সহানুভূতি-অনুকম্পা চাই না, বিচার চাই, অ্যাপোলোর বকেয়া মিটিয়ে জানালেন সঞ্জয়ের স্ত্রী
চাই না টাকা, বিচার চাই সঞ্জয়ের মৃত্যুর। অ্যাপোলো হাসপাতালে এসে সাফ জানিয়ে দিলেন মৃত সঞ্জয় রায়ের স্ত্রী রুবি রায়। সোমবার তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল এখন টাকা ফেরত দিতে চায়। এই সহানুভূতি কোথায় ছিল সেদিন।
কলকাতা, ২৭ ফেব্রুয়ারি : চাই না টাকা, বিচার চাই সঞ্জয়ের মৃত্যুর। অ্যাপোলো হাসপাতালে এসে সাফ জানিয়ে দিলেন মৃত সঞ্জয় রায়ের স্ত্রী রুবি রায়। সোমবার তিনি বলেন, 'হাসপাতাল এখন টাকা ফেরত দিতে চায়। এই সহানুভূতি কোথায় ছিল সেদিন। এক ঘণ্টা আগে রোগীকে ছাড়লে হয়তো তাঁকে বাঁচানো যেত। তখন তো সহানুভূতি দেখায়নি হাসপাতাল। তাই এখন আর টাকা ফেরত চাই না। বকেয়া টাকা দিয়ে ফিক্সড ডিপোজিটের সার্টিফিকেট ফেরত নিতেই আমরা এসেছি।'
এদিন অ্যাপোলোয় বকেয়া টাকা মেটাতে গেলে সঞ্জয়ের স্ত্রীর কাছ থেকে তা নিতে অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ জেদাজেদির পর অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ টাকা ফেরত নিয়েছে। সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বকেয়া থাকলেও, এদিন হাসপাতাল জানায় ২ লক্ষ ৯০ হাজার ৬৪০ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের। সেইমতো ওই পরিমাণ টাকার চেকই তুলে দেওয়া হয় অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষের হাতে। বিনিময়ে ফিক্সড ডিপোজিটের সার্টিফিকেট ও অন্যান্য নথি ফেরত নেন সঞ্জয়ের স্ত্রী রুবি। বলেন, বকেয়া টাকা না মেটালে তাঁর স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে না।
এদিকে সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর তদন্ত শুরু হল অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে। একজন ইন্সপেক্টর পদ মর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে কমিটি গড়েই তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ফুলবাগান থানার ওসিও থাকছেন এই কমিটিতে। এই কমিটি তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছে। নথি সংগ্রহ করার কাজ চলছে। অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষের কাছে সঞ্জয়ের চিকিৎসা-সংক্রান্ত সমস্ত নথি চাওয়া হয়েছে। রবিবার রাতে ফুলবাগান থানায় অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন সঞ্জয়ের স্ত্রী রুবি। তিনি অ্যপোলো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করেছে। স্বামীর মৃত্যুর বিচার চেয়েছেন।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ছ'সদস্যতের এই তদন্ত কমিটির মাথায় থাকছেন স্বাস্থ্য সচিব সুবীর চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও পাঁচজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকছেন। তাঁরা সঞ্জয়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত নথি খতিয়ে দেখবেন।
অ্যাপোলোয় গিয়ে এদিন রুবিদেবী দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানান, অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ টাকা দিতে চাইলেও তিনি কোনওভাবেই টাকা ফেরৎ নেবেন না। কারণ অ্যাপোলো তো আর তাঁর স্বামীকে ফিরিয়ে দিতে পারবে না? অথচ সেদিন যদি সামান্য সহানুভূতি দেখাত, আমার স্বামী হয়তো বেঁচে যেত। কিন্তু তা যখন করেনি, আজ আর সহানুভূতির দরকার নেই। আমরা চেয়েচিন্তে বকেয়া টাকা জোগাড় করেছি। সেই টাকা দিয়ে ফিক্সড ডিপোজিটের বন্দকী কাগজ ছাড়িয়ে নিয়ে যেতেই আমরা এসেছি।
সঞ্জয়ের দিদি বলেন, আমরা অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষের জন্য এসএসকেএমে পাঁচঘণ্টা লেট পেয়েছি। তখন সহানুভূতি দেখালে আমার ভাইটা বেঁচে যেত। তখন মানবিকতা কোথায় ছিল।