লকডাউনে মানুষকে বাড়িতে থাকার সাহস জোগাতে পুলিশ গাইছে গান, করছে শায়েরি
লকডাউনে মানুষকে বাড়িতে থাকার সাহস জোগাতে পুলিশ গাইছে গান, করছে শায়েরি
কখনও
ব্যস্ত
শহরে
ট্রাফিক
সামলাচ্ছেন
কখনও
বা
অপরাধীদের
খুঁজতে,
ঘটনার
তদন্ত
করতে
চুলচেরা
বিশ্লেষণ
করছেন।
আম
জনতার
কাছে
পুলিশ
মানেই
দুষ্টু
লোক।
কিন্তু
সেই
দুষ্টু
লোকদেরই
দেখা
গেল
বিভিন্ন
উদ্যোগের
মধ্য
দিয়ে
করোনা
ভাইরাসে
লকডাউনের
সময়
বাড়িতে
থাকার
আবেদন
করতে।
প্রসঙ্গত
দেশের
বিভিন্ন
রাজ্যের
পুলিশ
লকডাউনের
গুরুত্ব
বোঝাতে
ভিন্ন
ভিন্ন
পদ্ধতি
গ্রহণ
করছেন।
দক্ষিণ
রাজ্যের
বেশিরভাগ
পুলিশদেরই
এটি
করতে
দেখা
গিয়েছে।
এবার
সেই
পথেই
হাঁটছে
কলকাতা
ও
রাজ্য
পুলিশ।
গান গেয়ে পুলিশের আর্জি
লকডাউনের সময় মানুষকে বাড়িতে থাকার আর্জি জানানোর জন্য কলকাতা পুলিশ বর্তমানে গানওয়ালা। গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ, রবীন্দ্র সরোবর, এন্টালি সহ বিভিন্ন থানার পুলিশ কখনও গান গেয়ে আবার কখনও বা শায়েরি শুনিয়ে কলকাতার বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকতে বলছেন। উই শ্যাল ওভার কাম থেকে শুরু করে বেলা বোস বা ওরে হাল্লা রাজার সেনা, এই সব পুরনো গানগুলির শব্দ এদিক-ওদিক করেই বানিয়ে নিয়েছে সচেতনামূলক বার্তা। এন্টালি পুলিশ যেমন হাততালি দিয়ে গাইলেন উই শ্যাল ওভার কাম তেমনি গড়িয়াহাট থানার পুলিশের গলায় শোনা গেল বেলা বোস গানের অন্য এক ভার্সন (এটা কি ২৩৪১২৩৪)। রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ গাইলেন ওরে হাল্লা রাজার সেনা গানেরই অন্য এক ভার্সন (ওরে শহরবাসী তোরা বাইরে ঘুরে করবি কি তা বল)। তবে শুধু গানেই থেমে নেই তারা, হিন্দি শায়েরির মাধ্যমে শহরবাসীকে সচেতন করতে এগিয়ে এসেছে জোড়াসাঁকো থানার পুলিশ। তারা বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে জানালেন ‘বেবজা ঘর সে নিকলনে কি জরুরত ক্যায়া হ্যয়'। পিছিয়ে নেই রাজ্য পুলিশও। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পক্ষ থেকে খড়দহ অঞ্চলের মানুষকে সচেতন করতে শাহরুখ খানের ‘শুনো না শুনো না' গানটির আদলে ‘করোনা করোনা করোনা, করোনাকে বাড়তে দেব না' গান গাইলেন পুলিশরা।
গৃহবন্দি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ, চেষ্টা করছে সাহস জোগানোর। সে না হয় হল গানের মধ্য দিয়ে।
রক্তদান শিবিরে অংশ
একদিকে যেমন করোনার থাবা তেমনি গরমকাল এসে গিয়েছে এবার দেখা দেবে রক্ত সঙ্কটেরও। সেখানেও উদ্যোগ সেই কলকাতা পুলিশেরই। রক্তের অভাব যাতে না হয় তার জন্য তাঁরাই এগিয়ে এসে রক্ত দিচ্ছেন। সেরকমই রক্ত দেওয়ার মতো মহৎ কাজ করে এক অসুস্থ প্রৌঢ়ার প্রাণ পাঁচালেন বৌবাজার থানার অ্যাডিশনাল অফিসার-ইন-চার্জ সিদ্ধার্থ চৌধুরি। লকডাউনের সঙ্কটের সময় তিনি এক অসুস্থ বৃদ্ধাকে রক্ত দিয়ে তাঁর প্রাণ বাঁচালেন। এখানেই শেষ নয় কলকাতা পুলিশ সহ রাজ্য পুলিশের বহু অফিসাররাই এই রক্তদানে অংশ নিচ্ছেন।
সামাজিক কাজে এগিয়ে আসা
লকডাউনের সময় যাতে গরীব মানুষের পেটে দুবেলা অন্ন জোটে তারও খেয়াল রাখছে এই পুলিশই। শহর ও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেল পুলিশ অসহায় মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। চারুমার্কেট থানার পুলিশ দুর্বার মহিলা সমিতির সঙ্গে একজোট হয়ে যৌন কর্মীদের হাতে তুলে দিয়েছে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। শুধু তাই নয়, রাস্তার কুকুররাও যাতে ক্ষুধার্ত না থাকে তাদেরও দু'বেলা খাবার দিচ্ছে পুলিশ।
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে এই লকডাউনের সময় খেয়াল রাখা হচ্ছে বিধাননগরের প্রবীণ নাগরিকদের। তাঁদের ওষুধ সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে দোরগোড়ায়।
পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার পক্ষ থেকেও গরীবদের মাস্ক, স্যানিটাইজার ও প্রয়োজনীয় রসদ তুলে দেন থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সৌগত ঘোষ।
লকডাউনের মধ্যে কলকাতার গরীব মানুষ, দুঃস্থ-দরিদ্র এবং ফুটপাথবাসীদের পাশে সাধ্যমতো দাঁড়াতে শহরের থানাগুলির পাশাপাশি এগিয়ে এল কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশও। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে একটি খাদ্য সরবরাহকারী গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই গাড়িতে থাকছে রান্না করা খাবার, অন্যান্য পুষ্টিকর শুকনো খাবার-সহ রেশনের কম্বো প্যাকেট। এই খাবার ও রেশনের প্যাকেট নিয়ে গাড়িটি পৌঁছে যাচ্ছে কলকাতার ফুটপাথবাসী মানুষদের কাছে। এছাড়াও বিভিন্ন থানাতেও খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বীরভূম জেলা পুলিশের উদ্যোগ
বীরভূম জেলা পুলিশের উদ্যোগে শহর এবং গ্রামের বিভিন্ন রাস্তায় স্থানীয় শিল্পীদের সহযোগিতায় রং ও তুলির প্রয়োগে আলপনা আঁকা হচ্ছে। অকারণে যে সমস্ত মানুষ রাস্তায় বেরোচ্ছেন, তাঁদের কাছেও নিজ সুরক্ষার বার্তা পৌঁছে দিতে পুলিশের এই অভিনব উদ্যোগ।