কেন্দ্রীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈষম্যের মধ্যেই বেরোতে চলেছে ডিএ মামলার রায়, জেনে নিন বিস্তারিত
বৃহস্পতিবার ডিএ মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে। না হলে শুক্রবার তা ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৭ সালে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল জানিয়েছিল ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকার নয়।
বৃহস্পতিবার ডিএ মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে। না হলে শুক্রবার তা ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৭ সালে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল জানিয়েছিল ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকার নয়। এরপর স্যাটের নির্দেশকে চ্যালেঞ্চ করে হাইকোর্টে মামলা করে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দুটি সংগঠন।
গতমাসে হাইকোর্টে ডিএ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। যে শুনানি হয়েছে, তাতে খুশি রাজ্য সরকারি কর্মীরা। তাঁদের আশা আদালত রায় দেবে সরকারি কর্মীদের পক্ষে।
ডিএ নিয়ে মামলা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। ২০১৬-র ১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ যখন ছিল ১২৫ শতাংশ, সেই সময় রাজ্যের কর্মীদের ডিএ ছিল ৭৫ শতাংশ। এই মুহুর্তে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ১৪৭ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন। আর রাজ্যের কর্মীরা পাচ্ছেন ১০০ শতাংশ হারে। কেন্দ্রীয় কর্মীদের সঙ্গে রাজ্যের কর্মীদের ডিএ-র ব্যবধান ৪৭ শতাংশ।
রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে রাজ্যের কর্মীরা ১২৫ শতাংশ হারে মহার্ঘভাতা পাবেন। যদিও সেই সময় থেকে কেন্দ্রীয় কর্মীরা আরও এক কিস্তি মহার্ঘভাতা পাওয়া হয়ে যাবে।
যদিও, রাজ্যের অভিজ্ঞ কর্মীদের ব্যাখ্যাটা অন্যরকম। তাঁদের দাবি ব্যবধান আরও বেশি। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-র জানুয়ারী থেকে হিসেব করলে যদি রাজ্যের কর্মীদের মূল বেতন ১০০ টাকা হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় কর্মীদের বেতন ২৫৭ টাকা।
রাজ্যের কর্মীদের তরফে ২০১৭-তে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালে আবেদন করা হলে, সেখান থেকে জানানো হয়, রাজ্য সরকারি কর্মীদের অধিকারের মধ্যে ডিএ পড়ে না। এরপর স্বপন কুমার দে নামে রাজ্য সরকারি কর্মী হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই সময়কার হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় একাধিকবার। নিশীথা মাত্রে অবসর নেওয়ার পর মামলাটি দেবাশিস করগুপ্ত এবং ববি শরাফের বেঞ্চে যায়। এই বেঞ্চেও একাধিকবার শুনানি হয়। সব মিলিয়ে এই মামলায় ৩৪ বার শুনানি হয়েছে।
সরকারি কর্মীদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং সর্দার আমজাদ আলি। অন্যদিকে রাজ্যের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত।
আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তাঁর সওয়ালে একাধিক বিষয় তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল ১৯৫৪ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কছা তুলে ধরলেও, পরবর্তী সময়ে সুপ্রিম কোর্টের বহু মামলার রায়ে বলা হয়েছে ডিএ সরকারি কর্মীদের অধিকারের মধ্যে রয়েছে। এছাড়াও তিনি আরও বলেন সুপ্রিম কোর্টের রায় থেকেই স্পষ্ট বছরে দুবার ডিএ দিতে হবে। আর ডিএ-র হার প্রাইস ইনডেক্স বা পিআইআর-এর ওপর নির্ভর করবে।
আইনজীবী আমজাদ আলি বিচারপতির সামনে বলেন, দিল্লি ও চেন্নাইয়ের রাজ্য সরকারের কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পান। কিন্তু এরাজ্যে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা বঞ্চিত। বিষয়টি সংবিধানের পরিপন্থী বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বিচারপতিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর একটি সভায় ঘেউ ঘেউ প্রসঙ্গও তুলেছিলেন।
তবে মামলাকারী সরকারি কর্মীরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত যে শুনানি হয়েছে তাতে তাঁরা খুশি। তাঁদের আশা আদালত রায় দেবে সরকারি কর্মীদের পক্ষে।