গ্রুপ ডি ও সি নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের, খারিজ অনুসন্ধান কমিটি
গ্রুপ ডি মামলায় অনুসন্ধান কমিটি খারিজ, ফের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
গ্রুপ ডি ও গ্রুপ সি মামলায় ফের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ অনুসন্ধান কমিটি খারিজ করে দিয়ে সিবিআইকে গ্রুপ ডি মামলায় তদন্তের নির্দেশ দেয়। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আবার গ্রুপ সি নিয়োগ মামলায় সিবিআি তদন্তের নির্দেশ দেন। ফলে একই দিনে জোড়া ধাক্কা খেল রাজ্য।
গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও রিপোর্ট পেশ করেনি অনুসন্ধান কমিটি। এর ফলে আদালতকে অবমাননা করা হয়েছে। তাই অনুসন্ধান কমিটির ভূমিকায় ক্ষুণ্ণ হয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ অনুসন্ধান কমিটিই খারিজ করে দেয়। অনুসন্ধান কমিটি খারিজ করে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় এরপর।
কলকাতা হাইকোর্টে এদিন অনুসন্ধান কমিটিকে প্রশ্ন করে, কেন আদালত নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কেন রিপোর্ট পেশ করা হয়নি। রিপোর্ট পেশ করতে কোথায় বাধা কোথায়? সেই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর পায়নি হাইকোর্ট। এরপরই অনুসন্ধান কমিটি বাতিল করে দেয় সিবিআই। বুধবারের মধ্যে অনুসন্ধান-রিপোর্ট সিবিআইকে পেশ করতে বলেন বিচারপতি। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করবে সিবিআই। সিবিআইকে ১৬ মার্চের মধ্যে হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে।
এদিন গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলার পাশাপাশি গ্রুপ সি নিয়োগ মামলাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এর ফলে জোড়া ধাক্কা খেল রাজ্য। হাইকোর্ট জানিয়েছে, গ্রুপ সি নিয়োগ তদন্তে নজরদারি করবেন সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা। সেইসঙ্গে আরও জানানো হয়েছে, যাঁদের নিয়োগ হয়েছিল অবৈধভাবে, তাদের বেতন ফেরত দিতে হবে। বেতন ফেরত না দিলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল হাইকোর্টে জানান, রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা ওপর আস্থা রাখুন। রাজ্যের তরফে নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন তিনি। যদিও রাজ্যের আবেদন নামঞ্জুর করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। গ্রূপ সি নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও একই পথে হাঁটেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাত ৯টার মধ্যে কমিটির চেয়ারম্যান হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির কাছ থেকে সমস্ত নথি সিবিআই নিজেদের হেফাজতে নেবে।
এর আগে স্কুলে গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় ৫৭৩ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে এতদিন প্রাপ্ত বেতন ফেরতেরও নির্দেশ দেওয়া হয়ছিল। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, গ্রুপ ডি নিয়োগে আকাশছোঁয়া দুর্নীতি হয়েছে। নিয়ম না মেনে চাকরিতে নিয়োগ হওয়ায় থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি। তিনি একটি কমিটিও গঠনের অনুসন্ধান নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই কমিটিকে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালে গ্রুপ ডি নিয়োগের সুপারিশ করেছিল রাজ্য সরকার। সেখানেই একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। তিন শতাধিক গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগেও একইরকম দুর্নীতি হয় বলে অভিযোগ।