এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল, সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চ কোনও ভুল করেনি। তারা সীমা অতিক্রম করেছে বলেও মনে হচ্ছে। না। এই দুর্নীতি মামলায় এসএসসিকে ভর্ৎসনা করে বুধবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বহাল রাখল সিঙ্গল বেঞ্চের রায়। অর্থাৎ সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ জারি রইল। ডিভিশন বেঞ্চ পরিষ্কার জানিয়ে দিল, নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকলে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতেই পারে।


এদিন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে বহাল রেখে ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তে নির্দেশ জারি রাখে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি আনন্দকুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ৩৩টি মামলায় এই নির্দেশ জারি রাখে। গত ১৩ মে শুনানি শেষে রায় দান স্থগিত রেখেছিল আদালত। এদিন সেই রায় দান করেন বিচারপতিরা। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের সঙ্গে সহমত পোষণ করে এই রায় দান করে ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিনই কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বাগ কমিটি রিপোর্ট পেশ করেছেন। সেই রিপোর্ট গ্রহণ করেছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এবং সেই রিপোর্টকে মান্য তা দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে আরও জানায়, ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে সিঙ্গল বেঞ্চ এক্সিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা মনে হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত যে সব তথ্য প্রমাণ এসেছে, তার একটাও এসএসির পক্ষে যাচ্ছে না।
এদিন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা আরও জানান, সবসময় যে প্রভাবিত সব পক্ষের বক্তব্য শুনতে হবে এমন কোনও বিধিবদ্ধ নিয়ম বা আইন নেই। আর্থিক দুর্নীতি খুঁজে বার করার ক্ষেত্রে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে কোনও ভুল নেই। এমনকী বিতর্কিতভাবে নিযুক্ত প্রার্থীদের বেতন বন্ধ বা ফেরত দিতে বলে ভুল করেনি সিঙ্গল বেঞ্চ, তাও জানিয়ে দেন বিচারপতিরা।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি আনন্দকুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের রায়দানের পর সবকটি মামলাই সিঙ্গল বেঞ্চে হবে। এই নির্দেশ শুনেই এসএসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তাঁর এজলাসের মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তলব করেন। রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে সমস্ত পদ থেকে অব্যাহতি দিতে।
এসএসি নিয়োগ দুর্নীতির সাত-সাতটি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে রায় দান করেছিলেন, তা বহাল রাখার পর বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এদিন। বিজেপির দাবি, ২০১১ সাল থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। একজন মন্ত্রীকে তাঁর পদ থেকে সরানোর পরামর্শ দিচ্ছেন হাইকোর্টের বিচারপতি, তা লজ্জার। তিনি বলেছেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী যদি নিজে থেকে সরে না যান তাঁদের অব্যহতি দেওয়া হোক। এই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই বলেও দাবি করা হয় বিজেপির তরফে। তৃণমূলের পক্ষে বিজেপিকে নিশানা করে বলা হয়, গোটা দেশটাকে বিক্রি করে দিয়েছে, তাদের এসব বড় বড় কথা মানায় না। তবে তারা চান নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। যদি কোনও ভুল থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হতে পারে। তবে তৃণমূল সরকার ৯৯ শতাংশ ভালো কাজ করেছে বলে দাবি।