দিল্লিতে স্মরণীয় মহান বিপ্লবী, বাংলায় উপেক্ষিত, লড়ছে পরিবার
দিল্লিতে স্মরণীয় মহান বিপ্লবী, বাংলায় উপেক্ষিত, লড়ছে পরিবার
দিল্লিতে স্মরণ করা হচ্ছে বিপ্লবী বসন্ত বিশ্বাসকে, অথচ বাংলায় সেভাবে সম্মানিত নন বিখ্যাত এই বিপ্লবী। সেই নিয়েই লড়ছেন শহীদ বসন্ত বিশ্বাস স্মারক সমিতি।
শহীদ বসন্ত বিশ্বাস স্মারক সমিতির সম্পাদক তরুন বিশ্বাস বলেন যে ,দিল্লি সরকার দিল্লি শহরে ১৬ খানা পার্ক ১৬জন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবীদের নামে নামাঙ্কিত করছেন। এই ১৬ জনের মধ্যে বসন্ত কুমার বিশ্বাসই একমাত্র বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী যার নামে এক পার্কের নামকরণ হবে ঠিক হয়েছে৷ ১৯১২সালে ২৩শে ডিসেম্বর এই বসন্ত কুমার বিশ্বাসই মহাবিপ্লবী রাসবিহারী বসুর নেতৃত্বে দিল্লির রাজপথে এক শোভাযাত্রায় ভারতের বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জকে বোমা ছুঁড়ে গুরুতর ভাবে আহত করেন।
তরুন বিশ্বাস বলেন, এক জাতীয় স্তরের পত্রিকায় উল্ল্যেখ করেছে ভাই বালমুকুন্দ বড়লাটকে বোমা ছুঁড়েছিলেন যা একেবারেই সঠিক তথ্য নয়। তিনি ঐ সময় সেখানে ছিলেন না। দলের এক বিপ্লবীর বিশ্বাসঘাতকতায় রাসবিহারী বসু ছাড়া দলের প্রায় সকলে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। দিল্লি সেন্ট্রাল জেলে ৮ই মে, ১৯১৫ মাস্টার আমীরচাঁদ ,ভাই বালমুকুন্দ ও অবোধবিহারীর ফাঁসী হয় এবং বসন্ত বিশ্বাসের ফাঁসী হয় পাঞ্জাবের আম্বালা জেলে ১১ই মে,১৯১৫ সালে। এই চার শহীদকে নিয়ে দিল্লি সরকার প্রতি বছর ৮ই মে শহীদ দিবস পালন করে। এই চার শহীদের নামে চারটি পার্কের নামকরণ হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দিল্লি সরকার এই চার শহীদের নামে চারটি সরকারি স্কুলের নামকরণ করেছে।
তিনি এও বলেন, দিল্লির লোকসভা পার্লামেন্ট হাউজে শহীদ বসন্ত কুমার বিশ্বাসের ছবি স্থান পেয়েছে। দুঃখজনক বিষয় বসন্ত বিশ্বাসের মৃত্যুর ১০৭ বছর পরও তাঁর নামে বাংলায় কোন পার্ক,রাস্তা বা কোন প্রতিষ্ঠানের নাম আজও পর্যন্ত হয়নি৷ কেবলমাত্র নদিয়াতে তাঁর কয়েকটা মূর্তি বসানো হয়েছে। যদিও কলকাতা পুলিশ মিউজিয়ামে রাসবিহারী বসুর পাশে বসন্ত বিশ্বাসের ছবি আছে। কলকাতায় মহাজাতি সদনে ১৯৮৫ সালে আমরা বাক্তিগত উদ্যোগে বসন্ত কুমার বিশ্বাসের তৈলচিত্র দিয়েছিলাম। শহীদ বসন্ত বিশ্বাস স্মারক সমিতি বলছে যে এই উপেক্ষিত বিপ্লবীর স্মৃতিরক্ষার্থে সকলে এগিয়ে আসুন।
নদিয়ার অগ্নিযুগের বিপ্লবী শহীদ বসন্ত বিশ্বাসের জন্মভিটে নদিয়ার পোড়াগাছা গ্রাম। বর্তমানে বসন্ত বিশ্বাসের মেজদাদু নীল বিদ্রোহীর নায়ক দিগম্বর বিশ্বাসের বাড়ীর অবস্থা খুবই খারাপ। পোড়াগাছার বাস স্টপেজে(ঝাউতলা) এবং কৃষ্ণনগর বাস স্টান্ডের কাছে বসন্ত বিশ্বাসের দুইটি মূর্তি বসানো হয়েছে। এই বসন্ত বিশ্বাস ১৯১৫ সালে ২৩শে ডিসেম্বর মহাবিপ্লবী রাসবিহারী বসুর নেতৃত্বে বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জকে বোমা মেরে গুরুতর আহত করে। ১৯২৪সালে পিতার শ্রাদ্ধ উপলক্ষ্যে কৃষ্ণনগর আসলে জনৈক আত্মীয়ের বিশ্বাসঘাতকতায় পুলিশের হাতে ধরা পরে মাত্র ২০ বছর বয়সে বসন্ত বিশ্বাসের পাঞ্জাবের আম্বালা জেলে ফাঁসী হয়।