শহরে বাড়ছে ই–ওয়ালেট প্রতারণা, উদ্বেগে কলকাতা পুলিশ
সাইবার প্রতারণার তালিকায় আরও এক অপরাধ যুক্ত হয়েছে, যা হল ই–ওয়ালেট প্রতারণা। পেটিএম সহ অন্যান্য ই–ওয়ালেট প্রতারণা শহরে বেড়ে যাওয়ার ফলে রাতের ঘুম উড়েছে কলকাতা পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, শেষ কিছু মাসে ই–ওয়ালেট প্রতারণা সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যাটা অনেকটাই। ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা, রাজস্থান সহ অন্য রাজ্য থেকে বেশ কিছু অপরাধীকে পুলিশ এই অপরাধে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করেছে।
তদন্তকারীরা লক্ষ্য করেছেন যে বর্তমানে মানুষ ই–ওয়ালেটের মতো ডিজিটাল মোড বা অনলাইনে টাকা লেন–দেন করতে পছন্দ করেন। আর এই বিষয়কেই মাথায় রেখে প্রতারকরা এই ই–ওয়ালেটগুলিকে নিশানা বানাচ্ছে।

ই–ওয়ালেটের নাম করে ব্যবহারকারীদের ফোন
কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইমের ডিসি অপরাজিতা রাই জানিয়েছেন, তিনটি পদ্ধতিতে ই-ওয়ালেট প্রতারণা হয়ে থাকে। মানুষকে প্রতারণা করার এখন ট্রেন্ডি উপায় হল ব্যবহারকারীকে এমন একটি অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য রাজি করানো, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ফোনের যাবতীয় খুঁটিনাটি হাতে আসে। সূত্রের খবর, প্রতারকরা পেটিএম বা অন্য ই-ওয়ালেটের কর্মী পরিচয় দিয়ে ব্যবহারকারীদের ফোন করে এবং ব্যবহারকারীদের জানায় যে তারা যদি প্রতারকদের নির্দেশ অনুসরণ না করে তবে তাদের ওয়ালেট বন্ধ হয়ে যাবে। এরপরই ওই প্রতারকরা ব্যবহারকারীদের বেনামী এক অ্যাপ ডাউনলোডের জন্য বলে এবং ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে। প্রতারকরা লেন-দেনের জন্য ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ওটিপি ব্যবহার করে, যা ব্যবহারকারীর ফোনে আসে।

পুরস্কার জেতার নাম করে প্রতারণা
আর একটি উপায় হল, প্রতারকরা ই-ওয়ালেটের নাম করে বহু মানুষকে লাকি ড্রয়ের মাধ্যমে পুরস্কার জেতার মেসেজ পাঠায়। অ্যাকাউন্টে পুরস্কারের টাকা পাঠানোর নাম করে এরপর তারা ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ব্যাঙ্কের তথ্য জানতে চায়। এই তথ্য পাওয়ার পরই দুষ্কৃতীরা ব্যবহারকারীকে জানায় যে টাকা অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। যদিও মেসেজে যে অংঙ্কের টাকার কথা উল্লেখ থাকে তা জেতা পুরস্কারের চেয়ে অনেক বেশি হয়। এরপরই শুরু হয় আসল খেলা। প্রতারকরা ফোন করে জানায় যে প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য বেশি টাকা ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে যা ফেরত দিতে হবে। প্রতারকদের কথায় বিশ্বাস করে ব্যবহারকারী ই-ওয়ালেট বা অনলাইনে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অতিরিক্তি টাকা পাঠিয়ে দেয় তাদের।

ওয়ালেটের পিন নম্বর দিয়ে প্রতারণা
শেষ উপায় হল লেনদেনের সময় ওয়ালেটের জরুরি পিন নম্বর হাতিয়ে প্রতারণা। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রত্যেক মাসে কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক প্রতারণা বিভাগ ৫৫০টি অভিযোগ পায়, শুধু এই ই-ওয়ালেট সংক্রান্ত। অপরাজিতা রাই জানান, কম জ্ঞান নিয়ে এই ই-ওয়ালেট ব্যবহার করা খুবই বিপদজ্জনক। তিনি স্বীকার করেছেন যে বর্তমানে ডিজিটাল অর্থ প্রদানের পদ্ধতির দিকে সমাজ সক্রিয় হওয়ায় সাইবার অপরাধীরা মানুষকে প্রতারণা করার পদ্ধতিতেও বদল এনেছে।

কেন গীতা গোপীনাথকে সাবধান করলেন চিদাম্বরম?