রোজভ্যালি কাণ্ডে প্রথম সাজা ঘোষণা কলকাতা নগর দায়রা আদালতের
রোজভ্যালি কাণ্ডে প্রথম সাজা ঘোষণা কলকাতা নগর দায়রা আদালতের
এই প্রথম রোজভ্যালি কাণ্ডে সাজা ঘোষণা করল কলকাতা নগর দায়রা আদালত। বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির আমানতকারীদের কাছ থেকে ১২ কোটি পঁচাশি লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগের মামলায় দোষী সাব্যস্ত রোজভ্যালির অন্যতম ডিরেক্টর অরুণ মুখোপাধ্যায়কে ৭ বছরের জেল ও আড়াই লক্ষ টাকার আর্থিক জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি ইতিমধ্যেই ৩ বছর জেলে কাটিয়ে দিয়েছেন। তাই আর ৪ বছর তাঁকে জেলের অন্দরে কাটাতে হবে। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে এই মামলাতে অরুণবাবু তাঁর দোষ স্বীকার করে নেওয়ার পরই বিচারপতি এই রায় দিয়েছেন। উল্লেখ্য রোজভ্যালি কাণ্ডে আদালতে সিবিআই যে চার্জশিট পেশ করেছিল তাতে গৌতম কুণ্ডু সহ ৯ জনের নাম ছিল। সেই তালিকায় ছিল অরুণবাবুর নামও।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিপুল এই আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে গতি বাড়িয়েছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই গত জানুয়ারি মাসে গ্রেফতার করা হয়েছে সংস্থার কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুকে। ১২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগের এই মামলায় এবার জাল গোটাতে জোরদার তৎপরতা নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি। কেলেঙ্কারির শিকড় আরও গভীরে বলেই মনে করছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই রোজভ্যালি কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে বেশ কিছুটা সাফল্য হাতে এসেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার।
কেলেঙ্কারিতে প্রধান অভিযুক্ত গৌতম কণ্ডু আপাতত জেলে। গৌতমের স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুকেও তাঁর বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ইডি-র অফিসাররা। রোজভ্যালির টাকাও বিদেশে পাচার হয়েছে বলে অনুমান করেছিলেন ইডি-র আধিকারিকরা। রোজভ্যালি কাণ্ডে পুলিশ মূল অভিযুক্তদের মধ্যে ইতিমধ্যেই জেল হেফাজতে রয়েছে গৌতম কুন্ডু, শুভ্রা কুন্ডুর নাম তেমনি তাতে রয়েছে শ্রীকান্ত মোহতা ও অরুন মুখোপাধ্যায়ের নামও।
এছাড়াও আদালতে সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছে সেখানে নাম রয়েছে রোজভ্যালির ৫জন ডিরেক্টরের নাম। এদের কেউই নিজেদের দোষ স্বীকার করেননি। কেবলমাত্র অরুনবাবুই তাঁর দোষ স্বীকার করে নেন। সেই দোষ স্বীকারের জেরেই এদিন আদালত তাঁকে সাজা শুনিয়েছে।
উল্লেখ্য রোজভ্যালি কাণ্ডে শ্রীকান্ত মোহতা জামিন পেলেও বাকিরা এখন কেউ জেলে কেউবা জামিনে মুক্ত রয়েছেন। ৩ বছর জেল খেটে অরুনবাবুও জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। কিন্তু এদিন তাঁকে আদালত শাস্তি দেওয়ায় এবার তাঁকে আরও ৪ বছর জেলে কাটাতে হবে। যদিও কিছু আইনজীবি মনে করছেন বয়সজনিত কারনে ও সংশোধনাগারে ভালো ব্যবহার করলে আদালত তাঁর সাজার মেয়াদ কমিয়ে দিতেও পারে।