কাঁদছে ভারত মাতা, সেনাকে উৎসর্গ করে তৈরি মাতৃ প্রতিমা
কাঁদছে ভারত মাতা, সেনাকে উৎসর্গ করে তৈরি মাতৃ প্রতিমা
ওনাদের জন্ম মায়ের কোলেই। শেষ ঠিকানাও মায়ের কোলেই। হ্যাঁ, ওনারা ভারতীয় সেনা, ওনাদের অবদান ভোলা যাবে না। ভারতীয় সেনাবাহিনী পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী। সেনাদের ওপর রয়েছে যাবতীয় সামরিক কার্যাবলীর দায়িত্ব, বহি:শত্রুর হাত থেকে দেশ কে রক্ষা করা, সীমান্ত প্রহরা ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অপারেশন পরিচালনা করা। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অন্যান্য দূর্বিপাকের সময় উদ্ধার কাজ সহ বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক কাজেও আমরা সেনাবাহিনীকেই পাই। ওনাদের জন্য আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি নিশ্চিন্তে জীবন কাটাতে পারি। এই মুহূর্তে পুজোর আনন্দ উপভোগ করছিও শুধুমাত্র তাদের আত্মত্যাগের জন্যই।
যখন
তারা
পরিবার
ছেড়ে
যায়
দেশের
কাজে
তথা
যুদ্ধ
করতে,
তখন
হয়তো
তাদের
বাড়ির
লোকও
আশঙ্কা
করে,
"এটাই
তার
শেষ
যাওয়া
নয়
তো?
সে
ফিরে
আসবে
তো
অক্ষতভাবে?"
একজন
সেনারও
একটা
পরিবার
থাকে,
যে
পরিবারের
মানুষগুলোর
অনেক
স্বপ্ন
ঘিরে
থাকে
তাদের
সন্তানকে
নিয়ে।।
সেই
সেনা
হয়তো
কোন
বাবা-মায়ের
শেষ
সম্বল,
কোন
স্ত্রীর
স্বামী,
কোন
ছোট
ছেলে
বা
মেয়ের
বাবা।।
সর্বোপরি
এই
পিছুটান
গুলোর
চেয়েও
তাদের
লক্ষ্য
হয়
দেশকে
রক্ষা
করা
ভারত
মাতার
গায়ে
এতটুকু
আঘাত
লাগতে
না
দেওয়া
দেশের
শত্রু
বা
ভারত
মাতার
শত্রুকে
শেষ
করা,
এবং
তার
জন্য
যদি
নিজের
প্রাণ
যায়
তো
যাক।।
দেশের
জন্য
লড়া
এবং
দেশ
প্রেম--
সেনার
কাছে
তো
এটাই
জীবনের
মূল
মন্ত্র।।
তাদের
কাছে
তাদের
পোশাকটার
মান
সম্মান
সবথেকে
দামি।
আজ আপনি, আমি, আমরা সবাই যেখানে দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে উঠেছি ঠিক এই মুহূর্তেও সেনাবাহিনী কোনো বরফে ঘেরা এলাকায় বা কোন উত্তপ্ত মরুভূমির বুকে সীমান্ত রক্ষার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা যখন নতুন জামা কাপড় পড়ে পুজো প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখে বেড়াচ্ছি, হয়তো কোথাও পতাকা মুড়ে কোন বীর জওয়ানের মৃতদেহ পৌঁছাচ্ছে তাদের প্রিয়জনের কাছে।। হ্যাঁ, সবার পুজো আনন্দে কাটেনা।
তবে সেনার সাথে সাথে তাদের পরিবারের লোকেরও সম্মান ততটাই প্রাপ্য।। কারণ কোন নিষ্ঠুর পরিণতি মেনে নিতে হবে জেনেও দেশকে রক্ষা করতে তাদের প্রিয়জনের পাশে থাকে,, ভরসা ও বিশ্বাসের আশ্বাস দেয়।। এরকম উদাহরণও আমরা পায় যে বাবা শহীদ হয়েছেন জেনেও সন্তানকে বীর সেনা তৈরীর প্রচেষ্টায় লেগে থাকেন সন্তানের মা, অর্থাৎ সেই শহীদের স্ত্রী। ওনাদেরও ততটাই সম্মান আমাদের থেকে প্রাপ্য।
