সেজে উঠেছে রেড রোড, কার্নিভালের প্রস্ততি খতিয়ে দেখলেন পুলিশ কমিশনার
রাত পেরোলেই রেড রোডে মেগা কার্নিভালের দামামা বাজবে। গত তিন দিন ধরে তাই সেজেছে রেড রোড। হরেক রকমের আলোয় রাতের রেড রোড যেন মায়াবী হয়ে উঠেছে। কিন্তু সোমবার রাতে কাজ চলাকালীন মুহর্তের জন্য ছন্দপতন ঘটে। সি ব্লকে প্যান্ডেলের কাপড়ে আগুন লেগে যায়। অবশ্য দ্রুত তা নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হয়।

তবে এই নিয়ে কিছুটা আতঙ্ক ছড়ায়। তাই তড়িঘড়ি সবকিছু খতিয়ে দেখতে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার, রাজ্যের ডিজি সহ পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। এই ঘটনা ছাড়াও মঙ্গলবার কার্নিভালের আগে অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার বিষয়ে খতিয়ে দেখলেন তাঁরা।
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২০১৬ থেকে রেড রোডের কার্নিভালে দেখা মেলে শহরের সেরা পুজোগুলোর। এবছর ২০১৮-র পুজোয় সেরা প্যান্ডেল, নজরকাড়া প্রতিমা, কার ভাবনা চমকে দিল সবাইকে, কে হল সেরা, কেই বা সেরার সেরা! তা দেখানোর জন্য চলছে জোরকদমে প্রস্তুতি।
পুজো মণ্ডপগুলোতে অভিনবত্বের সঙ্গে সঙ্গে এবছর কার্নিভালের মন্ডপ সজ্জায় অভিনবত্ব আনা হয়েছে। যে মূল মঞ্চ তৈরি হয়েছে তা কোনও এক প্রাচীন রাজবাড়ির অলিন্দের আদলে তৈরি। সেই সঙ্গে রেড রোডের দুধারে লম্বা প্যান্ডেল।
মূল মঞ্চে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে থাকবেন অন্যান্য অতিথিরা। বিদেশি অতিথিরাও আমন্ত্রিত হয়েছেন।
এবছর কার্নিভালে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন ২ হাজার জন পুলিশ কর্মী।
মঙ্গলবার সকাল থেকে রেড রোডে যান চলাচল ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কার্নিভালের দিন হসপিটাল রোড, ক্যাসুরিনা এভিনিউ, মেয়ো রোড আংশিক বন্ধ করা হতে পারে। যান চলাচলের জন্য খোলা থাকবে জওহরলাল নেহেরু রোড।
মূল মঞ্চে থাকবেন মোট ৯০ জন। মঞ্চের চারিদিকে থাকবে সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মী, থাকবে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের পুলিশ কর্মীরা। সকাল থেকেই গোটা রেড রোডে কলকাতা পুলিশের পুলিশ কুকুর দিয়ে তল্লাশি করা হবে। থাকবে বম্ব স্কোয়াডের পুলিশ কর্মীরা।
পাশাপাশি অনুষ্ঠান চলাকালীন থাকবে পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা। বিদেশি পর্যটকদের জন্য ১৫০০টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে। মোট আসন থাকবে ২০ হাজার। পুজো চলাকালীন ষষ্ঠীর দিন এবছরের বিশ্ববাংলা শারদ সম্মানের প্রাপকদের নাম ঘোষণা করেন তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর।
তথ্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন জানান, এবার কলকাতা সংলগ্ন পুরসভাগুলো অর্থাৎ দমদম, বিধান নগর, বরানগর, ও হাওড়া পুরনিগম মিলিয়ে সেরার সেরা মোট ১৭টি পুজো কমিটিকে পুরস্কার দেওয়া হবে। এবং সেরা প্রতিমা, সেরা মন্ডপ, সেরা আলোকসজ্জা, সেরা ভাবনা, সেরা আবিষ্কার, সেরা থিম সঙ্গীত বা আবহ ও সেরা পরিবেশ বান্ধব, সেরা ব্যান্ডিং, সেরা ঢাকেশ্বরী ও বিশ্ববাংলা সাবেকি পুজোর বিচারের নিরিখে ৭৫টি পুজো কমিটিকে পুরস্কৃত করা হবে।
এছাড়াও কলকাতা ছাড়া ২২টি জেলার পুজো কমিটিকে সেরা পুজো, সেরা প্রতিমা, সেরা মন্ডপ বিভাগে বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান দেওয়া হবে। কলকাতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুরুচি সংঘ, চেতলা অগ্রণী, বড়িশা ক্লাব, থেকে শুরু করে বেহালা নতুন দল, কালীঘাট মিলন সংঘ, শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব, নাকতলা উদয়ন সংঘ, ত্রিধারা, হিন্দুস্থান পার্ক সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি।
এছাড়াও টালা পার্ক বারোয়ারী, আহিরীটোলা সর্বজনীন, কাশীবোস লেন সর্বজনীন দুর্গোৎসব, সল্টলেক একে ব্লক, শিবপুর মন্দিরতলা সাধারণ দুর্গোৎসব, দমদম তরুণ সংঘ, ৯৫ পল্লি পার্ককে পুরস্কার দেওয়া হবে।