করোনা আবহে কী এ বছর দুর্গাপুজো হবে? কী বলছে কলকাতা ও প্রবাসী পুজো কমিটিরা
করোনা আবহে কী এ বছর দুর্গাপুজো হবে? কী বলছে কলকাতা ও প্রবাসী পুজো কমিটিরা
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারির প্রভাব এসে পড়েছে খোদ কলকাতাতেও। তাই এ বছর বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপুজো হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। দুর্গাপুজো নিয়ে চিন্তায় শুধু কলকাতা বা এ রাজ্যই নয়, বিশ্বের অনেক দেশই এই বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত।
করোনাসুরমর্দিনী আলোচনা সভা
অন্যবার এই সময় গোটা শহর জুড়ে পুজোর হোর্ডিং, পুজোর থিম নিয়ে শহরের আনাচে-কানাচে আলোচনা, বিজ্ঞাপন বেশ একটা শোরগোল পড়ে যায়। রথের দিন অধিকাংশ বড় পুজোর খুঁটিপুজোও সারা হয়ে যায়। তবে এ বছর যেন সবকিছুই বড় ম্লান হয়ে রয়েছে। কারণ করোনা ঢুকে পড়েছে এই শহরে। শনিবার এই দুর্গাপুজোকে উপলক্ষ্য করে ওয়েবনারে একত্রিত হল কলকাতা, লন্ডন, ওয়ালেস ও নেদারল্যান্ডের পুজো কমিটির সদস্যরা। বিশ্বময় ছড়িয়ে থাকা বাঙালি জাতির এই একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেন তাঁরা। এই ওয়েবনারের ব্যবস্থা করেছিল লন্ডনের শারদ উৎসব ও বেঙ্গলি হেরিটেড ফাউন্ডেশন। শনিবারের ওই আলোচনাসভার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘করোনাসুরমর্দিনী'।
ওয়েবনারে অংশ নিয়েছিল বিভিন্ন পুজো কমিটি
ইংল্যান্ড ও আমেরিকার বিভিন্ন শহরের পুজো কমিটির পাশাপাশি, কলকাতার বালিগঞ্জ কালচারাল এবং ভবানীপুর ৭৫ পল্লির পুজো উদ্যোক্তারা সামিল হয়েছিলেন তাতে। অংশ নিয়েছিল 'ফোরাম ফর দুর্গোৎসব'। বেঙ্গল হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও লন্ডন শারদোৎসবের ট্রাস্টি সৌরভ নিয়োগী জানান যে কিভাবে এই দুই সংগঠন একসঙ্গে কাজ করে বাংলার ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত মানুষদের ২০,০৪৭ ডলার সহায়তা করেছিলেন। স্বাগতা ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পুজো ওয়েবনারের পরিকল্পনাটি সত্যিই অসাধারণ যেখানে বিশ্বের সব পুজো কমিটিরা একত্রিত হয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণ উৎসব দুর্গাপুজো এখন চ্যালেঞ্জের মুখে, এই অনিশ্চয়তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ অংশ হল কাছের বা দূরের পুজো, বড় বা ছোট পুজো, পুরনো বা নতুন পুজো এই প্রতিবন্ধকতাগুলিকে ভেঙে ফেলার সুযোগ।'
চ্যালেঞ্জের মুখে দুর্গাপুজো
২০২০ সালে সরকারের নির্দেশিকা অনুসরণ করে কীভাবে দুর্গাপুজো করা যায় এ নিয়ে নেদারল্যান্ডসের কল্লোল, আরবিবিও দুর্গা পুজোর সভাপতি অতনু দত্ত, লন্ডনের পঞ্চমুখী দুর্গোৎসব থেকে কবিতা বসু, কলকাতার বিবেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে কার্তিক ব্যানার্জি সহ অনেকেই এ বিষয়ে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ মত জানান। কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল অংশ নিয়েছিলেন ওই ভিডিও কনফারেন্সে। তাঁর কথায়, ‘কুমোরটুলির শিল্পীদের অবস্থা খুব খারাপ। তাঁদের গোটা বছরের আয় হয় এই সময়টায়। কিন্তু এ বার পুজোর একশো দিন আগেও শিল্পীদের হাতে কাজ নেই বললেই চলে। তবু আমি আশাবাদী। তাড়াতাড়ি সব ঠিক হয়ে যাবে।'
পুজো কমিটিগুলির মতামত
ভবানিপুর ৭৫ পল্লীরসুবীর দাস বলেন, ‘এই বছরের পুজো উৎসর্গ করা হোক সামনের সারির কর্মীদের, যাঁরা মহামারি থেকে আমাদের রক্ষা করছে নিজেরা আত্মত্যাগ করে।' অর্ণব বসু বলেন, ‘এ বছর আমাদের সংযত ও বাস্তববাদী হয়ে পুজো করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে পুজো মণ্ডপে সামাজিক দুরত্ব যেন বজায় থাকে এবং কম স্পনশরশিপের মধ্যে যেন পুজো অনুষ্ঠিত হয়।' বালিগঞ্জ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সপ্তর্ষি বসু বলেন, ‘আমরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে চলেছি। এ বছর দুর্গাপুজো আয়োজন করা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জের বিষয়। নতুন নিয়ম মেনে আমরা আমাদের সেরাটা দেব যাতে এটা সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।'
দক্ষিণ চিন সাগর থেকে লাদাখে বেজিংয়ের কর্মকাণ্ড 'উস্কানিমূলক'! মার্কিন কূটনীতির অন্দরমহল কী বলছে