না জিততে পারলে মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন না! ভবানীপুরে সবার ভোট কেন জরুরি স্মরণ করালেন মমতা
একবালপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (mamata banerjee) নির্বাচনী সভা (election meeting)। জল জমে থাকার কারণে যা একদিন পিছিয়ে যায়। সেই সভাতেই এলাকাকে জমা জল মুক্ত রাখার জন্য এলাকায় যে একাধিক পাম্পিং স্টেশনের কাজ চলছে তা স্মরণ
একবালপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (mamata banerjee) নির্বাচনী সভা (election meeting)। জল জমে থাকার কারণে যা একদিন পিছিয়ে যায়। সেই সভাতেই এলাকাকে জমা জল মুক্ত রাখার জন্য এলাকায় যে একাধিক পাম্পিং স্টেশনের কাজ চলছে তা স্মরণ করিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে জানালেন, তাঁদের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও, যদি তিনি ভবানীপুরে জিততে না পারেন, তাহলে মুখ্যমন্ত্রী (chief minister) থাকতে পারবেন না। ভোট না দিলে তাঁকেও আর পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুরুতেই জমা জল প্রসঙ্গ
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে স্বাভাবিকভাবেই উঠে এসেছে জমা জল প্রসঙ্গ। তিনি এদিন দাবি করেন, আগে সাতদিন জল জমে থাকত, এখন তা থাকে না। তবে যে টুকুও জমে তার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। কবিতীর্থ পাম্পিং স্টেশনের কাজ প্রায় শেষের পথে। তা ডিসেম্বরেই কাজ শুরু করবে। অন্যদিকে বডিগার্ড লাইন এবং খিদিরপুরেও পাম্পিং স্টেশন তৈরির কাজ চলছে। যার তৈরি হলে এলাকায় জমা জমার সুরাহা করা যাবে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবারের সভা বাতিল প্রসঙ্ত তুলে জানান, জল জমার খবর পাওয়ার পরেই দমকল থেকে শুরু করে বাকি বিভিন্ন বিভাগকে জল সরানোর কাজে লাগানো হয়েছিল।
এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ
এলাকায় বিভিন্ন রকমের উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, গার্ডেনরিচ উড়ালপুল এবং কলেজ তৈরির কথা। পাশাপাশি এলাকায় থাকা পুরনো হাসপাতালকে যে এসএসকেএম-এর রেফারেল হাসপাতাল করা হয়েছে, সে কথাও মুখ্যমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন এদিন।
সঙ্গ দিয়েছে খিদিরপুর
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেছেন, তিনি সাতবার সংসদে গিয়েছেন, প্রত্যেকবারই খিদিরপুর সঙ্গ দিয়েছে। একবার যাদবপুর, সেই সময় কবিতীর্থ ছিল যাদবপুরের সঙ্গে। পরে ছয়বার তিনি দক্ষিণ কলকাতা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সেই সময় দক্ষিণ কলকাতার অংশ ছিল আলিপুর।
নন্দীগ্রামে হারানো হয়েছে
এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁকে নন্দীগ্রামে জোর করে হারানো হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সঙ্গে সমবেত জনগণের উদ্দেশে বলেছএন, কীভাবে তাঁকে হারানো হয়েছে, তা জানলে সবাই ভয় পেতে যাবেন।
সাথ মে রহেঙ্গে
মুখ্যমন্ত্রী এদিন কার্যত বলে দেন এরপর তিনি আর ভবানীপুর ছেড়ে যাবেন না। প্রচারে তিনি বলেছেন, আপনাদের সঙ্গে থাকাটাই বড় কাজ। ছেড়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তিনি ভবানীপুরবাসীর সঙ্গেই থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, তাঁর ভাগ্যেই লেখা ছিল, তিনি যেন ভবানীপুর থেকেই লড়াই করেন। ভবানীপুর থেকে জিতেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে মন্তব্য করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই নির্বাচন দিল্লির দিকে নিয়ে যাবে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেছেন, এই নির্বাচন শুরু তাঁর মুখ্যমন্ত্রী থাকার নির্বাচন নয়, এই নির্বাচন ভবিষ্যতে দিল্লি যাওতারও নির্বাচন। এই নির্বাচনে জয় তৃণমূলকে দিল্লির দিকে নিয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন তিনি। এই ভোটে জিততে পারলে, তাঁরা ত্রিপুরা, অসম-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে লড়াই করার সাহস যোগাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এখানে গাছ পুঁতলে, দিল্লিতে গিয়ে গজাবে। গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করে তিনি বলেছেন, বিজেপি যদি বাঘা ওল হয়, তাহলে তাঁরা বুনো তেঁতুল।
না জিততে পারলে মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন না
তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য হল, এই নির্বাচনে ভবানীপুর থেকে জিততে না পারলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। তখন অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবে। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী রাখতেই ভবানীপুর কেন্দ্রের মধ্যে থাকা খিদিরপুরবাসী যেন তাঁকে ভোট দেন, সেই আবেদন রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, তাঁর কাছে প্রত্যেকটা ভোটই গুরুত্বপূর্ণ। একটা ভোট কম হলেও ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। অনেকেই ভাবছেন, দিদি এমনিতেই জিতে যাবেন। তাই ভোট দিতে না গেলেও চলবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করে বলেছেন, যতই ঝড়-জল হোক না কেন, সবাই যেন দল বেধে গিয়ে ইভিএম-এর একনম্বরের বোতাম টেপেন। ভোট না দিলে তাঁকেও আর পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমোকে। তিনি আরও বলেন, তিনি এই রাজ্যে কখনই এনআরসি, সিএএ লাগু হতে দেবেন না। তিনি নিজেকে পাহাড়াদার বলেও মন্তব্য করেন।