সর্বজনীন দুর্গোৎসব অনন্য ভাবনায় বিশ্বজনীন হয়ে উঠল গ্র্যান্ড-কার্নিভালে, শোভাযাত্রা শেষ নিরঞ্জনে
কলকাতা, ১৪ অক্টোবর : বাংলার সেরা উৎসবকে বিশ্ব আঙিনায় তুলে ধরার এ এক অনন্য প্রয়াস। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে দুর্গা-কার্নিভালের সূচনা হল কলকাতার রেড রোডে। 'পুজো শেষে ঠাকুর দেখা'র এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক তথা সিআইবি-র সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। উপস্থিত মমতা মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য থেকে শুরু করে প্রশাসনিক মহলের কর্তাব্যক্তিরা।
শিল্প-সংস্কৃতি জগতের কলাকুশলীরাও মঞ্চ আলো করেছিলেন। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বিদেশি অভ্যাগতরাও। বাংলা সংস্কৃতির আঙ্গিক আর সুশৃঙ্খল গ্র্যান্ড-শো সত্যিই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল রিও কার্নিভালকেও।বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় বিশ্বমাঝে সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান ছিল প্রায় প্রতিটি পুজো কমিটির কণ্ঠে।
ভবানীপুর ৭৫ পল্লি যেমন তাদের আরশিনগর থিমে বিশ্ববাংলাকে তুলে ধরেছিলেন, তেমনি পুজো শুরুর নতুন ভোরে সোনার বাংলা গড়ার বাণীও ছিল ভবানীপুর স্বাধীন সঙ্ঘের থিম সং-এ। মুখ্যমন্ত্রীর রচনা এই থিম সং।
বাবুবাগানের ভাবনাতেও বাংলা গড়ার ডাক। শুধু কলকাতাই নয় হাওড়ার শিবপুর মন্দিরতলা সাধারণ দুর্গোৎসব কমিটির দুর্গাপ্রতিমাও এই শোভাযাত্রায় জায়গা করে নিয়েছে। এই পুজোতেও বাংলার জয়ধ্বনিতে প্রতিভাত হয়েছে 'বাংলা মোদের বাড়ি'।
দমদম তরুণ দলের থিম 'মা'। বেহালা নতুন দলের থিম 'ধরিত্রী'তে কমিটির সদস্যরা ফুটিয়ে তুলেছেন মহিষাসুরমর্দিনী রূপ। একে একে শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে এগিয়ে চলল কলকাতার সেরার সেরা সমস্ত পুজো মণ্ডপগুলি। একডালিয়া, কলেজ স্কোয়ার, সল্টলেক একে ব্লক, কুমোরটুলি সর্বজনীন, ত্রিধারা, চেতলা অগ্রণী, শ্রীভূমি, হিন্দুস্থান পার্ক, শিবমন্দির, বাবুবাগান ও সুরুচি সঙ্ঘের মতো বড় পুজোর প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা সম্পন্ন হল।বাংলার সংস্কৃতি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যে পৌঁছে গেল বিশ্বের দরবারে।
প্রতিটি পুজো কমিটিই রেড রোডের এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় দু'মিনিট করে পারফর্ম করার সুযোগ পায়। তাঁদের থিম সং, বিষয়ভাবনাকে সুচারুভাবে তুলে ধরে। সঙ্ঘবদ্ধতার প্রতীক হিসেবে বিশ্বের দরবারে এই ব্র্যান্ডিং তুলে ধরতে একশো শতাংশ সফল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই গ্র্যান্ড-শো এক অনন্য ভাবনার পরিচায়ক হয়ে রইল।
বারোয়ারি মণ্ডপ ফাঁকা করে গ্র্যান্ড-কার্নিভালে শোভাযাত্রা করে বাবুঘাটের দিকে এগিয়ে গেল এক এক করে সমস্ত প্রতিমা। গঙ্গার জলে ভাসানের মাধ্যমেই বিদায় নিলেন উমা। ঢাকের কাঠির বোল 'ঠাকুর থাকবি কতক্ষণ, ঠাকুর যাবি বিসর্জন'ও ক্রমেই মৃদু হয়ে এল। আবার আসছে বছরের প্রতীক্ষা। এবারের মতো শেষ দুর্গোৎসব। আগামীকাল ওই সেরা মণ্ডপেই আরাধনা দেবী লক্ষ্মীর। উৎসব কিন্তু চলতেই থাকবে।