নির্মাণ
করেন।
তখন
সাবেকিয়ানার
ফর্মটাকে
ভেঙে
একদম
অন্য
ধরনের
একটি
দুর্গা
প্রতিমা
গড়েছিলেন।
সেই
মানুষটাকেই
এবার
ট্রিবিউট
জানাচ্ছি।
কারণ,
যাঁরা
দুর্গাপুজোর
সঙ্গে
যুক্ত,
তাঁরা
সবাই
জানে
তাঁর
সম্পর্কে।
কিন্তু,
সাধারণ
মানুষ
কিন্তু
এখনও
জানে
না
যে,
আসলে
এই
সৃষ্টির
স্রষ্টা
কে।
সেই
মানুষটিকে
একটু
আলোকিত
করা
হচ্ছে
যাতে
সবাই
তাঁকে
চিনতে
পারে।
তিনি আরো জানান, ১৯৫৯ সালে জগৎ মুখার্জি পার্কে প্রথম সাবেকিয়ানার বদলে অন্যরূপী প্রতিমা গড়ে থিমপুজোর সূচনা করেছিলেন অশোক গুপ্ত। তখনকার দিনের থিমপুজো এখনকার থিমপুজোর মতো ছিল না। তখন সাবেকি প্রতিমাকে অন্য রূপে দেখানোটাই ছিল থিম। অশোক গুপ্ত তৎকালীন ঘটনা অর্থাৎ, কখনও নকশাল আন্দোলন, কখনও পরমাণু বিস্ফোরণের উপর ভিত্তি করে দুর্গা মূর্তি গড়তেন। তাঁর গড়া প্রতিমা সম্পূর্ণ অন্য ধরনের হত । উনি একটা বোর্ডের উপর রিলিফ ওয়ার্ক করতেন। আমাদের দুর্গা প্রতিমাটা দেখলেই বোঝা যাবে যে ওনার ধরনেই করা। যা দেখলে একটা পেন্টিং মনে হবে। উনি এতো বড় শিল্পী ছিলেন যে ওঁনাকে অনুকরণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ওঁনাকে অনুসরণ করে আমরা যেটুকু পারছি করছি।
তাই এবছর করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে থিমের স্রষ্টা অশোক গুপ্তকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে এবার ষাটের দশকে ফিরছে জগৎ মুখার্জি পার্ক। ওই দশকের সম্পূর্ণ কাল্পনিক একটি আর্ট গ্যালারির রূপ দেওয়া হচ্ছে মণ্ডপটিকে। এমনভাবে সাজানো হচ্ছে এই আর্ট গ্যালারিকে যাতে মনে হয় 'অশোক গুপ্ত'র শিল্প সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে সেখানে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যাবস্থাও মাথায় রাখা হয়েছে জগৎ মুখার্জি পার্কে। পুজো উদ্যোক্তারা জানান, খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমাদের পুজো হচ্ছে। কারণ, মানুষের সুরক্ষা সবথেকে আগে। মানুষ যদি মনে করেন তাঁরা ভিড়ের মধ্যে আসতে চান না, আমরা বাইরে একটা এলইডি স্ক্রিন লাগানো হয়েছে, সেখান থেকে ঠাকুর দেখে চলে যেতে পারবেন। এছাড়াও আমরা গোল গোল দাগ কেটে দিচ্ছি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য। একসঙ্গে ২০ জনকে দর্শনের জন্য প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। পর্যাপ্ত মাস্কের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেউ মাস্ক পড়ে না এলে মাস্ক পড়ে ভিতরে মণ্ডপ ও প্রতিমা দেখার সুযোগ থাকছে। এছাড়াও থাকছে থার্মাল গান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
৭৪তম বর্ষে 'দুর্গোৎসব নয়, শুধু দেবী দুর্গার পুজোই লক্ষ্য ত্রিধারা সম্মিলনীর