
মেয়র পদে এগিয়ে ফিরহাদই! কিন্তু মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হবে না তো! সংশয়ের অবসান বৃহস্পতিবার
কলকাতার পরবর্তী মেয়র কে? সেই প্রশ্নটা উঠে পড়ছে কলকাতা পুরভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পরই। এই লড়াইয়ে ফিরহাদ হাকিম যে এগিয়ে রয়েছেন, তা নিয়ে সংশয় নেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু তার মধ্যেই একটা প্রশ্ন বারবার ফিরে আসছে ফিরহাদ হাকিম যদি মেয়র হন, তবে কি তিনি শুধু মেয়র নাকি মন্ত্রী-মেয়র দুইই থাকবেন!

নীতি ভেঙে মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের টিকিট
তৃণমূল 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতি চালু করে দলের মধ্যে পদ সমবণ্টনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। কিন্তু পুরভোটের প্রাক্কালে সেই নীতি ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই নীতি ভেঙে মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদেরও পুরভোটে টিকিট দেন। তারই জেরে ফিরহাদ হাকিম, মালা রায়-রা ফের কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী হন।

মন্ত্রী-মেয়র দুই পদেই অভিষিক্ত হবেন ফিরহাদ!
এবার মেয়র নির্বাচনের পালা। এখন কি পুরনো নীতি প্রয়োগ করা হবে, নাকি সেই নীতির জলাঞ্জলি দেওয়া অব্যাহত রেখে মন্ত্রী-মেয়র দুই পদেই অভিষিক্ত হবেন ফিরহাদ বা অন্য কেউ। শুধু মেয়র পদই নয়, ডেপুটি মেয়র, চেয়ারম্যান বা চেয়ারপার্সন এবং মেয়র পারিষদ সদস্যের পদ নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাস্তবতাকেই গুরুত্ব দেবেন
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরহাদদের প্রার্থী করার সময় বলেছিলেন, সব ক্ষেত্রে শুধু নীতি ধরে থাকলে চলে না। কিছু সময় বাস্তবতা বুঝতে হয়। সেই বাস্তবতা বুঝেই প্রার্থী করা হয়েছে ফিরহাদদের। এবার বাস্তবতা বুঝেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন, তা স্পষ্ট। মেয়র বেছে নেওয়ার প্রাক্কালেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাস্তবতাকেই গুরুত্ব দেবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

মেয়র পদে ফিরহাদ হাকিমই এগিয়ে রয়েছেন
বৃহস্পতিবার দুপুরে মহারাষ্ট্র নিবাস হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা কলকাতার বিধায়ক ও সাংসদদেরও। এই বৈঠকেই চূড়ান্ত হবে মেয়র ও চেয়ারপার্সনদের নাম। মেয়র পদে ফিরহাদ হাকিমই এগিয়ে রয়েছেন। তবে মেয়র পদে তাঁকে বেছে নিলে মন্ত্রিত্বে তিনি থাকবেন কি না, তা নিয়েও আলোচনা জোরদার।

মেয়র পদেও নতুন মুখ আনার পরামর্শ রয়েছে
তবে মেয়র বা চেয়ারপার্সন পদে পুরনো মুখ গুরুত্ব পেলেও, মেয়র পরিষদ পদে নতুনদের আনার ভাবনা রয়েছে তৃণমূলের। আবার মেয়র পদেও নতুন মুখ আনার পরামর্শ রয়েছে। এখন দেখার সেই পরামর্শ কেমনভাবে গ্রহণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক ব্যক্তি এক পদ নীতির পাশাপাশি নতুন মেয়র বেছে নেওয়ার ব্যাপারেও যে আলোচনা চলবে, তা বলাই যায়।

এবার ফিরহাদকে মেয়র পদপ্রার্থী করেনি তৃণমূল
এর আগে সুব্রত মুখোপাধ্যায় বা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আমলে তাঁদেরই মেয়র প্রজেক্ট করা হয়েছিল। তৃণমূল জিতলে তাঁরাই মেয়র হবেন সে ঘোষণা করেই ভোট ময়দানে নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল হারায় সুব্রত মেয়র হতে পারেননি দ্বিতীয়বার, আর শোভন দ্বিতীয়বার মেয়র হয়েছিলেন। তবে মেয়াদ শেষ করার আগেই তাঁকে সরে যেতে হয়েছিল। এবার ফিরহাদকে মেয়র পদপ্রার্থী করে ভোটযুদ্ধে নামেনি তৃণমূল। এমনকী তাঁর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল না। শেষে মমতার হস্তক্ষেপে তিনি প্রার্থী হন। এখন দেখার মেয়র পদে লড়াই কোনদিকে যায়!