আমরা সাধারণ মানুষ তাদের শেষ পরিণতি গুলির কথা ভেবে শিওরে উঠি, কিন্তু তারা সব জেনেও দেশের কাজেই নিজেদের নিয়োগ করেন। কারণ তারা ভারত মাতার বীর সন্তান।। ভারতমাতাকে রক্ষা করা তাদের প্রধান কর্তব্য।
ভারত স্বাধীন হওয়ার প্রস্তুতিপর্ব চলাকালীন বীর নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর হাত ধরেই তৈরি হয় ভারতকে রক্ষা করার জন্য প্রথম ভারতীয় সেনা বাহিনী আজাদ হিন্দ ফৌজ।। ব্রিটিশদের সাথে যুদ্ধে ৬৫ হাজার সেনা অংশগ্রহণ করেন এবং ২৪ হাজার সেনা মারা যান। সমস্ত শহীদদের আত্মত্যাগ দ্বারাই আমরা পৌঁছেছিলাম ভারতের স্বাধীনতার কাছাকাছি।। নেতাজি খুলে দিয়েছিলেন আমাদের কাছে স্বাধীন ভারত এর দরজা।
এখানে একদিকে নেতাজিকে সম্মান জানাতে দেখানো হয়েছে দেবীর সন্তান কার্তিক ও গণেশ কে।। আর অন্যদিকে মৃত কোন এক বীরশহীদের স্ত্রীকে একজন বীরবধু রূপে সম্মান জানাচ্ছেন দেবীর দুই কন্যাসন্তান শ্রীলক্ষী ও সরস্বতী।। এবং দেবী রয়েছেন তার কোন এক বীর সন্তানকে বুকে জড়িয়ে হারানোর অবসাদে,- নিয়তির কাছে যে সন্তানদের হেরে যেতে হয়।
আবার সব পরিণতি মেনে নিয়েও নতুন কোন জওয়ান প্রিয়জন পরিবার ছেড়ে দেশের কাজে নিয়োজিত হতে যাচ্ছেন ভারত মাতাকেই রক্ষা করতে।স্বর্গধাম সেবক সংঘ এবং শিল্পশ্রীর সদস্যরা ২০২২ এ শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সমস্ত জানা-অজানা, চেনা অচেনা নাম না জানা, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে এবং তাদের পরিবারকে এই শারদীয়ার মাঝে। এ বছর আমাদের 'ঠাকুরঘর' হোকনা তাদের বীরত্বের আলোয় আলোকিত। হোকনা আমাদের প্রতিমা সমস্ত সাবেকি প্রতিমা থেকে আলাদা।। হোকনা শাস্ত্র না মানা।। "মা" তো "মা" ই হন.. যিনি অসুরদলনি দেবী দুর্গা.. তিনি ভারতবাসীর ভারত মাতা.. তিনিই সেই বীর সন্তানদের শোকে শোকাহত "মা"।
ক্লাব কর্তৃপক্ষ বলছে, "এই প্রতিমা উৎসর্গ শুধুমাত্র আমাদের ভারতীয় সেনাবাহিনীকে এবং তাদের পরিবারকে। তারা একটু খুশি হলেই আমরা অনেকটা পেয়েছি বলে ধন্য মনে করব। যদিও তাদের সম্মান জানানোর জন্য আমাদের কোন বিশেষ দিন লাগে না প্রত্যেকটা দিন তারা আমাদের কাছে সম্মানীয়,, তবুও আমরা পুজোর চারটে দিন বেছে নিলাম শুধু তাদের জন্য। তাদের সম্মান না হয় আমরা এভাবেই জানালাম। আমরা ভারতীয়। আমরা দেশকে ভালবাসি। আমরা ভারত মাতা কে ভালবাসি আমরা দেবী দুর্গাকেও ভালোবাসি। দেশীয় সেনারা আমাদের কাছে গর্ব, ঠিক তেমনি দূর্গা পুজোটাও বাঙালির গর্ব। সকল ভারতবাসীর কাছে এই রইল আমাদের ২০২২ এ স্বর্গধাম সেবক সংঘের পক্ষ থেকে উপস্থাপনা শিল্পী শ্রী অসীম পাল। বিশেষ ধন্যবাদ শিল্পশ্রীর সকল সদস্যবৃন্দ দের।"