রায়গঞ্জ থেকে কলকাতা ধাওয়া করে প্রেমিকাকে গুলি, ধরা পড়ে গণপিটুনি খেল প্রাক্তন সেনাকর্মী
প্রেমে প্রত্যাখানের ‘বদলা' নিতে ফিল্মি কায়দায় বাড়িতে চড়াও হয়ে প্রেমিকাকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল প্রাক্তন সেনাকর্মী। গুলিবিদ্ধ তরুণীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কলকাতা, ২৬ অক্টোবর : প্রেমে প্রত্যাখানের 'বদলা' নিতে ফিল্মি কায়দায় বাড়িতে চড়াও হয়ে প্রেমিকাকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল প্রাক্তন সেনাকর্মী। মঙ্গলবার রাতে বেলেঘাটার কালীতলা বোস লেনে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ তরুণীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। 'প্রেমিকে'র অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রায়গঞ্জ থেকে পালিয়ে এসেছিলেন কলকাতায়। সেখানেও এসে রক্ষা নেই।
প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে রায়গঞ্জ থেকে ধাওয়া করে এসে প্রেমিকাকে টার্গেট করল দিবাকর দে নামে ওই প্রাক্তন সেনাকর্মী। বাড়িতে ঢুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে একেবারে কপালে তাক করে গুলি। খাস কলকাতার বুকে এ ধরনের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটের সূত্রে ওই তরুণীর সঙ্গে পরিচয় দিবাকর দে-র। সাইটে যুবকের দেওয়া পরিচয় ছিল ডক্টর দিবাকর দে। তারপর ফেসবুক মারফত বাড়ে দু'জনের ঘনিষ্ঠতা।
সেই ঘনিষ্ঠতা সূত্রেই রায়গঞ্জে দিবাকরের বাড়িতে যান ওই তরুণী। অভিযোগ, প্রেমিকাকে রায়গঞ্জের বাড়িতে জোর করে আটকে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হয় তাঁকে। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে চলে শারীরিক নির্যাতন। দু'মাসভর এই অত্যাচার সহ্য করে কোনওমতে তিনি পালিয়ে আসেন কলকাতায়। সেখানেও তাড়া করে ওই যুবক। বেলেঘাটা থানায় অভিযোগও করেন। তা সত্ত্বেও তাঁকে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণসংশেয়র মুখে পড়তে হল।
মঙ্গলবার রাতে তরুণীর বাড়িতে পৌঁছে দরজা ধাক্কা দিতে থাকে দিবাকর। ওই তরুণী বুঝতেও পারেননি, তাঁর জন্য কী অপেক্ষা করে আছে। দরজা খোলা মাত্রই তরুণীকে লক্ষ্য করে রিভলভার তাক করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তরুণী। গুলির শব্দ শুনেই ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। ধরা পড়ে যায় হামলাবাজ যুবক।
গণপিটুনির পর তাকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেন সেপ্টেম্বরে অভিযোগ জানানোর পরও অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ? সেই যুবকই ঘর বয়ে এসে তাণ্ডব চালিয়ে গেল কলকাতায় তরুণীর উপর।পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত নেমে দিবাকরের অনেক অপকীর্তির কাহিনি জানতে পেরেছে।
প্রাক্তন সেনাকর্মী দিবাকর বর্তমানে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভের কাজ করত। সে ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিলেও, তা ভুয়ো। কেন সেনার চাকরি ছাড়ল সে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ জানতে পেরেছে মালদহে ধৃত দিবাকর দে-র স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। তার বাবার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। একাধিক মহিলার সঙ্গে তার পরিচয় ছিল। আগেও এক মহিলার উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়েছিল দিবাকর।