সবার ১ নম্বর প্রাপ্য, বৈষম্য পর্ষদ করতে পারে না! নিয়োগ দুর্নীতিতে পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আজও স্বস্তি পেল না প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সিবিআই তদন্তের ওপর কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল না ডিভিশন বেঞ্চ। এই সংক্রান্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবা এই বিষয়ে শুনানি হয়। আর সেই শুনা
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আজও স্বস্তি পেল না প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সিবিআই তদন্তের ওপর কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল না ডিভিশন বেঞ্চ। এই সংক্রান্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবা এই বিষয়ে শুনানি হয়। আর সেই শুনানিয়ে কোন নির্দেশ এদিন দেয়নি ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে আপাতত সিবিআই তদন্ত চলবে বলেই জানাচ্ছেন আইনজীবীরা।
গত কয়েকদিন আগেই প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসে। সেই কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে আজ বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতির প্রাথমিক পর্ষদকে বেশ কিছু প্রশ্ন করে।
আদালত জানতে চায়, টেট ২০১৪ সর্বসাধারণের জন্য ছিল। প্রশ্ন ভুল রয়েছে এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পর আপনারা নিজেরাই (পর্ষদ) স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তারা সিদ্ধান্ত নিলেন যে একটি প্রশ্নে ভুল ছিল। তার প্রেক্ষিতে কিছু প্রার্থীকে আপনারা বাড়তি ১ নম্বর করে দিলেন। আপনাদের কি উচিৎ ছিল না যে কৃতকার্য এবং অকৃতকার্য নির্বিশেষে সবাইকে বাড়তি ১ নম্বর দেওয়া? কিন্তু কেন তা দেওয়া হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতিও।
এমনকি এক্ষেত্রে বৈষম্য হয়েছে বলেও মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে এই বৈষম্য পর্ষদ করতে পারেন না বলেও এদিন মন্তব্য ডিভিশন বেঞ্চের। সব প্রার্থীর ১ নম্বর প্রাপ্য বলে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ আদালতের। ২৩ লাখ প্রার্থীর প্রেক্ষিতে ২৭৩ খুবই নগণ্য একটা সংখ্যা বলেও এদিন মন্তব্য করে কলকাতা হাইকোর্ট।
শুধু তাই নয়, এই বাড়তি নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া প্রয়োজন ছিল বলে সিঙ্গেল বেঞ্চ যে পর্যবেক্ষন ছিল তা কি খুব ভুল ছিল? শুনানিতে এমনটাও প্রশ্ন তোলে কলকাতা হাইকোর্ট। কার্যত এদিন একের পর এক প্রশ্ন তোলে ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্ট বলে, যদি আপনাদের যুক্তি সত্য বলে ধরে নেওয়া হয় তাহলে যখনই আপনারা দেখলেন যে প্রশ্ন ভুল রয়েছে, সেই মুহূর্তেই আপনারা বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাড়তি ১ নম্বর সবাইকে দিতে পারতেন। যারা ওই ভুল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন শুধুমাত্র তাদেরই বাড়তি ১ নম্বর দেওয়া হবে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল?
তবে একের পর এক ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্নের উত্তরে পর্ষদের উত্তর, সবাইকে ১ নম্বর বাড়তি দিলে লাভ হত না। যাদের ১ নম্বর কম ছিল তাদের দেওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত। শুধুমাত্র প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের বাড়তি ১ নম্বর দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোন অপরাধমূলক পদক্ষেপ করেনি পর্ষদ।
মামলাকারীদের বক্তব্য, ২০১৮ সালেও যখন ছটি ভুল প্রশ্নের অভিযোগে মামলা হয়, তখনো পর্যন্ত পর্ষদ এই যুক্তিতে অনড় ছিল যে কোন প্রশ্নে ভুল নেই। তাহলে ২০১৭ সালে একটি প্রশ্নের ভুল রয়েছে এই যুক্তিতে ২৭৩ জনকে কেন বাড়তি এক নম্বর দেওয়া হল? এদিন প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীরা। দীর্ঘ সওয়াল-জবাব শেষে সিবিআই তদন্তের ওপর কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল না ডিভিশন বেঞ্চ।