কলকাতায় চিমনি-র বকেয়া টাকা চাওয়ায় সেলস ম্যানকে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ, গ্রেফতার গৃহবধূ
কুচিনা কোম্পানির চিমনি কিনেছিলেন কলকাতার আলিপুরের পি ব্লকের বাসিন্দা মধুমন্তী সাহা। চিমনির সঙ্গে তিনি আরও একটি জিনিস কিনেছিলেন। চেকের মাধ্যমে দাম মেটান এই গৃহবধূ।
এক বহুজাতিক কোম্পানির চিমনি কিনেছিলেন কলকাতার আলিপুরের পি ব্লকের বাসিন্দা মধুমন্তী সাহা। চিমনির সঙ্গে তিনি আরও একটি জিনিস কিনেছিলেন। চেকের মাধ্যমে দাম মোট ৪০,০০০ টাকা মেটান এই গৃহবধূ। কিন্তু, সেই চেক বাউন্স করায় সংস্থা থেকে নগদে ৪০,০০০ টাকা মেটাতে বলা হয়। শুক্রবার সেই টাকা আনতে মধুমন্তী সাহা-র বাড়িতে যান সংস্থার সেলস ম্যানেজার অমিত চক্রবর্তী ও তাঁর সহকারী সোমনাথ মণ্ডল। অভিযোগ, সেখানে মধুমন্তী তাঁদের কোল্ডড্রিঙ্কস পান করতে দিয়েছিলেন। অমিত কোল্ডড্রিঙ্কস খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সোমনাথ মন্ডল জ্বর রয়েছে বলে কোল্ডড্রিঙ্কস খাননি। ইতিমধ্যে মধুমন্তী মিষ্টিও এনে দেন বলে জানিয়েছেন সোমনাথ। এরপরই আচমকা সেলস ম্য়ানেজার অচৈতন্য হয়ে লুটিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ সোমনাথের। এমনকী বিষয়টি তিনি অফিসে অন্যদের মোবাইলে জানাতে গেলে মধুমন্তী মোবাইল ছিনে নেন বলে অভিযোগ। এরপরই সোমনাথ দৌঁড়ে এসে স্থানীয় ক্লাবে ঢুকে পড়েন। সেখানে এক ক্লাব সদস্যের সাহায্যে তিনি আলিপুর থানায় হাজির হন। সেখানে ততক্ষণে মধুমন্তীও হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। সোমনাথ থানায় পুরো ঘটনা খুলে বলেন। মধুমন্তীও পাল্টা সোমনাথ এবং তাঁর বস অমিতের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ মধুমন্তীর বাড়ি থেকে অমিত ও সোমনাথের মোবাইল দুটি উদ্ধার করে।
অমিতকে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। রাতভর তাঁর জ্ঞান আসেনি। সোমনাথের অভিযোগ, কোল্ডড্রিঙ্কসে খুবই কড়া করে বিষ মেশানো হয়েছিল বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন। অমিতের অবস্থা সঙ্কটজনক। মধুমন্তীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমনাথের অভিযোগ, মধুমন্তীর সঙ্গে কথা বলেই তাঁরা দুটি জিনিসের বকেয়া অর্থ আনতে গিয়েছিলেন। তাঁরা যখন পি ব্লকে মধুমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছন তখন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। সেই কারণে সেলস ম্যানেজার অমিতের সঙ্গে বাড়ির নিচেই তাঁরা অপেক্ষা করছিলেন বলে জানিয়েছেন সোমনাথ। মধুমন্তীর মেয়ে জানিয়েছিলেন তিনি টাকা তুলতে ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন। ফলে মধুমন্তী ফিরতেই অর্থ দিয়ে দেওয়া হবে বলে মনে করিছেলেন সোমনাথরা। কিন্তু টাকা দেওয়ার আগে মধুমন্ত্রী ঘরে নিয়ে গিয়ে কোল্ডড্রিঙ্কস নিয়ে এসে হাজির করেছিলেন বলে দাবি সোমনাথের। তাঁর আরও অভিযোগ, টাকা দেওয়া নিয়েও অনেকক্ষণ টালবাহানা করছিলেন মধুমন্তী। মাঝে বলেন তাঁর কাকা টাকা নিয়ে আসছেন। এই সময় অমিত অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
সোমনাথের অভিযোগ, তিনি ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করতেই মধুমন্ত্রী তাঁর বাড়ির দুটি বিশাল বিশাল কুকুরকে তাঁর পিছনে ছেড়ে দিয়েছিলেন। মধুমন্তী ও তাঁর মেয়ের বয়ানের মধ্যেও ফারাক পেয়েছ পুলিশ। যদিও, মেয়ে জানিয়েছেন, জল ও মিষ্টি দেওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সেলসম্য়ানদের মধ্যে একজন। এরপরই পুলিশ তাঁর মা-েক গ্রেফতার করে। সোমনাথ মন্ডল এবং তাঁর সংস্থা থেকে দায়ের করা অভিযোগে মধুমন্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অর্থ না দেওয়ার জন্য মধুমন্ত্রী কোল্ডড্রিঙ্কসে বিষ মিশিয়েছিলেন বলে মনে করছেন সোমনাথ।