ট্রাম্পকে বিশ্বাস করা যায়, তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পরে বললেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী
ট্রাম্প রাষ্ট্রপতি হলে হয়তো প্রথাগত কূটনীতির নিয়ম ভেঙে দেবেন, এমনটাই আশঙ্কা ছিল জাপানের। তবে আপাতত মার্কিন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট-এর উপর ভরসা রাখতে রাজি হল টোকিও
উদ্বিগ্ন মনেই তিনি গিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে। কে জানে, হয়তো এত বছর ধরে গড়ে তোলা বন্ধুত্বকে তিনি এক মুহূর্তে নস্যাৎ করে দেবেন।
কিনতু বৈঠক শেষ করে যখন তিনি বেরোলেন, জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে অনেকটাই আস্বস্ত দেখাল। বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে ট্রাম্পের বাসস্থান ট্রাম্প টাওয়ারে তাঁর সঙ্গে দেখা করে আবে বললেন তাঁর কাছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্টকে যথেষ্ট "বিশ্বাসযোগ্য নেতা" বলেই মনে হয়েছে।
এবারের মার্কিন নির্বাচনের প্রচারের সময়ে ট্রাম্প বারবার বলে এসেছেন যে তিনি প্রথাগতভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জোটধর্ম পালন করার পক্ষপাতী নন। নেটোর মতো পুরোনো মিত্র জোট বা পূর্ব এশিয়াতে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো মিত্রদেশগুলির সঙ্গে জোটের প্রকৃতি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্প।
স্বাভাবিকভাবেই, চিন এবং উত্তর কোরিয়ার কাছাকাছি অবস্থিত এই মিত্র দেশগুলির কাছে নিরাপত্তার কারণে যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্ব অনেক, তাই বারাক ওবামার উত্তরসূরির কথা শুনে তাদের নেতৃত্ব যথেষ্ট শঙ্কিত হয়ে পড়েন। আর তাই ব্যাপারটা নিজেই যাচাই করতে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন আবে।
আর আবে এখন বেশ নিশ্চিন্ত। ট্রাম্পের সঙ্গে ঘন্টা দেড়েক বৈঠক করার পরে আবে সাংবাদিকদের বলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক বিশ্বাস আগামী দিনে আরও বাড়বে বলেই তাঁর বিশ্বাস। অবশ্য এই আলোচনায় আর কী কী নিয়ে কথা হয়েছে তা আবে জানাতে চাননি।
কিনতু ঠিক কী বিষয়ে জাপান উদ্বিগ্ন ছিল? ট্রাম্প তাঁর প্রচারে বলেছিলেন যে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানে স্থিত আমেরিকান সেনাবাহিনীর খরচ পোষানোর দায়িত্ব ওই দেশগুলির উপরেই বর্তায়। পাশাপাশি, তিনি বলেন জাপান যদি পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হতে চায়, তা তারা নিজেদের দায়িত্বে হোক।
এছাড়াও, জাপান সহ ১২টি দেশের ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট-এরও বিরোধিতা করেন ট্রাম্প। চিনকে ঠেকাতেই এই চুক্তির উদ্যোগ নেন আবে এবং বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা।
আবে বলেন তিনি ভবিষ্যতে আবার ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে অন্যান্য নানা বিষয়ে গভীরে আলোচনা করতে আগ্রহী। অবশ্য আগামী জানুয়ারিতে ট্রাম্পের অভিষেকের আগে এই দুই নেতার ফের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা কতটা, তা নিশ্চিত বলতে পারেননি আধিকারিকরা।
ট্রাম্প শিবিরের এক উচ্চ আধিকারিকের কথায় মার্কিন-জাপান সম্পর্কের নীতিগত দিক নিয়ে আলোচনা সরকারিভাবে ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতিত্ব শুরু হওয়ার পরেই হবে।
সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাম্প এবং আবে একে অপরকে গল্ফ খেলার সরঞ্জাম উপহার দেন বৈঠকের সময়ে।